হরিশ্চন্দ্রপুর;০৮সেপ্টেম্বর:-১০ দিন ধরে পানীয় জলের সংকট এলাকায়। পাম্প খারাপ হওয়াই মিলছে না পানীয় জল। চরম সমস্যার সম্মুখীন স্থানীয় বাসিন্দারা। অবশেষে পানীয় জলের দাবিতে পথ অবরোধ করে বিক্ষোভ প্রদর্শন বাসিন্দাদের। দ্রুত সমস্যা সমাধানের আশ্বাস বিধায়কের। কটাক্ষ বিজেপির। তুঙ্গে রাজনৈতিক চাপানউতোর। মালদহ জেলার অন্যতম একটি গুরুত্বপূর্ণ বড় এলাকা হল হরিশ্চন্দ্রপুর। সাথে এই এলাকাটি ঘন জনবসতিপূর্ণ। বিহার সীমান্তবর্তী হরিশ্চন্দ্রপুর বসবাস করে বহু মানুষ। ব্যাবসায়িক দিক দিয়েও গুরুত্বপূর্ণ এই এলাকা। আর এই হরিশ্চন্দ্রপুর সদর এলাকাতেই ১০ দিন ধরে মিলছে না পানীয় জল। কারণ বহু পুরনো দিনের পাম্প খারাপ হয়ে গেছে। পাম্পে বিভিন্ন জায়গায় লিকেজ। তাই সারাইয়ের কাজ চলছে। ফলে বন্ধ জল সরবরাহফলে বন্ধ জল-সরবরাহ। যার জন্য সমস্যার সম্মুখীন হয়েছে এলাকার বহু মানুষ। এলাকার যে এক দুটি ট্যাপে জল পড়ছে সেগুলিতে মানুষের মারাত্মক ভিড় হচ্ছে। জল নেওয়ার জন্যই বিবাদ তৈরি হচ্ছে মানুষের মধ্যে। খেতে হচ্ছে আয়রনযুক্ত জল। এমনকি জল আনার জন্য কয়েক কিলোমিটার দূরে যেতে হচ্ছে বারদুয়ারী তে। তাই এদিন সঠিক ভাবে পানীয় জলের সরবরাহের দাবিতে হরিশ্চন্দ্রপুর পঞ্চায়েতের সামনে গ্রামীণ হাসপাতাল গ্রামের পথ অবরোধ করে বিক্ষোভ প্রদর্শন করে স্থানীয় বাসিন্দারা। মূলত এলাকার মহিলারা জলের বালতি নিয়ে বিক্ষোভে নামে। তাদের দাবি দ্রুত এই সমস্যার সমাধান করতে হবে। সাথে প্রত্যেক বাড়িতে পানীয় জল সরবরাহের ব্যবস্থা করতে হবে। পথ অবরোধ করে বিক্ষোভের ফলে সৃষ্টি হয় যানজট। পরিস্থিতি সামাল দিতে আসে হরিশ্চন্দ্রপুর থানার পুলিশ। এদিকে এই ঘটনা নিয়ে তুঙ্গে উঠেছে রাজনৈতিক তরজা। বিজেপির দাবি হরিশ্চন্দ্রপুর সদর এলাকা থেকে বিধানসভা ভোটে তৃণমূল ভোট পাইনি। তাই এলাকার কাজ ঠিক ভাবে করছে না। যদিও স্থানীয় বিধায়কের পাল্টা দাবি বিজেপি এই ধরনের নোংরা রাজনীতি করে। পাম্প খারাপ হওয়ার ফলে সমস্যা হয়েছে। দ্রুত সমাধান হয়ে যাবে। সব মিলিয়ে পানীয় জলের দাবিতে আজকের এই বিক্ষোভ কে ঘিরে যথেষ্ট উত্তেজনা ছড়ায় এলাকায়।
কোহিনুর নামে বিক্ষোভরত এক মহিলা বলেন, ” ৮-১০ দিন ধরে আমাদের জল নিয়ে খুব সমস্যা হচ্ছে। পরিস্রুত পানীয় জল পাচ্ছি না। জলের জন্য যেতে হচ্ছে বহুদূরে। নোংরা জল খেয়ে শরীর খারাপ হচ্ছে। তাই আজ আমরা বিক্ষোভে নেমেছি। বিভিন্ন গ্রামে বাড়ি বাড়ি জল সরবরাহের ব্যবস্থা হয়েছে। আমাদের দাবি হরিশ্চন্দ্রপুরেও দ্রুত সেটা করতে হবে।”
পারভীন বিবি নামে আরেক বিক্ষোভকারী বলেন,” বারদুয়ারী যেতে হচ্ছে জল আনতে। পরিষ্কার জল পাচ্ছি না। কলের জলে আইরন। ৮ দিন ধরে এই সমস্যা হচ্ছে। এলাকায় জল নেই। গ্রামে গ্রামে বাড়ি বাড়ি ট্যাপ হয়ে গেছে। আমরাও সরকারের পক্ষ থেকে বাড়ি বাড়ি জল সরবরাহ চাই। সেই দাবিতেই আমাদের আন্দোলন।”
স্থানীয় তৃণমূল বিধায়ক তজমুল হোসেন বলেন,” হরিশ্চন্দ্রপুর যে জলের পাম্প তা বহু পুরনো। বিভিন্ন জায়গায় লিকেজ হয়েছে। ফলে জল সরবরাহের সমস্যা হয়েছে। মেরামতের কাজ চলছে। সপ্তাহ খানেকের মধ্যে ঠিক হয়ে যাবে। আমরা সকল মানুষের জন্য কাজ করি। জল নিয়ে কোন রাজনীতি হয় না। বিজেপির কাজ এসব নোংরা রাজনীতি।”
বিজেপি মন্ডল সভাপতি রুপেশ আগরওয়ালা কটাক্ষ করে বলেন, মানুষ জল পাচ্ছে না। জলের জন্য বিক্ষোভ করতে হচ্ছে। এর থেকে লজ্জার আর কিছু হয় না। হরিশ্চন্দ্রপুর মূল এলাকা থেকে তৃণমূল তেমন ভোট পায়নি। যার ফলে মানুষের জন্য কাজ করছে না। এই সরকার আর বেশি দিন চলবে না। পঞ্চায়েত ভোটে মানুষ এসবের জবাব দেবে।”
জলের অপর নাম জীবন। জল ছাড়া মানুষ বাঁচতে পারবে না। বহু গরিব মানুষের বাড়িতে মোটর নেই। পাড়ার কল বা ট্যাপের জলের উপর নির্ভর করে। সেখানে যদি এতদিন ধরে জল না আসে স্বাভাবিক মানুষের প্রচন্ড সমস্যা হবে। পরিস্রুত জল না খেলে পেটের বিভিন্ন অসুখ হবে। প্রশাসনের উচিত খুবই দ্রুত এই সমস্যার সমাধান করা।