মালদা:-আদিনা ডিয়ার ফরেস্টে শুরু হয়েছে বিদেশী পাখি শুমারির কাজ। প্রতিবছর বর্ষার মরশুমে প্রজনন ঘটিয়ে নভেম্বরের দিকে আদিনা ডিয়ার ফরেস্ট ছেড়ে চলে যায় বিদেশি পাখির দল। তার আগেই কি পরিমান পাখি এই ডিয়ার ফরেস্টে প্রতি বছর প্রজনন ঘটিয়ে নিজেদের সংখ্যা বৃদ্ধি করছে, তা জানতেই মালদার বনদপ্তরের উদ্যোগে শুরু হয়েছে পাখি শুমারির কাজ ।
বনদপ্তরের প্রাথমিক অনুমান গত বছরের থেকে এ বছর অনেক গুণ বেশি পরিযায়ী পাখির সংখ্যা বাড়তে পারে। এশিয়া ও ইউরোপের বিভিন্ন দেশ এবং সাইবেরিয়া থেকেও বিদেশি পাখির দল প্রতিবছরই বর্ষার মরশুমে মালদা আদিনা ডিয়ার ফরেস্টের পাখিরালয়ে এসে ভিড় করে। একটানা সাত মাস থাকার পর সেই পাখির দল প্রজনন ঘটিয়ে তারপরে শীত পড়তেই অন্যত্র চলে যায়।
মালদার বিভাগীয় বনাধিকারিক সিদ্ধার্থ বী. জানিয়েছেন, প্রতিবছরের মতো এবছরও পাখি শুমারির কাজ শুরু করা হয়েছে। গত বছর ৩২ থেকে ৩৫ হাজার পাখি আদিনা ডিয়ার ফরেস্টে বাসা বেঁধেছিল। এবারের সেই সংখ্যাটা আরো কয়েকগুণ বাড়তে পারে বলেই অনুমান করা হচ্ছে। কারণ এবছর অনুকূল আবহাওয়ার কারণে অসংখ্য বিদেশি পাখি আদিনা ডিয়ার ফরেস্টে পাখিরালয় এসেছে। যার মধ্যে নাইট হেরন , সাইবেরিয়ান বারড সহ বিভিন্ন প্রজাতির বিদেশি পাখি রয়েছে। এসব পাখি রক্ষণাবেক্ষণের ক্ষেত্রে সমস্ত রকম উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে বনদপ্তরের পক্ষ থেকে।
উল্লেখ্য, মালদার গাজোল ব্লকের পান্ডুয়া গ্রাম পঞ্চায়েতে রয়েছে প্রায় ১০০ একর জমির ওপর আদিনা ডিয়ার ফরেস্ট টি। যেখানে নীলগাই এবং ৭০টিরও বেশি নানান প্রজাতির হরিণ রয়েছে। এর পাশাপাশি আদিনা ডিয়ার ফরেস্টে বিশাল একটি এলাকা জুড়ে রয়েছে পাখিরালয়। যেখানে প্রতিবছর বিদেশি পাখির দল এসে বাসা বাঁধে এবং প্রজনন ঘটায়।
বনদপ্তর সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রতিবছর জুন মাসের দিকে বিদেশি পাখির দল আদিনা পাখিরালয়ে এসে বাসা বাঁধে। সেখানেই প্রজনন বৃদ্ধি করার পর ডিসেম্বর মাস পরতেই সেই পাখির দল আবার উড়ে যায়। এই ভাবেই প্রতিবছর বিদেশি পাখিদের আনাগোনা চলছে। তবে নিয়ম করে অক্টোবর মাস থেকেই আদিনা ডিয়ার ফরেস্টে শুরু হয় পাখি শুমারির কাজ। গত দুবছরের করোনা সংক্রমনের কারণে পাখির সংখ্যা ব্যাপক হারে বেড়েছিল। কারণ সেই সময় দূষণের মাত্রা প্রায় ছিল না বললেই চলে । তবে এবছর অনুমান করা হচ্ছে প্রায় ৫০ হাজারের কাছাকাছি বিদেশি পাখিরা এসে থাকতে পারে।
মালদার বনদপ্তরের বিভাগীয় আধিকারিক সিদ্ধার্থ বী. জানিয়েছেন, পাখি সুমারির কাজ শুরু হয়েছে। নভেম্বর মাসের মধ্যে আমরা সম্পূর্ণভাবে বিদেশি পাখিদের পরিসংখ্যান বিষদ তথ্য জানাতে পারবো। তবে এখনো পর্যন্ত অনুমান করা হচ্ছে প্রায় পঞ্চাশ হাজারের কাছাকাছি এ বছর বিদেশী পাখি এসে থাকতে পারে। পাখিরালয় নানান ধরনের পরিকাঠামো ইতিমধ্যে গড়ে তোলা হয়েছে। এছাড়াও পর্যটকদের সুবিধার্থে এখানে থাকা খাওয়ার ও সুব্যবস্থা করা হয়েছে।