প্রেমিক যুগলের ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার কে ঘিরে চাঞ্চল্য বালুরঘাটের কৃষ্ণনগরে। খুন না আত্মহত্যা? তদন্তে পুলিশ
পিন্টু কুন্ডু, বালুরঘাট, ২৬ নভেম্বর: প্রেমিক যুগলের ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার কে ঘিরে চাঞ্চল্য। রবিবার চাঞ্চল্যকর ঘটনাটি ঘটেছে বালুরঘাট ব্লকের জলঘর গ্রাম পঞ্চায়েতের কৃষ্ণনগর এলাকায়। পুলিশ জানিয়েছে মৃতদের একজন সবিতা হেমব্রম(২৮), এবং অপরজন তরুণ বর্মন(৩২)। দুজনের বাড়ি জলঘর এলাকাতে। এদিন সকালে কৃষ্ণনগর এলাকার একটি সেতুর পাশে ওই প্রেমিক যুগলকে ঝুলন্ত অবস্থায় দেখতে পায় স্থানীয়রা। যে ঘটনার খবর পেয়েই এলাকায় পৌছে মৃতদেহ দুটি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য জেলা হাসপাতালে পাঠায় বালুরঘাট থানার পুলিশ। তবে প্রাথমিক তদন্তে পুলিশের অনুমান, শনিবার রাতেই ওই প্রেমিক যুগল একসঙ্গে আত্মঘাতী হয়েছে।
জানা যায়, মৃত সবিতা হেমব্রমের বাড়িতে তার স্বামী ছাড়াও পরিবারে আরো দুই সন্তান রয়েছে। স্বামী বিনয় মার্ডি ভ্যান চালিয়ে অতিকষ্টেই সংসার অতিবাহিত করেন। মেয়ে পঞ্চম শ্রেণীতে পড়লেও ছেলে চতুর্থ শ্রেণীতে পড়াশুনা করে। অন্যদিকে, জলঘরের বাসিন্দা তথা মৃত যুবক তরুন বর্মন কৃষি কাজের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। বাড়িতে মা, বাবা ও ভাই রয়েছে তার। এদিন সাতসকালে ওই প্রেমিক যুগলের এমন আত্মঘাতী হওয়ার খবরে শোকস্তব্ধ হয়ে পড়ে পরিবার সহ গোটা এলাকা। দুই পরিবারেরই অনুমান, মৃত দুইজন একে অপরের সাথে প্রেমের সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েছিলেন। তবে কতদিন আগে থেকে তাদের এই প্রেমের সম্পর্ক তা ঠিক জানেন না কেউই। তবে পরিবারের লোকেদের দাবি, বৃহস্পতিবার বিকেলে মৃত সবিতা বাবার বাড়ি বটুনের আজইর গ্রামে যাওয়ার কথা বলেই বাড়ি থেকে বেরিয়েছিলেন। সেখানে না গিয়ে শুক্রবার সন্ধ্যায় সে ফের শ্বশুরবাড়িতেই ফিরে এসেছিলেন। সেদিন রাতেই আবারও পরিবারের কাউকে না জানিয়েই বাড়ি থেকে বের হয়ে গিয়েছিলেন তিনি। অনেক খোঁজাখুঁজির পরেও তাকে পাননি পরিবারের লোকেরা। অবশেষে রবিবার সকালে তার ঝুলন্ত মৃতদেহ উদ্ধার হয়। তার পাশেই উদ্ধার হয় মৃত যুবকের দেহও। তিনিও দুদিন ধরে বাড়ি ছেড়ে বালুরঘাটে এক মামার বাড়িতে যাবার কথা বলে বের হয়েছিলেন । স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, এর আগেও ওই প্রেমিক যুগল কীটনাশক পান করে আত্মহত্যা করার চেষ্টা করেছিল। কিন্তু তাতে সফল হননি তারা। তাই এবারে বাড়ি থেকে প্রায় এক কিলোমিটার দূরে একসঙ্গে আত্মহত্যার পথ বেছে নিয়েছিল তারা।
মৃত সবিতার দেওর বিজয় মার্ডি বলেন, ‘তাদের মধ্যে কতদিন ধরে প্রেমের সম্পর্ক ছিল তা আমাদের জানা নেই। এদিন সকালে দুজনের ঝুলন্ত মৃতদেহ উদ্ধার নিয়ে যথেষ্টই চমকে গিয়েছেন তারা।
মৃত যুবকের মামা বচ্চন বর্মন জানান, ‘ভাগ্নে অবিবাহিত ছিল। তারা দুজনে একসঙ্গে আত্মহত্যা করেছে মানে দুজনের মধ্যে সম্পর্ক ছিল। শনিবার রাতে আমাদের ওখানে গিয়ে মোটরসাইকেল, ব্যাগ সমস্ত রেখে বালাপুরে পিসির বাড়ি টোটো করে যাওয়ার কথা বলে বেরিয়ে যায়। রবিবার সকালে মৃত্যুর ঘটনা জানতে পারি।’
বালুরঘাট থানার আইসি শান্তিনাথ পাঁজা জানান, ‘একটি অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা রুজু করে ঘটনার তদন্তে নামা হয়েছে।
