অনুন্নয়ন নিয়ে সুকান্তর বিরুদ্ধে পোস্টার পড়লো আদিবাসী গ্রামে! ঝাঁটা উঁচিয়ে বিক্ষোভ মহিলাদের। তুমুল হইচই বালুরঘাটের চকমাধব গ্রামে
পিন্টু কুন্ডু, বালুরঘাট, ১ এপ্রিল —— নিজের খাস তালুকে সুকান্তকে ঝেটিয়ে বিদায় করার ডাক মহিলাদের। পোস্টার ঝুলল গ্রামে। ঘটনাকে ঘিরে তুমুল উত্তেজনা বালুরঘাটের অমৃতখন্ড গ্রাম পঞ্চায়েতের চকমাধব গ্রামে। জানা গেছে, অমৃতখন্ড গ্রাম পঞ্চায়েতের অন্তর্গত কামারপাড়া থেকে কুতুবপুর পর্যন্ত প্রায় দুকিলোমিটার বেহাল রাস্তা রয়েছে। যার জেরে শুধুমাত্র বর্ষাকালই নয়, সারাবছরই চরম দুর্ভোগে পড়েন কুতুবপুর ও চকমাধব গ্রামের প্রায় তিন হাজার গ্রামবাসী। রাস্তা নিয়ে এমন নরকযন্ত্রণা এক বছর বা দুবছরের নয়, বেহাল রাস্তার প্রতিবাদে ২০১৬ সালে ভোট বয়কট করেছিলেন ওই গ্রামের বাসিন্দারা। এরপর ২০১৮ এর পঞ্চায়েত নির্বাচনও বয়কট করেছিলেন গ্রামবাসীরা। তাদের দাবি একটাই, আগে রাস্তা পরে ভোট। যানিয়েই গ্রামবাসীদের ভোট বয়কটের সিদ্ধান্ত ২০১৯ এর লোকসভা নির্বাচনেও অনড় ছিল। সেবছর রাস্তা কেটে দিয়ে কেন্দ্রীয় বাহিনীকে ঢুকতেও বাধা দিয়েছিল ওই গ্রামের বাসিন্দারা। কিন্তু সেসময় ওই এলাকায় গিয়ে গ্রামবাসীদের আশ্বস্থ করেছিলেন সুকান্ত। গ্রামবাসীদের দাবি সুকান্ত বাবু তাদের বলেছিলেন, তাকে ভোট দিয়ে জেতালে সাংসদ তহবিলের প্রথম বরাদ্দকৃত অর্থ দিয়ে ওই গ্রামের রাস্তা তৈরি করবেন তিনি। এরপর সাংসদও হয়েছেন সুকান্তবাবু, কেটে গেছে পাচটি বছরও। কিন্তু সাংসদের টিকি আজও দেখতে পাননি গ্রামের লোকেরা। এদিকে গ্রামবাসীদের দাবি মেনে ওই এলাকায় এন আর জিএস প্রকল্পের মাধ্যমে প্রায় এক কিলোমিটার রাস্তা তৈরির উদ্যোগ নিয়েছিল স্থানীয় ব্লক প্রশাসন। কিন্তু এম জি এন আর জিএস প্রকল্পের টাকা আটকে যাওয়ায় সেই রাস্তার কাজও বন্ধ হয়ে গেছে। আর এতেই ক্ষোভে ফুসে উঠেছেন গ্রামের পুরুষ-মহিলারা। তাদের অভিযোগ, মিডিয়ার সামনে দাঁড়িয়ে পাচ বছর আগে সুকান্ত বাবু রাস্তা তৈরি করবার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। কিন্তু কাজের কাজ কিছুই হয়নি। আর তাই এবার তিনি গ্রামে এলে ঝেটিয়ে বিদায় করবেন তারা।
গ্রামবাসী সুমি মার্ডি, কবিতা হাসদা ও পোকা হাসদারা বলেন, বেহাল রাস্তার যন্ত্রণা তাদের দীর্ঘবছরের। বেশ কয়েকবার ভোট বয়কটও করেছিলেন তারা। কিন্তু ২০১৯ সালে সুকান্ত মজুমদার এসে তাদের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন সাংসদ হলে তার তহবিলের প্রথম টাকা দিয়ে এই এলাকার মানুষের জন্য রাস্তা তৈরি করবেন তিনি। কিন্তু সংসদ হবার ৫ বছরেও এই এলাকাতে পা দেননি তিনি। তাই এবার ভোট চাইতে গ্রামে এলে সুকান্তকে ঝেটিয়ে বিদায় করবেন গ্রাম থেকে।
তৃণমূল প্রার্থী বিপ্লব মিত্র বলেন, প্রতিশ্রুতির পরে কাজ না হলে মহিলাদের এমন বিক্ষোভের ঘটনা খুব স্বাভাবিক ব্যাপার। সুকান্ত বাবু সাংসদ হবার পরে পাচ বছরে বালুরঘাট লোকসভার অধীনে একটি রাস্তাও তৈরি করতে পারেনি বলেও জানিয়েছেন তিনি।
এদিকে এই ঘটনা নিয়ে বিজেপি নেতা বাপি সরকার বলেন, সাধারণ মানুষরা নয় ওই গ্রামে তৃণমূলের কিছু দালালরা এই ঘটনা ঘটিয়েছে।