প্রযুক্তিগত শিক্ষার মাধ্যমে ছাত্র-ছাত্রীদের শিক্ষাদান শুরু করলেন বিদ্যালয়ের শিক্ষক শিক্ষিকারা।

0
2277

গঙ্গারামপুর ব্লকের সীমান্তবর্তী এলাকার থেকে এক কিলোমিটার দূরে সিংফড়কা প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রযুক্তিগত শিক্ষার মাধ্যমে ব্লকের মধ্যে প্রথম শিক্ষা ব্যবস্থা চালু করল স্কুলের শিক্ষকেরা,শিক্ষকদের উদ্যোগকে সকলেই সাধুবাদ জানিয়েছেন শীতল চক্রবর্তী গঙ্গারামপুর ২০ ডিসেম্বর দক্ষিণ দিনাজপুর। ব্লকের মধ্যে প্রথম প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রযুক্তিগত শিক্ষার মাধ্যমে ছাত্র-ছাত্রীদের শিক্ষাদান দেওয়া শুরু করলেন স্কুলের শিক্ষক শিক্ষিকারা। দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার গঙ্গারামপুর ব্লকের সুকদেবপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের সীমান্তবর্তী এলাকা থেকে এক কিলোমিটার দূরে সিংফড়কা প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ঘটনা। স্কুলেই এমন শিক্ষাব্যবস্থার সূচনা করে অভিভাবক ও ছাত্র ছাত্রীরা প্রথম দিনেই এমন পদ্ধতিতে শিক্ষা নেবার উৎসাহ ছিল চোখে পড়ার মতো। ছাত্র-ছাত্রী থেকে অভিভাবক ও স্কুলের প্রধান শিক্ষক ,স্থানীয়, পঞ্চায়েতের প্রধান বিষয়টি নিয়ে শিক্ষকদের এই উদ্যোগে প্রশংসা জানিয়েছেন। শিক্ষকেরাও খুশি অভিভাবক থেকে শুরু করে সকলের প্রশংসা পেয়ে এমন শিক্ষাব্যবস্থা চালু করতে পারায়। গঙ্গারামপুর ব্লকের সুকদেবপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের কাঁটাতোর সীমান্তবর্তী এলাকা থেকে এক কিলোমিটার দূরে সিংফড়কা প্রাথমিক বিদ্যালয় নামে স্কুলটি গড়ে উঠেছে। পশ্চিম দিনাজপুর জেলা থাকাকালীন ১৯৪৮সালে এই স্কুলটি গড়ে ওঠে। স্কুল সূত্রে জানা গেছে, এলাকার স্থানীয় এক বাসিন্দা দ্বিজেন হাজদা নিজে উদ্যোগ নিয়ে ৩৭শতকের জায়গা নিয়ে একটি সিংফড়কা এলাকাতে স্কুলটি তৈরি করেছিলেন। এলাকার আশপাশে তপশিলি উপজাতি ও তপশিলি জাতি দুস্থ পরিবারের মানুষজনদের বসবাস। সেখানে সিংফড়কা , হরিতলা ডারাপাড়া ,ভান্ডার পাড়া, মল্লিকপুর, ভ্যানতারা এলাকা সহ আশপাশের বেশ কয়েকটি গ্রামের তপশিলি উপজাতি আদিবাসী ও তপশিলি জাতি রাজবংশী সম্প্রদায় মানুষজনদের দিনমজুর, কৃষক পরিবারের ছেলে মেয়েরা সেখানে পড়াশোনা করে থাকেন। স্কুলের পরিকাঠা মের দিকটা লক্ষ্য রেখে ইতিমধ্যেই রাজ্য সরকারের তরফে চতুর্থ শ্রেণী থেকে পঞ্চম শ্রেণী পর্যন্ত স্কুলটি শিক্ষাদানের মান্যতা বাড়িয়েছেন। এর ফলে অনেক অর্থেই উপকৃত হয়েছেন আশপাশের বহুগ্রামের ছাত্র-ছাত্রী ও তাদের অভিভাবকেরা। বর্তমানে ১৮৫ জন ছাত্র-ছাত্রী সেই স্কুলে প্রথম শ্রেণী থেকে পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত পড়াশোনা করে থাকেন। ৬জন শিক্ষক শিক্ষিকা রয়েছে। স্থানীয় এক আদিবাসী ঘরের যুবক বিনা পারিশ্রমিকে আদিবাসী শিক্ষাদান করেন বেশ কয়েক বছর ধরে স্কুলের ছাত্র-ছাত্রীদের। স্কুলের প্রধান শিক্ষক রয়েছেন ২০১২সালের পর থেকে ননীগোপাল ঘোষ নামে সকলের কাছে প্রশংসা হওয়ার শিক্ষকটি। স্কুল