শীতল চক্রবর্তী গঙ্গারামপুর 18 নভেম্বর দক্ষিণ দিনাজপুর :- বিডিও অফিসে ব্লক স্তরে প্রশাসনের সরকারি অফিসে গিয়ে ঘরসহ বারান্দার পাবার আবেদন পত্র বেহাল অবস্থায় পড়ে রয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। চাঞ্চল্যকর ঘটনাটি ঘটেছে দক্ষিণ দিনাজপুরের গঙ্গারামপুর ব্লক অফিসে। সাধারণ মানুষজনদের অভিযোগ, একটি ফরম জমা করতে এসে ২০০/২৫০ টাকা খরচ হয়েছে। এটা যদি ঘর ও তার সঙ্গে বারান্দা পাবার জন্য আবেদন করতে আসার সময় ই তাদের ফিরিয়ে দিলেই পারত। লকডাউন এরমধ্যে এমনটা প্রশাসনের করার কোন মানেই ছিল না। বিষয়টি নিয়ে চরম ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন বিরোধী রাজনীতি দলের নেতারা। তৃণমূলের জেলা সভাপতি অবশ্য জানিয়েছেন, এমনকি বিষয়টি আছে সেটা দেখা হচ্ছে। প্রশাসনের তরফে অবশ্য জানানো হয়েছে ফ্রম কেউ রেখে গেছে। আমারা নিতে না চাইতেও তা জমা করে গেছে জোর করে। ব্লক প্রশাসনের এমন তাদের ভাবমূর্তি যে খারাপ হবে সে বিষয়ে প্রশ্ন তুলেছেন অনেকেই।
কিছুদিন আগে জেলার বিভিন্ন ব্লকের পাশাপাশি গঙ্গারামপুর ব্লকের ১১ টি গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকা থেকে হাজার হাজার মানুষ জন সেখানে জড়ো হয়েছিলেন। সকাল সাতটা থেকে লাইন দিয়ে দাঁড়িয়ে থেকে বিকেল পাঁচটা পর্যন্ত যারা প্রধানমন্ত্রী উজ্জ্বলা যোজনা গ্যাস এর প্রকল্পে সেই সুযোগ পেয়েছিলেন তাদের জন্য ঘর সহ বারান্দা দেবার কথা কানে শুনেই অনেকেই সে ফরম জমা দিতে এসেছিলেন। যার পরিমাণ দাঁড়িয়েছে কয়েক হাজারের মত।
গঙ্গারামপুর ব্লক প্রশাসন সূত্রে খবর, এই ফরম জমা নিব আর কাজে ব্লকের যুগ্ম বিডিও অর্ক মান্ডিকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল ব্লক প্রশাসনের তরফে। রীতিমতো তিনি ব্লকের মধ্যে টেবিল পেতে পুলিশ প্রশাসনের সহযোগিতা নিয়ে শুরু থেকেই এই ফরম জমা নেওয়ার জন্য ব্যবস্থা করেছিলেন। আর ফরম জমা দেবার সুযোগ নিয়ে এক শ্রেণীর দালাল চক্র ওই ফরম পূরণের জন্য আরো কাছ থেকে ৫০ কারো কাছ থেকে ১০০ টাকা করে নিয়েছিল বলে অভিযোগ। সব মিলিয়ে বাসিন্দাদের ঘরসহ বারান্দা পাবার জন্য ফরম জমা দিতে এসে ২০০/২৫০ টাকা পর্যন্ত খরচ হয়েছে বলে তারা অভিযোগ করেন। শেষদিনে গঙ্গারামপুর ব্লক প্রশাসনে পুলিশি সহযোগিতা নিয়ে ওই ফর্ম জমা করেছিল। এমনকি ব্লকের বাসিন্দাদের পাশাপাশি পৌরসভা এলাকার বাসিন্দারা ও সেই ফরম জমা করে ছিল বলে খবর। সব মিলিয়ে প্রায় গঙ্গারামপুর ব্লক থেকেই হাজার হাজার ফর্ম কার্যত ব্লক অফিসের পাশে চরম অবহেলায় ছেড়ে ছুটে পড়ে রয়েছে বলে সেই চিত্র ফুটে উঠেছে আমাদের ক্যামেরায়। তবে ব্লক প্রয়োজন অবশ্য কাউকে ফরম জমা করার রিসিভ কপি দেননি। যুগ্ম বি অবশ্যই ফর্ম জমা দেবার জন্য তাদের অফিসের কোন দায় নেই বলেই পরিষ্কারভাবে জানিয়েদেন।
যদিও গঙ্গারামপুরের মহকুমা শাসক মানবেন্দ্র দেবনাথ জানিয়েছেন, কোন সরকারি নির্দেশ ছিল না, কারো চক্রান্ত হতে পারে। তাই এত ফরম জমা হয়েছিল। আমি বিডিও দের বলেছিলাম ভালো করে ফার্ম গুলি রেখে দেবার জন্য। পরবর্তীতে যদি কোনো নির্দেশ আসে। যদি ফোনগুলি ভালো করে না রাখে তার দায় সেই ব্লকের। তবুও আমি বিষয়টা দেখছি কি করা যায়।
সিপিএমের জেলা নেতা মোসাদ্দেক হোসেন জানিয়েছেন, ভোটের আগে এটা চক্রান্ত। তাই তৃণমূল করলেই ঘরসহ বারান্দা পাওয়া যাবে আবেদন করার পরিকল্পনা করেছিল। মানুষ সব বুঝতে পেরেছে। এটা রাজনীতি পরিকল্পনা ছাড়া আর কিছু নয়।
বালুঘাটের বিজেপির সাংসদ সুকান্ত মজুমদার জানিয়েছেন, ভোটের আগে নেতারা এমনটা পরিকল্পনা নিয়েছিল। এদের এই চক্রান্ত মানুষ বুঝতে পেরেছে।
গঙ্গারামপুরের বিধায়ক তথা জেলা তৃণমূল সভাপতি গৌতম দাস জানিয়েছেন, রাজনীতি করার জন্য বিজেপি দল এমন কাণ্ড করেছে। সরকারি কোন আদেশনামা ছিল না। ফলে এমনটা বিজেপি করতে পারে।
এখন দেখার এই সমস্যা কোন দিকে মোড় নেয় সেদিকে তাকিয়ে রয়েছে সকলেই।
Home বাংলা উত্তর বাংলা বিডিও অফিসে ব্লক স্তরে প্রশাসনের সরকারি অফিসে গিয়ে ঘরসহ বারান্দার পাবার আবেদন...