দূর্গাপুজোকে কেন্দ্র করে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির অনন্য নজির গড়ে চলেছে রায়গঞ্জের মেহেন্দীগ্রাম সার্বজনীন দুর্গোৎসব

0
739

রায়গঞ্জ:-দূর্গাপুজোকে কেন্দ্র করে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির অনন্য নজির গড়ে চলেছে রায়গঞ্জের মেহেন্দীগ্রাম সার্বজনীন দুর্গোৎসব। এলাকার হিন্দু মুসলিম মানুষের সমন্বয়ে তিনশো বছর ধরে সম্প্রীতির দুর্গোৎসব হয়ে আসছে উত্তর দিনাজপুর জেলার রায়গঞ্জ ব্লকের মেহেন্দীগ্রাম সার্বজনীন দূর্গাপুজোয়। এই পূজোয় শুধু চাঁদা দেওয়াই নয়, রীতিমতো পূজো কমিটিতে থেকে চাঁদা তোলা সহ পুজার সমস্ত কাজে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেন মেহেন্দিগ্রাম এলাকার মুসলিম সম্প্রদায়ের মানুষেরা। ভিন্ন ধর্মালম্বী হলেও এখানকার দেবী দূর্গার মাহাত্ম্য তাদেরকে আকৃষ্ট করে পুজোয় শামিল হতে। আর সেকারনেই রায়গঞ্জ শহর থেকে দশ কিলোমিটার দূরের এই গ্রামের পুজোর দেবীর প্রতিমা দর্শন করতে হাজার হাজার মানুষ ছুটে আসেন।

রায়গঞ্জ ব্লকের মেহেন্দিগ্রাম সার্বজনীন দূর্গোৎসবের প্রচলন হয়েছিল আজ থেকে প্রায় তিনশ বছর আগে। কথিত আছে তৎকালীন বাংলাদেশের হরিপুরের জমিদার দুর্লভ রায়চৌধুরী এই পুজো শুরু করেছিলেন। এখানকার বাসিন্দারা পুজোর সময় আসলেই পায়ে হেঁটে হরিপুরে জমিদারের বাড়ি গিয়ে পুজোর,সামগ্রী বাঁকে করে বয়ে নিয়ে আসতেন এই মেহেন্দিগ্রাম গ্রামে। দেশভাগ ও জমিদারি প্রথা লোপ লোপ পাওয়ার পর মেহেন্দিগ্রামের সর্ব ধর্ম সম্প্রদায়ের মানুষ চাঁদা তুলে দূর্গোৎসবের আয়োজন করে আসছে। আজ এই মেহেন্দিগ্রামের পুজো সম্প্রীতির পুজো বলে পরিগনিত হয়েছে। এলাকার হিন্দু মুসলিম বাসিন্দারা কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে পুজো করছেন। শুধু চাঁদা তোলাই নয়, পুজোর পাঁচটা দিন ষষ্টী থেকে দশমী এলাকার মুসলিম মানুষেরা মাছ মাংস বা আমিষ খাবার না খেয়ে পুজোর কাজে যুক্ত থাকেন। তারাও দেবী দূর্গার কাছে ভোগ প্রসাদ নিবেদন করেন। তাঁদের বাড়িতেও এই দূর্গাপুজো কে কেন্দ্র করে বাইরে থেকে আত্মীয়স্বজনেরা আসেন পুজোর আনন্দ উপভোগ করতে। মেহেন্দিগ্রামের দূর্গোৎসবে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির মেলবন্ধন ঘটে এটা বলাই যায়।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here