নয় মাসের শিশুকন্যাকে শ্বাসরোধ করে খুন! গ্রেপ্তার মা। কুমারগঞ্জের দিওড়ে তুমুল উত্তেজনা

0
506

পিন্টু কুন্ডু, বালুরঘাট,  ১৫ জুন —-– নয় মাসের কন্যা সন্তানকে শ্বাসরোধ করে খুন করার অভিযোগ উঠল মায়ের বিরুদ্ধে। চাঞ্চল্যকর ঘটনাটি দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার কুমারগঞ্জ ব্লকের দিওড়ের হাসপাতাল মোড় সংলগ্ন এলাকার। পুলিশ জানিয়েছে মৃত ওই শিশুর নাম তৃষা শীল। অন্নপ্রাশনের মাত্র কয়েকদিন পরে এমন ঘটনায়  রীতিমতো শোকের ছায়া নেমে এসেছে এলাকায়। ঘটনার পরেই কুমারগঞ্জ থানার পুলিশ এলাকায় পৌঁছে অভিযুক্ত মা বর্না শীলকে গ্রেপ্তার করেছে। 
পরিবার সূত্রের খবর অনুযায়ী, প্রায় তিন বছর আগে বালুরঘাটের পাগলিগঞ্জ এলাকার বাসিন্দা বর্না শিলের সাথে বিয়ে হয় পেশায় গাড়ি চালক দিওড়ের রামকৃষ্ণ শীলের। বিয়ের ছ মাস পরেই মানসিক রোগে আক্রান্ত হয় বর্না। দীর্ঘদিন ধরে চিকিৎসাও চালাচ্ছিলেন তার পরিবারের লোকেরা। এরই মাঝে বর্ণা গর্ভবতী হয়ে পড়ায়  বাড়তি নজর দেন তার পরিবারের লোকেরা। নয়মাস আগে একটি ফুটফুটে কন্যা সন্তানেরও জন্ম দেন তিনি। যারপর প্রায় পাঁচ মাস বাবার বাড়ি পাগলীগঞ্জেই ছিলেন তিনি। মাত্র কয়েক মাস হল শ্বশুড়বাড়ি দিওড়ে এসেছিলেন বর্না। যেখানে স্বামী ছাড়াও শ্বশুর-শাশুড়ির নজরদারির মধ্যেই ছিল ফুটফুটে শিশু কন্যাটি ও তার মা। মঙ্গলবার  শিশুকন্যার ঠাকুরমা মায়ারানী শীল ব্যাঙ্কের জরুরী কাজে স্বল্প সময়ের জন্য বাইরে বেরোতেই ঘটে যায় নির্মম সেই দুর্ঘটনাটি। বাড়ি ফিরে এসে যা দেখতে পেয়েই কান্নায় লুটিয়ে পড়েছেন তিনি। যদিও পরিবারের লোকেদের তরফে জানানো হয়েছে, ঠাকুরদা হরনাথ শীল ওইদিন বাড়িতে থাকলেও কিছুটা শারীরিক অসুস্থতা বোধ করায় ঘরেই শুয়ে ছিলেন তিনি। এরই মাঝে ওই শিশুকন্যাকে বাড়ির পিছনে একটি কলাবাগানের মধ্যে নিয়ে গিয়ে শ্বাসরোধ করে খুন করে তার মা বর্না। ঘটনাকে ঘিরে তুমুল আলোড়ন ছড়ায় গোটা দিওড় এলাকায়। যার পরেই কুমারগঞ্জ থানার পুলিশ এলাকায় পৌঁছে অভিযুক্ত মা কে গ্রেপ্তার করে ঘটনার তদন্তে নেমেছে। বুধবার শিশুটির দেহ ময়নাতদন্তের জন্য আনা হয়েছে বালুরঘাট জেলা হাসপাতালে। 
মৃত শিশুকন্যার ঠাকুরমা মালারানী শীল বলেন, ছেলের বউ মানসিক রোগী হলেও কখনো ভালোই থাকে আবার কখনো অসুস্থ হয়। যে কারণে সব সময় শিশুটিকে চোখে-চোখে রাখতেন তিনি। ওইদিন বউএর শারিরীক অবস্থা ভালো দেখে খেলতে থাকা নাতনিকে রেখে ব্যাঙ্কের জরুরী কাজে গিয়েছিলেন। কিন্তু ফিরে এসে যে এমন নির্মম ঘটনা চোখে দেখবেন তা ভাবতেও পারেননি। মেয়েকে ঘরের পিছনে কলার বাগানের নিয়ে গিয়ে শ্বাসরোধ করে খুন করেছে। যেখানে বেশকিছুক্ষন ধস্তাধস্তি হওয়ায় মলত্যাগও করে ফেলেছিল সে।
মৃত শিশুকন্যার দিদা আন্না সরকার বলেন, বিয়ে দেবার ছয় মাস পর থেকেই মেয়ে মানসিক রোগে আক্রান্ত হয়। বালুরঘাট জেলা হাসপাতালের চিকিৎসক ও কবিরাজি দিয়ে তার চিকিৎসা চালিয়ে চলেছিলেন। কিন্তু তারমধ্যেই ফুটফুটে ওই বাচ্চাটিকে যে এমনভাবে মেরে ফেলবে তা তারা স্বপ্নেও ভাবতে পারেননি।
কুমারগঞ্জ থানার পুলিশ জানিয়েছে, মৃতদেহ ময়নাতদন্তের পাশাপাশি অভিযুক্ত মা কে গ্রেপ্তার করে ঘটনার তদন্ত শুরু করা হয়েছে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here