অমানবিকতার নজির! হাসপাতালের সামনে রাতভর পড়ে থেকেই মৃত্যু দুর্ঘটনাগ্রস্থ ব্যক্তির, তদন্তের দাবি পরিবারের।
পিন্টু কুন্ডু, বালুরঘাট, ১২ অক্টোবর—— অমানবিকতার নজির। পথ দুর্ঘটনায় গুরুতর আহত ব্যক্তিকে হাসপাতালে ভর্তি না করিয়ে এমার্জেন্সির বাইরে ফেলেই চম্পট প্রত্যক্ষদর্শীদের। যদিও কিছুক্ষন পরে বিনা চিকিৎতেই মৃত্যু হয়েছে ওই রোগীর। হাসপাতাল সুত্রের খবর অনুযায়ী মৃত ওই ব্যক্তির নাম কালিপদ সিং(৬০)। বাড়ি দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার কুমারগঞ্জ ব্লকের তিলনা এলাকায়। এদিকে ওই ব্যক্তির মৃত্যুর খবর পেয়েই ঘটনাস্থলে আসে মৃতের পরিবারের সদস্যরা। পরিবারের লোকেদের অভিযোগ, মঙ্গলবার পতিরামে একটি পথ দুর্ঘটনা ঘটেছিল৷ সেখানেই গুরুতর জখম হয়েছিলেন কালিপদ সিং এবং টোটো চালক সিরাজুল মন্ডল। ঘটনায় গুরুতর জখম হয় আরো দু’জন। সিরাজুলকে বালুরঘাট জেলা হাসপাতাল ভর্তি করা হলেও হাসপাতালের এমার্জেন্সি বাইরেই মৃত অবস্থায় পাওয়া যায় কালীপদ সিংকে। সিরাজুল বর্তমানে আশঙ্কাজনক অবস্থায় চিকিৎসাধীন রয়েছেন শিলিগুড়িতে। মৃতর ব্যক্তির পরিবারের লোকেদের অভিযোগ দু’জনকে হাসপাতালে নিয়ে আসা হলেও একজনকে ভর্তি করানো হল আর একজন এমার্জেন্সির বাইরে কি করে পড়ে থাকল তা তারা বুঝে উঠতে পারছেন না। যদিও বিষয়টি খতিয়ে দেখার আশ্বাস দিয়েছে বালুরঘাট থানার পুলিশ৷ জানা যায়, বুধবার সকালে বালুরঘাট জেলা হাসপাতালের এমারজেন্সি গেটের সামনে এক অজ্ঞাত পরিচয় ব্যক্তির মৃতদেহ উদ্ধার হয়৷ এমারজেন্সি গেটের সামনে অসুস্থ অবস্থায় পড়ে থাকলেও কেউ তাকে চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে ভর্তি করান নি। এমারজেন্সি বিভাগের সামনে অসুস্থ অবস্থায় পড়ে থেকে মৃত্যু হবার পরেও কেন তা কতৃপক্ষের নজরে এল না তা নিয়েই উঠেছে প্রশ্ন। ঘটনা নিয়ে প্রশ্ন চিহ্ন তুলেছেন মৃতর পরিবারের লোকেরাও। দুর্ঘটনাগ্রস্থ ব্যক্তি কেন এমন অমানবিকতার শিকার হল তা নিয়ে অবাক হয়েছেন অনেকেই। মঙ্গলবার রাতে অন্যান্য রোগীর পরিজনদের পাশাপাশি হাসপাতালের এমারজেন্সি গেটের ঠিক সামনেই এক ব্যক্তি বসেছিলেন বলে জানিয়েছেন অনেকে। রাতভর ওই ভাবেই ছিলেন তিনি৷ এদিন ভোরে হঠাৎই তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন। যা অনেকের নজরে এসেছিল। তবে কেউ তাকে হাসপাতালে ভর্তি করায় নি। আর যার ফলে হাসপাতালের এমারজেন্সির সামনেই বিনা চিকিৎসায় মৃত্যু হয় অজ্ঞাত পরিচয় ওই ব্যক্তির৷ এদিন সকালে পুলিশ দেহটি উদ্ধার করতে গেলে নজরে আসে নাক মুখ দিয়ে রক্ত বেরিয়েছে। হাসপাতাল চত্বর এবং এমারজেন্সি গেটের সামনে এমন অমানবিক ঘটনা ঘটলেও এগিয়ে আসেনি কেউই৷
বালুরঘাট হাসপাতালে চিকিৎসা করতে আসা রোগীর আত্মীয় লিটন সরকার ও গীতা বিশ্বাস রা বলেন, সারা রাত ওই লোকটি এমারজেন্সির সামনে ছিল৷ অনেকেই দেখেছে তিনি অসুস্থ বোধ করছিলেন৷ পুলিশ, সিভিক সকলেই ছিল৷ কিন্তু কেউ দেখেও দেখেনি। যার ফলে এমারজেন্সির সামনেই মৃত্যু হয় তার৷
এবিষয়ে মৃতের আত্মীয় সাগরী সিং বলেন, আমার জামাইবাবু আত্মীয়ের বাড়িতে বেড়াতে গেছিল। রাতে টোটো করে ফিরছিল। কিন্তু কি হয়েছে জানিনা। তবে শুনেছি, দুর্ঘটনা ঘটেছে। তবে কে বা কারা হাসপাতালে ভর্তি না করে বাইরে রেখে চলে গিয়েছে তা জানিনা।
এবিষয়ে বালুরঘাট জেলা হাসপাতালের সুপার কৃষেন্দু বিকাশ বাগ বলেন, হাসপাতাল চত্বরে একটি মৃতদেহ উদ্ধার হয়েছে। পুলিসকে খবর দেওয়া হয়েছে। পুলিস পুরো ঘটনাটি খতিয়ে দেখছে।