বালুরঘাট, ৬জুলাই:-পুনর্ভবা নদীর জলস্তর বাড়তেই বন্যার ভ্রুকুটি দক্ষিণ দিনাজপুরে। তপনের রামপাড়া চ্যাঁচড়া গ্রাম পঞ্চায়েতের হরিতলা এলাকায় বাঁধে ফাটল। রাতভর পাহারা দিয়ে বালির বস্তা ফেলে ভাঙ্গন আটকানোর চেষ্টা আতঙ্কিত বাসিন্দাদের। বাধ চুইয়ে জল ঢুকছে গ্রামে। পঞ্চায়েত ও প্রশাসনিক স্তরে যোগাযোগের মাধ্যমে সমগ্র পরিস্থিতির উপর নজর রয়েছে বললেন উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন দপ্তরের প্রতিমন্ত্রী বাচ্চু হাঁসদা।
বিগত কিছুদিন ধরে বৃষ্টি ও বাংলাদেশের নদীগুলিতে জল বাড়ার কারণে ক্রমশ জল বাড়ছে পূর্নভবা নদীতে। রবিবার রাতে তপনের রামপাড়া চ্যাচড়া গ্রাম পঞ্চায়েতের হরিতলা এলাকায় হঠাৎ করে বাঁধে ফাটল দেখা দেয়। ২০১৭ সালে ওই এলাকাতেই বাঁধ ভেঙ্গে ভয়াবহ বন্যার সৃষ্টি হয়েছিল। যার পর প্রশাসনের তরফে বোল্ডার দিয়ে ওই বাঁধ বাধানোর কাজ শুরু করে এলাকায়। কিন্তু হঠাৎ করে এলাকায় নদীতে জল বাড়তেই বাঁধে ফাটল দেখা দেয়। যা চাক্ষুষ করে আবারও সেই বন্যার পুনরাবৃত্তির আশঙ্কায় রাতেই ঝুড়ি, কোদাল নিয়ে বাঁধ মেরামতির কাজে নেমে পড়েন স্থানীয় বাসিন্দারা। খবর পেয়ে এলাকায় পৌঁছান পঞ্চায়েত সদস্যরাও। যাদের উপস্থিতি তেই চলে গ্রামবাসীদের বাধ মেরামতির কাজ।
জানা গেছে, হরিতলা এলাকার ওই বাঁধ সংলগ্ন তিনটি মৌজা রয়েছে। করদহ, জামালপুর ও মান্দাপাড়া মৌজার অধীনে রয়েছে ওই গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রায় আট থেকে দশটি গ্রাম। যার ভাঙনে কয়েকহাজার মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হবেন। শুধু তাই নয়, নষ্ট হবে কয়েকশো কৃষকের জমির ফসলও। আর এমন আশঙ্কাতে রাতের অন্ধকারেই বাঁধ মেরামতের জন্য ছুটে যায় সকলে। বালির বস্তা ফেলে বাঁধের ফাটল আটকানোর চেষ্টা করে দেন বাসিন্দারা। শুধু তাই নয় রাতভর ওই বাঁধ পাহাড়া দিয়ে গ্রামবাসীদের সুরক্ষায় সহযোগিতার হাতও বাড়িয়ে দেয় একে অপরকে। যদিও বাঁধের কিছু অংশের ফুটো দিয়ে ইতিমধ্যে অল্প অল্প করে জল ঢুকতে শুরু করেছে গ্রামের দিকে। আর যাকে ঘিরে চরম দুশ্চিন্তায় পড়েছেন বাসিন্দারা।
এলাকার বাসিন্দা উত্তম রায় ও সৌম্য বিশ্বাসরা জানিয়েছেন, নদীতে জল বেড়ে যাওয়ায় বাঁধে ফাটল দেখা দিয়েছে। পূর্ব অভিজ্ঞতা থেকে আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন বাসিন্দারা। যার কারণে রাতের অন্ধকারে সকলে ছুটে গিয়ে বাঁধ মেরামতের কাজে হাত লাগান। এই বাঁধ ভাঙ্গলে আট দশটি গ্রামের ফসলের ক্ষতির পাশাপাশি বিপাকে পড়বেন সাধারণ মানুষরা।
এলাকার বিধায়ক তথা উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন দপ্তরের প্রতিমন্ত্রী বাচ্চু হাঁসদা জানিয়েছেন, তিনি বিষয়টি প্রশাসন ও বিডিওকে জানিয়েছেন। স্থানীয় নেতাদের এলাকায় থেকে নজরদারির জন্য বলা হয়েছে। সমগ্র পরিস্থিতির ওপর নজর রাখছে তিনি নিজেও।