কুমারগঞ্জে কাজ না করেও পঞ্চায়েত প্রধান ও তার স্বামীর নামে একশো দিনের কাজের হাজার হাজার টাকার বিল, জেলা তৃণমূল সভাপতির খাসতালুকে এমন লাগামহীন দুর্নীতির ঘটনায় চোখ কপালে উঠেছে স্থানীয়দের

0
429

পিন্টু কুন্ডু, বালুরঘাট, ১০ জুলাই ———– মাঠে কাজ করতে দেখা না গেলেও খাতা কলমে প্রায় রোজই একশো দিনের কাজ করছেন এক প্রধান ও তার স্বামী। উঠছে হাজার হাজার টাকার বিলও। ঘটনা নিয়ে অবশ্য লাগামহীন দুর্নীতির অভিযোগ তুলে সরব হয়েছেন এলাকার বাসিন্দারা। চাঞ্চল্যকর ঘটনাটি দক্ষিন দিনাজপুর জেলার কুমারগঞ্জ ব্লকের সমজিয়া গ্রাম পঞ্চায়েতের। খোদ জেলা তৃণমূল সভাপতি উজ্জ্বল বসাকের নিজের এলাকার পঞ্চায়েতে এমন দুর্নীতি প্রকাশ্যে আসতেই রীতিমতো আলোড়ন পড়েছে গোটা দক্ষিন দিনাজপুর জেলাতে। জেলা তৃণমূল সভাপতির যুক্ত থাকা ও সেখান থেকে টাকার ভাগ পাওয়া নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন খোদ বালুরঘাটের সাংসদ তথা বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদারও। যদিও বিষয়টি তার জানা নেই বলেই জানিয়েছেন জেলা তৃণমূল সভাপতি উজ্জ্বল বসাক। 

কুমারগঞ্জ ব্লকের অন্তর্গত বাংলাদেশ সীমান্ত লাগোয়া  সমজিয়া গ্রাম পঞ্চায়েতটি। ২০১৮ সালে পঞ্চায়েত নির্বাচনে তৃণমূলের ভরা বাজারে ওই পঞ্চায়েতটির দখল নেয় বিজেপি। যে এলাকাই অন্যতম তৃণমূল নেতা হিসেবে পরিচিত উজ্জ্বল বসাক। বর্তমানে যার কাধেই ভর করে দাঁড়িয়ে রয়েছে দক্ষিন দিনাজপুর জেলা তৃণমূল। প্রায় একবছর আগে ওই সমজিয়া গ্রাম পঞ্চায়েতে অনাস্থা ডেকে বিজেপিকে হঠিয়ে দেয় শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেস। যার প্রধান করা হয় রুনা লাইলা বেগমকে। অভিযোগ এর পর থেকেই ওই পঞ্চায়েতে শুরু হয় লাগামহীন দুর্নীতি। মাঠে কাজ না করেও নিজেদের নামে হাজার হাজার টাকার বিল করিয়ে নেন ওই পঞ্চায়েত প্রধান ও তার স্বামী ইয়াকুব আলী সরকার বলে অভিযোগ। যা সামনে আসতেই রীতিমতো চোখ কপালে উঠবার জোগাড় স্থানীয় বাসিন্দাদের। একশো দিনের কাজ করেও যখন টাকা পাচ্ছেন না গ্রামের গরিব মানুষেরা, তখন ঘরে বসে থেকে কিভাবে ওই প্রধান ও তার স্বামীর নামে একশো দিনের কাজের বিল বেরোচ্ছে তা নিয়েই প্রশ্ন তুলেছেন স্থানীয়রা। খোদ জেলা তৃণমূল সভাপতির খাস তালুকে এমন দুর্নীতি সামনে আসলেও কেনই বা নিশ্চুপ রয়েছেন তিনি ?  উঠেছে সে প্রশ্নও। ঘটনার পিছনে অবশ্য জেলা তৃণমূল সভাপতির যোগ থাকবার বিষয়ই উস্কেছেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি। 

বালুরঘাটের সাংসদ তথা বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার বলেন, দুর্নীতির সাথে তারা আপোষ না করায় ওই পঞ্চায়েতে অনাস্থা এনেছিল তৃণমুল। এখন তারা নিজেদের দখলে নিয়ে নিজেদের মতো করেই দুর্নীতি করছে। ঘটনার পিছনে জেলা তৃণমূল সভাপতির যুক্ত থাকবার বিষয়ও উস্কেছেন তিনি।

 তোজাম্বেল সরকার ও ফরিদা বেগম নামে স্থানীয় বাসিন্দারা বলেন, একশো দিনের কাজ করেও দীর্ঘ সাত থেকে আট মাস ধরে কোন টাকাই পাচ্ছেন না তারা। প্রধান ও তার স্বামীকে কোনদিনই কাজ করতে দেখেননি তারা। চোরের দল এরা, সাধারণ মানুষের টাকা মেরে খাচ্ছে।

সমজিয়া গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধান রুনা লাইলা বেগম অবশ্য জানিয়েছেন, তারা কোনদিনই একশো দিনের কাজ করেননি। এটা কেউ মিথ্যে বদনাম রটানোর চেষ্টা করছে তাদের বিরুদ্ধে। 

জেলা তৃণমূল সভাপতি উজ্জ্বল বসাক কে টেলিফোনে বিষয়টি জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন, বিষয়টি তার জানা নেই। এব্যাপারে সম্পুর্ন খোজ নিয়েই তিনি জানাতে পারবেন।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here