নিজের প্রতিবন্ধকতাকে হারিয়ে উচ্চমাধ্যমিকে ৪৮২ পেয়ে স্কুলের সেরা হয়ে ” স্টুডেন্ট অফ দ্যা ইয়ার ” বালুরঘাটের জয়দীপ সামন্ত

0
162

নিজের প্রতিবন্ধকতাকে হারিয়ে উচ্চমাধ্যমিকে ৪৮২ পেয়ে স্কুলের সেরা হয়ে ” স্টুডেন্ট অফ দ্যা ইয়ার ” বালুরঘাটের জয়দীপ সামন্ত তার লড়াইয়ের কাহিনী সিনেমার চিত্রনাট্যকেও হার মানিয়ে দেবে। বিরল দুরারোগ্য এনকোলাইটিস স্পন্ডেলাইটিসের সাথে লড়াই করে উচ্চমাধ্যমিকে চোখ ধাঁধানো সাফল্য বালুরঘাট উচ্চ বিদ্যালয়ের বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন ছাত্র জয়দীপ সামন্তের। জয়দীপ এ বছর উচ্চমাধ্যমিকে ৪৮২ নম্বর পেয়ে সকলকে তাক লাগিয়ে দিয়েছে। জয়দীপের এই নম্বর তার স্কুলের মধ্যে সেরা। এনকোলাইটিস স্পন্ডেলাইটিসের কারনে জয়দীপের মেরুদন্ড বেঁকে তাকে কুজো বানিয়ে দিয়েছে। যে কারণে তার এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় যেতে আসতেও অন্যের সাহায্য নিতে হয়। উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার টেস্ট এর ঠিক আগের মুহূর্তে এই রোগের কারণেই জয়দীপকে সজ্জাশায়ী হয়ে থাকতে হয়েছিল বেশ কিছুদিন। সেই বাঁধাকে কাটিয়েও জয়দীপের এই অভাবনীয় ফল অন্যদের অনুপ্রেরণা জাগাতে বাধ্য। এবছর জয়দীপ বাংলা ৯৫, ইংরেজি ৯৭,ইতিহাস ৯৩,ভূগোল ৯৮,রাষ্ট্রবিজ্ঞান ৯৭,দর্শন ৯৫ পেয়েছে। যদিও জয়দীপ তার ফল নিয়ে কিছুটা আক্ষেপ করেছে। তার পছন্দের বিষয় ইতিহাসে সে আরও বেশি নাম্বার পাবে বলে আশা প্রকাশ করেছে জয়দীপ। জয়দীপ জানিয়েছে তার পরীক্ষার প্রস্তুতির জন্য তিন থেকে চার ঘণ্টা পড়তো। টেস্ট পরীক্ষার পরে সেই সময়টা ৮ থেকে ৯ ঘন্টায় বাড়িয়ে নিয়েছিল। জয়দীপ বড় হয়ে UPSC দিয়ে IAS হতে চায়। যার জন্য সে এখন থেকেই প্রস্তুতি নিতে শুরু করেছে বলে জয়দীপ জানিয়েছে। আগামী দিনের জয়দীপ বেলুড় মঠ কিংবা নরেন্দ্রপুর রামকৃষ্ণ মিশনের ইতিহাস অনার্স নিয়ে পড়তে চায়। পড়াশোনা ছাড়াও জয়দীপ কুইজ খেলতে ভালবাসে। জয়দীপ এর বাবা অসিত কুমার সামন্ত অবসরপ্রাপ্ত সরকারি কর্মী মা অঞ্জনা সামন্ত গৃহবধূ। জয়দীপের বাবা অসিত বাবুর কথায় জয়দীপের এই রোগটি জিনগত সমস্যার কারণে হয়েছে। জয়দীপের স্কুল বালুরঘাট উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সৃজিত সাহার কথায় পরীক্ষার সময় জয়দীপ এমনই অসুস্থ হয়ে পড়েছিল সে তার বাঁ হাত দিয়ে ডান হাতকে ধরে অতি কষ্টে পরীক্ষা দিয়েছে। এমনকি একসময় এমনও এসেছিল যে জয়দীপ বিছানাতে শুয়ে ও পরীক্ষা দিতে পারবে কিনা সেই নিয়ে সংশয় তৈরি হয়েছিল।জয়দীপ অন্য কারো সাহায্য ছাড়াই নিজেই নিজের পরীক্ষা দিয়ে এই সাফল্য পেয়েছে। জয়দীপের এই সাফল্য অন্যদের অনুপ্রাণিত করবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন সৃজিত বাবু।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here