শীতল চক্রবর্তী গঙ্গারামপুর ৮মে দক্ষিণ দিনাজপুর:- মুখ ও বধির এক যুবতীকে উদ্ধার করে প্রশাসনের মাধ্যমে একটি জায়গায় রেখে দেবার বেশ কয়েকদিন পরে তার পরিচয় পত্র জোগাড় করে পরিবারের লোকজনদের হাতে তাকে তুলে দিল পুলিশ প্রশাসনের আধিকারিকরা। বৃহস্পতিবার দুপুরে দক্ষিণ দিনাজপুরের গঙ্গারামপুর থানার মহকুমা প্রশাসনের উপস্থিতিতে থানার আইসির মাধ্যমিক যুবতীকে তার পরিবারের লোকজনদের হাতে তুলে দেওয়া হয়। মানবিক দিক থেকেই এমন কাজ করা হয়েছে বলে জানালেন প্রশাসনের আধিকারিকেরা। মেয়েকে ফিরে পেয়ে প্রশাসনের এমন কাজকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন মূক ও বধির যুবতীর মা থেকে শুরু করে সকলেই।
গঙ্গারামপুর থানা সূত্রে খবর, বেশ কয়েকদিন আগে গঙ্গারামপুর থানার নন্দনপুর পুলিশ ক্যাম্প এলাকায় এক মুখ ও বধিরকে ক্যাম্প ইনচার্জ এলাকায় ঘোরাঘুরি করছে বলে দেখতে পান। তিনি তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করলো সে মুখ ও বধির হয় কিছু বলতে পারেননি পুলিশ কর্মীরা। ক্যাম্প ইনচার্জ দেবমাল্য মিশ্র পুরো ঘটনা জানান গঙ্গারামপুর থানার আইসি পূর্ণেন্দু কুমার কুন্ডুকে। তিনি ওই মূখ ও বধির যুবতীকে গঙ্গারামপুর থানায় নিয়ে আসেন কম্পের পুলিশ দিয়ে। আইসি পূর্ণেন্দু বাবু গঙ্গারামপুর এর মহকুমা প্রশাসনের সঙ্গে যোগাযোগ করে মহাকুমা প্রশাসনের মাধ্যমে ওই যুবতীকে রেখে দেওয়া হয় সরকারি একটি জায়গায়। এর পরেই আইসি পূর্ণেন্দু কুমার কুন্ডু বিভিন্ন জায়গায় মূক ও বধির যুবতীর নাম পরিচয় জানার জন্য চেষ্টা চালিয়ে যান। সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে ও আইসি ও তার টিম সব ধরনের চেষ্টা চালাতে শুরু করে নাম ও পরিচয় জানতে। অবশেষে বৃহস্পতিবার সকালে গঙ্গারামপুর থানার আইসি পূর্ণেন্দু কুমার কুন্ডু কাছে খবর আসে যে, ওই মুখ ও বধির যুবতীর নাম পরিচয় তিনি জানেন। তিনি এসে তার নাম ও ঠিকানা জানিয়েদেন।
পুলিশ জানায়, মূখ ও বধির ওই যুবতীর নাম সর্বানু খাতুন(২৫) বাড়ি তপন থানার আখানগরের কয়াপাড়া এলাকায়। জন্ম থেকেই সে কথা যেমন বলতে পারেনা তেমনি কানেও শোনেনা বলে খবর। কয়েকদিন আগে পথ ভুলে সে বাড়ি থেকে বের হয়ে নিখোঁজ হয় বলে তার পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে।
বৃহস্পতিবার দুপুরে গঙ্গারামপুর থানার ওই যুবতীর পরিবারের লোকজনদের হাতে মহকুমার প্রশাসনের ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেট মনোতোষ মন্ডল উপস্থিতিতে আইসি পূর্নেন্দু কুমার কুন্ডু ওই যুবতীর মায়ের হাতে তাকে তুলে দেন।
মহকুমা প্রশাসনের ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেট মনোতোষ মন্ডল জানিয়েছেন, থানার কাছে বিষয়টি জানতে পেরে ওই মুখ ও বধিরকে প্রশাসনিকভাবে রেখে দেবার ব্যবস্থা করা হয়েছিল মহকুমা শাসকের নির্দেশে। মায়ের হাতে তাকে তুলে দেওয়া হয়েছে পুলিশ প্রশাসনের তরফে।
গঙ্গারামপুর থানার আইসি পূর্ণেন্দু কুমার কুন্ডু জানিয়েছেন, কয়েকদিন আগে পুলিশ ক্যাম্পের অফিসার উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসা হয়েছিল। মগ্ন প্রশাসনের মাধ্যমে রাখা হয়েছিল ওই মুখ ও বধির যুবতীকে। নাম পরিচয় জানতে পেরেই মহকুমা প্রশাসনের মাধ্যমে তার পরিবারের লোকজনের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে এদিন। মানবিকতার দিক থেকেই আমরা এমন কাজ সবসময় করে যাব।
গঙ্গারামপুর থানা পুলিশ ও প্রশাসনের মাধ্যমে মেয়েকে ফিরে পেয়ে দুচোখ ভরা জলে ওই যুবতীর মা জানালেন, ধন্যবাদ জানাই তাদের যারা আমার মেয়েকে ফিরিয়ে এনে দিয়েছেন। আরো একবার গঙ্গারামপুর থানার আইসির কাছে প্রশংসা করেছে সকলেই।