জলপাইগুড়ি :ঘরিতে দুপুর 12:30 বাজছে। গ্রামের মস্ত বড় মাঠে চড়ে আর অনেকটা দূরে মানুষের বাড়ি। হঠাৎ দেখতে পেলেন একটি বড় পুরুষ হরিণ আপনার সামনে দিয়ে দৌড়ে যাচ্ছে এবং তার পিছন পিছন 2/3 জন গ্রামবাসীকে ছুটেছেন সেটি ধরার জন্য। আর আপনি নিজে সব প্রত্যক্ষ করছেন। শুনে এই গল্পটি কাল্পনিক মনে হলেও বাস্তবে কিন্তু এমনই ঘটনা ঘটলো জলপাইগুড়ির পাহাড়পুর অঞ্চলের অন্তর্গত বাজিত পাড়ায়। শনিবার একটি পুরুষ হরিণ ধরা পড়ে গ্রামবাসিদের হাতে। ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে বাজিত পাড়ায়। ঘটনার বিবরণে প্রকাশ, শনিবার দুপুর সাড়ে বারোটা নাগাদ গ্রামের মাঠ দিয়ে একটি হরিণকে দৌড়াতে দেখতে পান স্থানীয় গ্রামবাসীরা। হঠাৎ করে গ্রামের মধ্যে হরিণ দেখে অবাক হন অনেকেই। হরিণটি গ্রামের মধ্যে জনৈক জফুর আলীর বাড়ির ঘরে ঢুকে পড়ে। অসুস্থ জফুর ঘরের মধ্যে একাই বসে ছিলেন। তিনি বলেন, প্রথমে তিনি ভয় পেয়ে যান হঠাৎ করে এরকম একটি হরিণ ঘরের মধ্যে চলে আসায়। চিৎকার করে তিনি সকলকে ডাকেন। হরিণটিকে তখন ধরে ফেলে গ্রামবাসীরা অন্য একটি বাড়িতে নিয়ে গিয়ে ফ্যান চালিয়ে বিশ্রামে রাখা হয়। এরপর পুলিশকে খবর দেওয়া হলে পুলিশ এসে মানুষ ভিড় সরানোর চেষ্টা করে। ভিড় এতটাই ছিল যে একটি মানুষের উপর আরেকটি মানুষ হুমড়ি খেয়ে পড়ছিলেন। লকডাউন ভাঙার চিত্র ছিল সর্বত্র। বাড়ির মেইন টিনের গেটটি বন্ধ করলেও তা ভেঙে পড়ার উপক্রম হচ্ছিল। পুলিশকে নাকাল হতে হয় ভিড় সরাতে। বন দপ্তরকে খবর দেওয়া হলে বনদপ্তর এসে হরিণটিকে উদ্ধার করে নিয়ে যায়। কিন্তু অনেকেই প্রশ্ন করেছেন, বনদপ্তর হরিণটিকে যেভাবে টেনে হিঁচড়ে নিয়ে গেল তার প্রতিবাদে বিক্ষোভও দেখান। বন দপ্তরের পক্ষ থেকে জানানো হয় হরিণটিকে তারা বেলাকোবা রেঞ্জে নিয়ে যাচ্ছেন প্রাথমিক চিকিৎসার জন্য। বাসিন্দাদের প্রশ্ন করা হয়, কিভাবে হরিণটিকে তারা ধরলেন, তাদের মধ্যে কয়েকজন জানান পাহারপুর এলাকায় জোড়া কালভার্টের জাতীয় সড়কে এদিন একটি লরি থেকে লাফিয়ে পড়তে দেখেন হরিণটিকে। পরে সেটি মাঠ বরাবর দৌড়ে গ্রামে প্রবেশ করে। তার পেছনে গ্রামবাসীরাও অনেকেই দৌড়াতে থাকেন। এদিকে অসুস্থ জফুর আলী জানান তিনি ভীষণ অসুস্থ। ভয় হচ্ছিল হরিণটি তাকে গুতো না দিয়ে বসে। তিনি সরকারের কাছে আবেদন করেছেন তাকে কিছু আর্থিক সহায়তা করা হোক।