সরকারি সম্পত্তি চুরির ছয় মাস পরেও অধরা সৌমেন সরকার! বালুরঘাটে কাট মানির অভিযোগ তোলা ঠিকাদারের বিরুদ্ধেই কোটি টাকার মানহানির মামলা চেয়ারম্যানের
পিন্টু কুন্ডু, বালুরঘাট, ২১ জুন ———- সরকারী সম্পত্তি চুরির ছমাস পরেও অধরা ঠিকাদার! বালুরঘাটে কাটমানির অভিযোগ আনা সৌমেন সরকারের বিরুদ্ধে এবারে কোটি টাকার মানহানির মামলা পুরসভার চেয়ারম্যানের। ঘটনাকে ঘিরে হুলুস্থুল কান্ড বালুরঘাট শহরে। এদিকে সরকারী সম্পত্তি চুরির দায়ে অভিযুক্ত সৌমেন সরকারের বিরুদ্ধে জামিন অযোগ্য ধারায় মামলা রজুর ছমাস পরেও কেন গ্রেফতার হননি, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন খোদ বিদ্যুৎ দপ্তরের আধিকারিকরা।
প্রসঙ্গত, সৌমেন সরকার নামে এক ঠিকাদারের সাথে বেশকিছুদিন আগে বালুরঘাট পুরসভা শহরের ২৫টি ওয়ার্ডে পথবাতি পরিষেবার জন্য চুক্তিবদ্ধ হয়। সেই অনুযায়ী প্রতিদিন ওই সংস্থার মোট ১২ জন কর্মী শহর জুড়ে পথবাতি জ্বালানো ও নেভানোর কাজ করে । পুর কতৃপক্ষের দাবি সঠিক সময়ে শহরজুড়ে পথবাতিগুলি পরিচালনার জন্য কাজে নিযুক্ত ওই ঠিকাদার সংস্থাকে অনেক আগে থেকেই টাইমার বসানোর কথা বলে আসছিলেন তারা। কিন্তু ওই ঠিকাদার সংস্থার কর্নধার সৌমেন সরকার তা না বসিয়ে বেশকিছুদিন ধরেই গড়িমসি করছিলেন। যা নিয়ে পুরসভার তরফে বেশ কয়েকবার চিঠি দিলেও উদাসীন থেকেছেন ওই সংস্থার কর্নধার সৌমেন সরকার বলেও অভিযোগ। আর এনিয়ে বালুরঘাট পুরসভা কতৃপক্ষ কড়া পদক্ষেপ গ্রহণ করতেই কাটমানি দেবার অভিযোগ সামনে আনেন সৌমেন সরকার। তার অভিযোগ, একাজের জন্য তাকে দশ লক্ষ টাকা কাটমানি দিতে হয়েছে। পুর কতৃপক্ষের বিরুদ্ধে তোলা এমন মারাত্মক অভিযোগ সামনে আসতেই ঠিকাদার সৌমেন সরকারের বিরুদ্ধে কোটি টাকার মানহানির মামলা করেন বালুরঘাট পুরসভার চেয়ারম্যান অশোক মিত্র। যা নিয়েই রীতিমতো অস্বস্তিতে পড়েছেন ওই ঠিকাদার সংস্থার কর্ণধার সৌমেন সরকার। শুধু তাই নয়, সৌমেন সরকার নামে বিদ্যুৎ দপ্তরের ওই ঠিকাদারের বিরুদ্ধে সামনে এসেছে ছমাস আগে সরকারি সম্পত্তি চুরির এক মারাত্মক অভিযোগও। পতিরাম থানায় যার বিরুদ্ধে জামিন অযোগ্য ধারায় মামলা ও রজু রয়েছে। যে ঘটনায় নাম রয়েছে গঙ্গারামপুরের এক ঠিকাদারেরও। তবে ছমাস পরেও কেন ওই দুই অভিযুক্তকে আজো গ্রেফতার করেনি পুলিশ তা নিয়ে ধন্দে রয়েছেন খোদ বিদ্যুৎ দপ্তরের আধিকারিকরাও।
বিদ্যুৎ দপ্তরের রিজিওনাল ম্যানেজার দীপঙ্কর দাস জানিয়েছেন, সরকারি লক্ষ লক্ষ টাকার মাল চুরির অভিযোগ রয়েছে সৌমেন সরকার সহ গঙ্গারামপুরের এক ঠিকাদারের বিরুদ্ধে। যাদের বিরুদ্ধে জামিন অযোগ্য ধারায় মামলাও রজু রয়েছে। তবে ছ মাসেও কেন তারা গ্রেফতার হয়নি তা তাদের অজানা। তবে বিদ্যুৎ দপ্তরের সমস্ত কাজকর্ম থেকে ওই দুই ঠিকাদারকে দূরে রাখা হয়েছে।
বালুরঘাট পুরসভার চেয়ারম্যান অশোক মিত্র বলেন, শহরে সাধারণ মানুষের পরিষেবা বন্ধ রেখে কাটমানির মিথ্যে অভিযোগ সামনে এনে সৌমেন সরকার তাদের সম্মানহানি করেছে। আর যে কারনে তার বিরুদ্ধে কোটি টাকার মানহানির মামলা করেছেন।
যদিও ঠিকাদার সৌমেন সরকার তার মায়ের শারীরিক অবস্থার অবনতির কারণে এব্যাপারে কিছু বলতে চাননি।