শিলিগুড়িঃ-দীর্ঘ লকডাউন কাটিয়ে,সমস্ত কোভিড প্রোটোকল মেনেই বুধবার থেকে ফের সর্ব সাধারণের জন্য খুলে গেলো শিলিগুড়ির বেঙ্গল সাফারি পার্ক।গত দু’বছরে করোনা কালের প্রথম ঢেউয়ের পর পরেই বন্য প্রানী সহ জনগনের স্বার্থেই সম্পূর্ণ বন্ধ করে দেওয়া হয় পার্ক।পরে দ্বিতীয় ঢেউয়ের মাঝে কিছু দিনের জন্য আংশিক খোলা হলেও।পরে মে মাসের ২তারিখে ফের বন্ধ করে দেওয়া হয় পার্ক।এরপর দীর্ঘ চার,সাড়ে চার মাসের লকডাউন কাটিয়ে আবারওো জনসাধারণের জন্য খুলে গেলো বেঙ্গল সাফারী।উত্তরবঙ্গের পর্যটনে শিলিগুড়ির বেঙ্গল সাফারি পার্ক অন্যতম আকর্ষনীয় পর্যটন কেন্দ্র হয়ে উঠেছে।মমতা বন্দোপাধ্যায় মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার পরই তৎকালিন পর্যটন মন্ত্রী গৌতম দেবের হাত ধরেই বেঙ্গল সাফারি পার্কটির পথ চলা শুরু হয়৷পার্কটিতে ঘন বনাঞ্চলের পাশাপাশি বিভিন্ন বন্য প্রানীকে নিয়ে এসে রাখা হয় এই পার্কে।এক কথায় “ইকো ট্যুরিজম”-এর পাশাপাশি বিভিন্ন বন্য প্রানী সংরক্ষন ও প্রজোনের লক্ষেই পার্কটিতে মুক্তাঞ্চল তৈরি করে বাঘ,চিতা,হাতি,কুমির,গন্ডার সহ বিভিন্ন ধরনের রঙ-বেরঙের পাখিদের জন্য মুক্তাঞ্চল গরে তোলা হয়।
পাশিপাশি স্থানীয় ও উত্তরবঙ্গে ঘুরতে আসা পর্যটকদের বিনোদন ও বনাঞ্চলে প্রকৃতির সঙ্গে মুক্ত বাতাসে মিশে যেতেই এই পার্কটিকে পর্যটনের লক্ষে তৈরি করা হয়।শুরুর দিন গুলি থেকেই এই পার্কটিতে পর্যটকদের ভিড় থাকতো প্রতিদিনই।কিন্তু করোনার গ্রাসে গত দু’বছর যাবৎ একদমই জন মানব শূন্য হয়ে যায় এই পার্কটি।কোভিড -১৯-এর দাপটে যখন গোটা বিশ্ব ঘর বন্দি,বন্ধ সমস্ত পৃথিবী,তার থেকে বাদ যায় নি এই বেঙ্গল সাফারিও।করোনার গ্রাসে সরকারি নির্দেশ মত গত দু’বছর ধরে কখনো আংশিক,আবার কখনো সম্পূর্ণ ভাবে বন্ধ করে দেওয়া হয় পার্ক।ফলত স্থানীয় কিংবা পর্যটকদের একপ্রকার হতাশ হয়েই ঘরে ফিরতে হয়।এবার করোনা ভাইরাতের দাপট অনেকটাই নিয়ন্ত্রনে আসায় ফের সাধারণ পর্যটকদের জন্য পার্ক খুলে দেয়ার সিদ্ধান্ত নেয় সরকার।ফলে বুধবার থেকে আবারও নিজের মহিমায় ফিরে এলো বেঙ্গল সাফারি।
সাফারি পার্ককে ফের খুলে দেওয়ার প্রসঙ্গে বেঙ্গল সাফারি পার্কের অধিকর্তা বাদল দেবনাথ জানান,দীর্ঘদিনের বন্ধ থাকার পর দর্শনার্থী বা পর্যটককেরা নিশ্চিৎ ছিল না যে কবে খুলবে বা খুলবে না।তাই তাদের পার্ক পরিদর্শনের কোন ঠিক ছিল না।এখন যখন খুলে গেছে তখন আস্তে আস্তে ফের পর্যটকের সংখ্যা বাড়বে।এদিন খোলার পর অল্প কিছু সংখ্যক পর্যটকের দেখা মিললেও,তিনি আশা করেন,আগামী দু-এক দিনের পর থেকে ধীরে ধীরে এই সংখ্যাটা উপচে পরবে।তিনি আরও জানান,যারা ঘুরতে ভালোবাসেন তারা কার্যত গৃহবন্দি হয়ে হাপিয়ে উঠছে।এই পার্কটিকে খুলে দেওয়ার ফলে এবার তারা পার্কমুখি হতে চলেছে।ছোট শিশুদের কাছেও এখানে আসার একটা তাগিদ ছিল সেটা পার্ক খুলে দেওয়ায় আবার চাগার দিয়ে উঠবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।সামনেই পুজো আসছে।আর পর্যটন প্রেমি মানুষেরা এই পুজোকে কেন্দ্র করে ঘুরতে ভালোবাসেন।তাই তার আশা এবারের পুজোতেও পার্কে ভিড় থাকবে চোখে পরারই মত।তিনি আরও জানান,পূর্বের মতই পার্কের ঢোকার দু ধরনের বুকিং চালু রয়েছে।অফলাইন ও অনলাইন।
যারা অনলাইনে টিকিট বুকিং করতে পারবেন না,তারান এখানে এসে ম্যানুয়াল অফলাইন বুকিং করে পার্কে প্রবেশ করতে পারবেন।করোনার সমস্ত প্রোটকল মেনেই পার্ক খোলা থাকবে।স্যানিটাইজেশন থেকে শুরু করে মাস্ক,শারীরিক দূরত্ব বজায় রাখা সমস্ত বিধিনিষেধ মেনেই পর্যটকদের ভিতরে প্রবেশ করানো হবে বলে জনান তিনি।ভিতরে পর্যটকদের সাফারির জন্য গাড়ি গুলির মধ্যে দশটা গাড়িই চালু করে দেওয়া হচ্ছে।পরবর্তি সময়ে পর্যটকের ভিড়ের ওপর বারানো কমানো নির্ভর করবে বলে জানান বাদল দেবনাথ।অন্যদিকে, গোটা পরিবার নিয়ে এখানে ঘুরতে আসা নরেন সোরেন নামে এক পর্যটক জানান,এই পার্কে আগে কখনই আসেন নি তারা।দীর্ঘ দিন ধরেই একটা প্লানিং ছিল বেঙ্গল সাফারি পার্কে সাফারি করার।কিন্তু করোনার জন্য ঘর থেকে বেরোতেই পারেন নি তারা।এখন যখন সবটাই শিথিল করে দেওয়া হয়েছে।তখন প্রথম প্লানিং এই পার্কে ঘুরতে আসা।আর এই পার্ক খোলা পেয়ে খুবই আনন্দিত তার গোটা পরিবার।শিশু সহ বৃদ্ধ মা,স্ত্রী ভিষন খুশি হয়ছেন।পার্কে যত্রতত্র ঘুরে প্রকৃতির সঙ্গে মিশে গিয়ে আনন্দিত সোরেন পরিবার।