শীতল চক্রবর্তী গঙ্গারামপুর ১১ই জুলাই দক্ষিণ দিনাজপুর:-এক স্কুলছাত্রীকে আত্মহত্যার প্ররোচনা দেওয়ার অভিযোগে পুলিশ এক যুবককে গ্রেপ্তার করেছে।দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার গঙ্গারামপুর থানার পুলিশ নাবালিকার পরিবারের তরফে লিখিত অভিযোগ পাওয়ার পরেই শুক্রবার রাতেই অভিযুক্ত যুবককে স্থানীয় থানার নয়াবাজারের মাসনাতলা এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করে থানায় নিয়ে আসে। অভিযোগ উঠেছে ওই যুবকের স্ত্রী-সন্তান থাকার পরেও নাবালিকা স্কুলছাত্রীকে বিয়ে করবে বলে বিভিন্ন জায়গায় নিয়ে গিয়ে খারাপ কাজ করেছে সে। পরিস্থিতি বেগতিক দেখে ওই স্কুলছাত্রীকে যুবক আত্মহত্যার প্ররোচনা দেবার ফলেই তার মৃত্যু হয়েছে। ছাত্রীর পরিবারের তরফে অভিযুক্তের কঠোর শাস্তির দাবি জানিয়ে থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।পুলিশ জানিয়েছে অভিযুক্তের বিরুদ্ধে নির্দিষ্ট ধারায় মামলা দায়ের করে তাকে গ্রেপ্তার করে আদালতে পাঠানো হয়েছে।পুরো ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ।
পুলিশ জানিয়েছে স্কুলছাত্রীকে আত্মহত্যার প্ররোচনা দেওয়ার অভিযোগে ধৃত ওই যুবকের নাম চন্দন বর্মন,বয়স 34 বছর।তার বাড়ি গঙ্গারামপুর থানার নয়াবাজারের মাসনাতলা এলাকায়।সে পেশায় একজন রাজমিস্ত্রির কাজ করা শ্রমিক এর সহযোগী হিসেবে বহুদিন ধরে কাজ করে থাকেন বলে খবর।গঙ্গারামপুর থানার 16 নম্বর ওয়ার্ডের রামকৃষ্ণ পল্লী এলাকার বাসিন্দা হরেকৃষ্ণ সরকারকে গঙ্গারামপুর পৌরসভা থেকে হাউস ফর অল প্রকল্পে একখানি ঘর বরাদ্দ করা হয়েছিল।সেই ঘর তৈরি করার জন্য রাজমিস্ত্রি গঙ্গারামপুর থানার কামার পুকুরের বাসিন্দা মিজানুর রহমানকে সেই কাজ করার জন্য ঠিক করেছিলেন।ঠিকাদার মিজানুর রহমান তার সহযোগী হিসেবে চন্দন বর্মন কে সেই কাজে নিয়েছিলেন বলে খবর। অভিযোগ,সেখানে কাজ করার সময় নয়াবাজারের মাসনাতলা এলাকার যুবক চন্দন বর্মন এর সঙ্গে হরেকৃষ্ণ সরকারের ছোট মেয়ে এই বছরের দশম শ্রেণীর ছাত্রী দীপা সরকার (১৬) মধ্যে ভালোবাসার সম্পর্ক গড়ে ওঠে।চন্দন নাবালিকা দীপাকে ভুল বুঝিয়ে বিভিন্ন জায়গায় নিয়ে গিয়েছে এবং তার সঙ্গে খারাপ কাজ করা হয়েছে বলে অভিযোগ দীপার পরিবারের লোকজনদের।এমনকি চন্দন তাকে একটি মোবাইল ফোন কিনে দিয়েছিল বলে দীপার পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে।বিষয়টি জানাজানি হতেই চন্দন বর্মন এর বাড়ি থেকে বেশ কিছুদিন আগে তার বাবা সুশীল বর্মন, মা সহ চারজন গিয়ে বিয়ে দেওয়ার কথা বলে দুজনের সঙ্গে।যদিও দীপার পরিবারের লোকেরা খোঁজ নিয়ে জানতে পারে যে, চন্দন আগেই বিবাহিত তার স্ত্রী সন্তান রয়েছে।স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে গোলমাল এর কারণে তার স্ত্রী বাবার বাড়িতে রয়েছে।গত 6 জুলাই সকালে চন্দনের স্ত্রী বাড়িতে ফিরে আসার খবর চন্দন দীপাকে ফোনে জানায় বলে সূত্রে জানা গিয়েছে।7 জুলাই মঙ্গলবার রাতে নিজের ঘরে মোবাইলে শেষ ভিডিও কল হয়েছে চন্দনের কিনে দেওয়া দীপার মোবাইল ফোন থেকে।তারপরে সে গলায় দড়ি দিয়ে আত্মহত্যা করে।পরে পুলিশ গিয়ে মৃতদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তে পাঠায়।ঘটনায় মোবাইল থেকে বহু তথ্য ফোন রেকর্ড সহ যাবতীয় প্রমাণ পেয়েছে পুলিশ বলে খবর।
স্কুলছাত্রীর বাবা হরে কৃষ্ণ সরকার ও দাদা বিজয় সরকারেরা অভিযোগ করে বলেন,আমাদের বাড়ির নাবালিকা মেয়েকে বিভিন্ন জায়গায় নিয়ে গিয়ে চন্দন খারাপ কাজ করেছে।পরে ওকে আত্মহত্যা করতে বাধ্য করেছে সে।ঘটনায় দোষী চন্দন ছাড়াও ওর বাবা সুশীল সরকার,মা ও মিস্ত্রি মিজানুর রহমান যুক্ত রয়েছে।দোষীদের কঠোর শাস্তির দাবি জানিয়ে থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছি বলেই তারা কান্নায় ভেঙে পড়েন। গঙ্গারামপুর থানার আইসি পূর্ণেন্দু কুমার কুন্ডু জানিয়েছেন, অভিযুক্তের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করে শনিবার তাকে মহকুমা আদালতে পাঠানো হয়েছে। অভিযুক্তকে গ্রেফতার করা হয়েছে।তার সঙ্গে কোনো খারাপ কাজ করা হয়েছে কিনা সে বিষয়ে ময়নাতদন্তের রিপোর্ট হাতে পেলেই জানা যাবে।
ওই নাবালিকা ছাত্রীর এমন মৃত্যুর ঘটনায় পরিবারসহ এলাকাজুড়ে শোকের ছায়া নেমে এসেছে।