মুখ্যমন্ত্রীর বিলি করা পাট্টাতেও মিলছে না জমি! একবছর ধরে প্রশাসনের দরজায় কড়া নাড়ছেন কুমারগঞ্জের এক অসহায় অন্ধ ভিক্ষুকের পরিবার।

0
229

মুখ্যমন্ত্রীর বিলি করা পাট্টাতেও মিলছে না জমি! একবছর ধরে প্রশাসনের দরজায় কড়া নাড়ছেন কুমারগঞ্জের এক অসহায় অন্ধ ভিক্ষুকের পরিবার। কারণ জানলে চমকে যাবেন আপনিও

পিন্টু কুন্ডু, বালুরঘাট, ৯ নভেম্বর ———– মুখ্যমন্ত্রীর বিলি করা পাট্টাতেও জমি মেলেনি এক অন্ধ ভিক্ষুকের পরিবারে। জমি ফিরে পেতে দীর্ঘ একবছর ধরে প্রশাসনের দ্বারে দ্বারে ঘুরে হয়রান হতদরিদ্র পরিবার। চাঞ্চল্যকর ঘটনাটি দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার কুমারগঞ্জ ব্লকের রামকৃষ্ণপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের চকগোপাল এলাকার। বাসিন্দাদের অভিযোগ, এলাকায় সার্ভে না করেই ঠান্ডা ঘরে বসে প্রশাসনের আধিকারিকরা ২৪ শতক জায়গার পাট্টা ওই দম্পতির হাতে তুলে দিয়েছে। যাকে ঘিরেই রীতিমতো বিবাদের সুত্রপাত হয়েছে ওই গ্রামে। এদিকে প্রায় একবছর আগে খোদ রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর হাত থেকে পাট্টা পেয়েও নিজের জমি বুঝে না পেয়ে কার্যত দিশেহারা হয়ে পড়েছেন ছায়রা বিবি ও তার অন্ধ স্বামী মানব মন্ডল। ঘটনা নিয়ে প্রশাসনের দ্বারস্থ হলেও আজো সুবিচার পাননি কুমারগঞ্জের অসহায় ওই হতদরিদ্র পরিবারটি।
জানা গেছে প্রায় একবছর আগে মালদার গাজোলের প্রশাসনিক সভা থেকে কুমারগঞ্জের চকগোপাল এলাকার বাসিন্দা ছায়রা বিবিকে ২৪ শতক জমির পাট্টা তুলে দিয়েছিলেন খোদ রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী। তারপর থেকে দীর্ঘ সময় পেরিয়ে গেছে, কিন্তু আজো পাট্টার জায়গা বুঝে পায়নি হতদরিদ্র ওই পরিবার। ঘটনা জানিয়ে পুলিশ থেকে বিডিও, বিএল আরও, এসডিও সকলেরই দ্বারস্থ হয়েছেন অন্ধ মানব মন্ডল ও তার স্ত্রী ছায়রা বিবি। কিন্তু আজো কাজের কাজ কিছুই হয়নি। উলটে এই ঘটনা নিয়ে প্রায় প্রতিমুহূর্তেই স্থানীয় বাসিন্দাদের একাংশের হুশিয়ারির মুখে পড়ছেন অসহায় ওই পরিবারটি। তাদের অভিযোগ, পাট্টার ২৪ শতক ওই জায়গার মধ্যে সরকারী রাস্তা, পানীয় জলের রিজার্ভার ও স্থানীয় একটি ক্লাবের ভবন রয়েছে। যেগুলি সরিয়ে কিভাবে ওই পাট্টার জমি বুঝিয়ে দেবেন তা নিয়েই পালটা প্রশাসনের দিকে আঙুল তুলেছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। তাদের আরো অভিযোগ, পুরো বিষয়টি সার্ভে না করে ঠান্ডা ঘরে বসেই প্রশাসনিক আধিকারিকরা একাজ করেছেন। আর যাকে ঘিরেই রীতিমতো বিবাদের সুত্রপাত হয়েছে এলাকায়। যদিও বিষয়টি খতিয়ে দেখে সমাধানের আশ্বাস দিয়েছেন দক্ষিণ দিনাজপুরের জেলাশাসক বিজিন কৃষ্ণা।

অন্ধ মানব মন্ডল ও তার স্ত্রী ছায়রা বিবি বলেন, মুখ্যমন্ত্রীর হাত থেকে তারা ২৪ শতক জায়গার পাট্টা পেয়েছেন। কিন্তু তাদের দখল নিতে দিচ্ছে না স্থানীয় কিছু বাসিন্দারা। উলটে বিভিন্ন সময় হুশিয়ারির মুখে পড়তে হচ্ছে তাদের। পুলিশ বা প্রশাসনকে জানিয়েও কোন লাভ হয়নি। তারা চান তাদের পাট্টার জমি বুঝিয়ে দেওয়া হোক।

প্রতিবেশী বকুল মন্ডল ও হাবিবুর মন্ডল রা বলেন, ৩৪ শতক রায়তি জায়গার মধ্যে ১৯৮৩ সালে ২৪ শতক জায়গা ভেস্ট হয়ে যায়। যে জায়গার মধ্যে সরকারি রাস্তা, জলের রিজার্ভার ও এলাকার একমাত্র ক্লাবের ভবন রয়েছে। এলাকায় কোন প্রকার সার্ভে না করেই ওই ২৪ শতক জায়গার পাট্টা প্রশাসনিক আধিকারিকেরা দিয়ে দেওয়ায় এমন ঝামেলার সুত্রপাত। এলাকায় এসে আলোচনার মাধ্যমে মেটানো হোক এসব ঝামেলা।

জেলাশাসক বিজিন কৃষ্ণা বলেন, সংবাদমাধ্যমের কাছ থেকেই বিষয়টি জেনেছেন তিনি। সমস্যাটি মেটানো সম্ভব। বিএল আরও এর সাথে বলে সার্ভে টিম পাঠিয়ে সমস্যাটি মেটানোর উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here