সূত্রে জানা গেছে রাজ্য সরকারের তরফে ২০১৩ ও ১৫ সালে সর্বশিক্ষা মিশরের তরফে স্কুলের যেমন বিল্ডিং তৈরি হয়েছে, তেমনি স্কুলে হয়েছে কিচেন সেট, বিরাট শাকসবজির বাগান, মিড ডে মিলের রান্না করার জায়গা, তৈরি হয়েছে খেলাধুলা করার মত বিভিন্ন পরিকাঠামাগুলিও। স্কুলে তৈরি হওয়া সবজি দিয়ে মিডডে মিলের খাবার পরিবেশন বেশিরভাগ সময় করে থাকেন শিক্ষক শিক্ষকেরা। স্কুল সূত্রের খবর 2017 সালে স্কুলের পরিকাঠামোর দিকে রাজ্য সরকারের তরফে নির্মল বিদ্যালয় পুরস্কার,২০১৭ সালে গঙ্গারামপুরের মহকুমা শাসকের কাছ থেকে মিডডে মিলে ভালো পরিষেবা দেওয়ার জন্য পুরস্কার পাওয়া, এবং কল্যাণী রায় নামে এক স্কুলের ছাত্রী ১০০ মিটার দৌড়ে স্কুলে রাজ্যস্তরের খেলায় অংশগ্রহণ করে স্কুলের মান বাড়িয়েছিল। বর্তমানে স্কুলের শৌচাগারটি বেহাল অবস্থা হবার কারণে, স্থানীয় সুকদেবপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধানকে সেখানে পেয়ে স্কুলের প্রধান শিক্ষক দাবি করেন মডেল একটি সুলভ শৌচাগার সেখান3 তৈরি করার।গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধানও তা করে দেবেন বলে আশ্বাসদেন শিক্ষকদের। গঙ্গারামপুর স্কুলের এসআই দপ্তর সূত্রে খবর, গঙ্গারামপুর ব্লকের মধ্যে সিংফড়কা প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রযুক্তিগত শিক্ষার মাধ্যমে স্কুলের শিক্ষাদান শুরু করা হয়েছে। যা স্কুলের শিক্ষক শিক্ষিকা ও অভিভাবকদের সহযোগিতায় এমন উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। স্কুলের প্রধান শিক্ষক ননীগোপাল ঘোষ জানিয়েছেন, সকলে সহযোগিতা নিয়েই এমন শিক্ষা ব্যবস্থা চালু করা হয়েছে স্কুলে। একটি শৌচাগারের দাবি করা হয়েছিল প্রধানের কাছে তিনি আশ্বাস দিয়েছেন করে দেবেন। আশা রাখছি আগামী দিনে ছাত্র-ছাত্রীদের স্বার্থে কাজ করে যাব। স্কুলের শিক্ষক ও অভিভাবকদের সহযোগিতায় এই পঠন-পাঠন করতে গিয়ে যে জিনিসগুলো দরকার সেগুলো করা হয়েছে।। সুকদেবপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান জানিয়েছেন, স্কুলের এই উদ্যোগ দেখে খুব ভালো লাগলো। ধন্যবাদ জানাই শিক্ষক-শিক্ষিকাদের। আমার কাছে তারা যে দাবি করেছে সেটা খুব তাড়াতাড়ি পূরণ করে দেওয়া হবে। স্কুলের দুই অভিভাবক জানিয়েছেন, এমন শিক্ষা ব্যবস্থা চালু করায় ধন্যবাদ জানাই শিক্ষক-শিক্ষিকাদের। আমাদের ঘরে ছেলেমেয়েরা আর উন্নত শিক্ষা লাভ করবে এতে ভালো লাগছে। শিক্ষকদের পাশে রয়েছি আমরা সবসময় আর থাকব সব সময় । এমন শিক্ষা লাভ করার পরে স্কুলের দুই ছাত্র জানিয়েছেন, এমন পদ্ধতিতে শিক্ষালাভ করার ফলে আগামীতে আমাদের ভবিষ্যত আরো ভালো হবে। ধন্যবাদ জানাই শিক্ষক-শিক্ষিকাদের। অবশেষে স্কুল ছুটি হতেই ছাত্র-ছাত্রীরা তাদের প্রিয় শিক্ষক-শিক্ষিকাদের যেমন পায়ে হাত দিয়ে প্রণাম করে বাড়িতে যান, তেমনি কোন অভিভাবক তাদের স্কুলে আসলেও ছুটির সময় তাকে প্রণাম সেরেই বাড়ি যাওয়ার এই ঘটনা ছাত্র-ছাত্রীদের এক অন্য মাত্রা দিল বলে মনে করছে সকলেই ।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here