ভোটের কয়েকদিন আগে দিনের আলোতে সীমান্তে এলোপাথাড়ি গুলি বিএসএফের। গঙ্গারামপুরের দোমুঠা ফরিয়াদপুর ল মন্ডলপাড়ায় গুলিবিদ্ধ এক, আহত আরো এক। মুখ্যমন্ত্রীর আশঙ্কায় কি তাহলে সঠিক হলো প্রশ্ন বিভিন্ন মহলে? যদিও বিএসএফের দাবি পাচার রুখতেই এমন পদক্ষেপ, তদন্তে পুলিশ।
গঙ্গারামপুর ১৯ এপ্রিল…... লোকসভা ভোটের মাত্র কয়েকদিন আগে দিনের আলোতে সীমান্তবর্তী এলাকায় এলোপাথাড়ি গুলি চালানো অভিযোগ বিএসএফের বিরুদ্ধে। ঘটনায় গুলিবিদ্ধ হয়েছে এক গ্রামবাসী। যাকে বাচাতে গিয়ে নিরীহ বিএসএফের ব্যাপক মারধরের শিকার হয়েছে আরো এক নিরীহ গ্রামবাসী। বর্তমানে দুজনইকেই আশঙ্কাজনক অবস্থায় প্রথমে গঙ্গারামপুর ও পরে মালদা মেডিকেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।শুক্রবার দুপুরে ঘটনাটি ঘটেছে দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার গঙ্গারামপুর ব্লকের দুমুটা ফরিয়াদপুর সীমান্তবর্তী এলাকার মন্ডলপাড়া গ্রামের। ভোটের মুখে বিএসএফ এমনটাই করবে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী বিভিন্ন সভায় বিএসএফের কার্যকলাপ নিয়ে মুখ খুলেছিলেন। তার আশঙ্কায় কি এবারে সত্যি হলো প্রশ্ন বিভিন্ন মহলে? যদিও বিএসএফের দাবি,পাচার করার জন্যই ওই দুজন জড়ো হয়েছিল সীমন্তবর্তি এলাকায়, যে পাচার রুখতেই এমন ঘটনা। এদিকে এই ঘটনার খবর পেতেই সেখানে ছুটে আসে গঙ্গারামপুর থানার পুলিশ।পুরো ঘটনায় ব্যাপক শোরগোল পড়েছে এলাকাজুড়ে।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে গঙ্গারামপুর ব্লকের দুমুটা ফরিয়াদপুর সীমান্তবর্তী এলাকার মন্ডলপাড়া গ্রামে এদিন দুপুরে নুর সালাম নামে (২৮) বছরের ওই যুবক বিশেষ প্রয়োজনে সীমান্তবর্তী এলাকায় গিয়েছিল। অভিযোগ,সেই সময় সীমান্তবর্তী এলাকায় পাহারারত বিএসএফ জওয়ান তাকে ধরে ফেলে ব্যাপক মারধর করে মাথা ফাটিয়ে দেয় বলে অভিযোগ। সেই ঘটনা দেখতে পেয়ে উক্ত সীমান্তবর্তী মন্ডলপাড়া এলাকার আরো এক বাসিন্দা যুবক ইসরাফিল আলী বয়স (২৯) তাকে বাঁচাতে গেলে, এলোপাথাড়ি গুলি চালায় বিএসএফ বলে অভিযোগ। কোমরে গুলি লেগে সেখানেই রক্তাক্ত অবস্থায় লুটিয়ে পড়ে সে। যে ঘটনায় দুজনেই গুরুতর ভাবে আহত হয়।বিএসএফের তরফে ওই দুজনকেই উদ্ধার করে প্রথমে গঙ্গারামপুর মহকুমা হাসপাতালে পরে মালদা মেডিকেলে আশঙ্কাজনক অবস্থায় ভর্তি করা হয়। এদিকে এই ঘটনাকে ঘিরে সীমান্ত এলাকায় তুমুল উত্তেজনাকর পরিস্থিতি তৈরি হতেই বিএসএফের তরফে গঙ্গারামপুর থানার পুলিশকে খবর দেওয়া হয়। বিএসএফের দাবি, দিন দুপুরে ওই দুই যুবক সীমান্তবর্তী এলাকায় বাংলাদেশের নিষিদ্ধ জিনিসপত্র বিলি করা কাজের জন্য জড়ো হয়েছিল।ঘটনা দেখতে পেয়েই নুর সালাম ও ইসরাফিল আলী নামে দুই যুবককে সেখানে থামতে বলে। বিএসএফের দাবি,তারা দুজন সীমান্তবর্তী এলাকা থেকে পালিয়ে যেতে লাগলে নূর সালামকে বিএসএফ ধরে ফেলে। অপরজন ইসরাফিল আলী পালিয়ে যাবার চেষ্টা করলে তাকে লক্ষ্য করে বেশ কয়েক রাউন্ড গুলি চালায়। যে গুলিই কোমরে লেগে গুরুতর আহত হয় ওই যুবক। এরপরেই ঘটনায় আহত দুজনকে তড়িঘড়ি বিএসএফ উদ্ধার করে হাসপাতাল ভর্তি করে।খবর দেওয়া হয় গঙ্গারামপুর থানার পুলিশকে।তারাও এসে পুরো ঘটনার তদন্ত শুরু করে। আক্রান্তের এক আত্মীয় বিএসএফের বিরুদ্ধে অভিযোগ করে বলেন, বিএসএফ আসল অপরাধীকে গ্রেফতার করতে পারছে না, অথচ নিরীহ গ্রামবাসীদের সীমান্তবর্তী এলাকায় মারধর করছে দিনে দুপুরে এলোপাথাড়ি গুলি চালাচ্ছে। ঘটনা ধামাচাপা দিতে পাচারের গল্প বলছে তারা। পুলিশ তদন্ত করলেই সব প্রমাণ হয়ে যাবে। রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এর আগে বিভিন্ন সভাতে জানিয়েছিল, ভোট আসলেই সীমান্তবর্তী এলাকায় নিরীহ গ্রামবাসীদের উপরে বিএসএফ অত্যাচার করে। যা নিয়ে বিএসএফের বিরুদ্ধে সরব হয়েছিলেন খোদ মুখ্যমন্ত্রীও। নির্বাচনের মাত্র কয়েকদিন আগে সীমান্ত এলাকায় প্রকাশ্য দিবালোকে এমন এলোপাথাড়ি গুলি চালানোর বিষয় কি তাহলে মুখ্যমন্ত্রীর আশঙ্কাকেই সত্য প্রমাণিত করলো? এই প্রশ্নও এখন জোড়ালো হয়ে উঠেছে গোটা দক্ষিন দিনাজপুরে। গঙ্গারামপুর থানার পুলিশ জানিয়েছে, পুরো ঘটনা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।