বালুরঘাট শহর লাগোয়া এলাকায় পার্কের পিপিপি মডেল নিয়ে বিতর্ক! লস প্রজেক্ট ও দুস্কৃতিদের আখড়া আখ্যা দিয়ে দায়ীত্ব এড়ানোর চেষ্টা বিডিও ও পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতির

0
60

বালুরঘাট শহর লাগোয়া এলাকায় পার্কের পিপিপি মডেল নিয়ে বিতর্ক! লস প্রজেক্ট ও দুস্কৃতিদের আখড়া আখ্যা দিয়ে দায়ীত্ব এড়ানোর চেষ্টা বিডিও ও পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতির

পিন্টু কুন্ডু, বালুরঘাট, ২০ জুলাই—— সরকারী সম্পত্তির আয়ে এবারে ভাগ বসাবে বেসরকারী মালিক! বালুরঘাটের হোসেনপুরে পঞ্চায়েত সমিতির তত্ত্বাবধানে থাকা আরণ্যক উদ্যানের নবনির্মিত প্রবেশদ্বারই যেন চমকে দিয়েছে অনেককেই। বিগত কিছুদিন ধরে নতুন রুপে সেজে ওঠা যে উদ্যানকে ঘিরেই তৈরি হয়েছে নানা জল্পনা। সরকারী কোটি কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত পঞ্চায়েত সমিতির এক সময়ের স্বপ্নের প্রজেক্টকে পিপিপি মডেলে রুপান্তরিত করা নিয়েই শুরু হয়েছে বিতর্ক। পুরসভা পারলেও শহর লাগোয়া এলাকায় পার্ক পরিচালনা করতে কেন ব্যর্থ বালুরঘাট পঞ্চায়েত সমিতি ? যা নিয়েই প্রশ্ন তুলেছেন অনেকে। যদিও এই প্রজেক্টকে লস প্রজেক্ট ও দুস্কৃতিদের আখড়া আখ্যা দিয়ে নিজেদের দায়ীত্ব এড়াতে চেয়েছেন পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি ও বিডিও।

বালুরঘাট শহর লাগোয়া হোসেনপুর এলাকায় পঞ্চায়েত সমিতির তত্ত্বাবধানে রয়েছে বিশাল বড় আরণ্যক পার্ক। যেখানে একসময় বড় জলাধারে বোটিং চলত। এমনকি শিশুদের মনোরঞ্জনের জন্য টয় ট্রেনেরও ব্যবস্থা ছিল। রয়েছে মুক্ত মঞ্চ। বিগত পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি প্রবীর রায়ের হাত ধরেই এক ভিন্ন মাত্রা পেয়েছিল এই আরন্যক উদ্যানটি। কিন্তু সবকিছু থেকেও আজ যেন শূন্য এই উদ্যান। কারণ সেখানে আর যাওয়া আসা নেই মানুষের। প্রায় দু বছর আগে এর ভেতরে যুবক-যুবতীদের নানা অশ্লীল কাজকর্মের ভিডিও সামনে আসবার পরেই তড়িঘড়ি বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল উদ্যানটি। এরপর পঞ্চায়েত সমিতির নতুন বোর্ড আসার পরেই তড়িঘড়ি তারা সেটিকে পিপিপি মডেলে রুপান্তরিত করার সিদ্ধান্ত নেয়। তাদের দাবি, এর ফলে নতুন করে আয়ের পথ খুলবে। যদিও এই পার্কটি যে একসময় দুষ্কৃতীদের আখড়ায় পরিণত হয়েছিল তা খোদ স্বীকার করেছেন বালুরঘাটের বিডিও। তাই সরকারি সম্পত্তিকে নষ্ট হওয়ার হাত থেকে বাঁচাতেই এমন উদ্যোগ বলে দাবি করেছেন তিনি। কিন্তু সরকারি সম্পত্তিকে বেসরকারি মালিকের হাতে তুলে দেওয়াতেই উঠছে একাধিক প্রশ্ন। কারণ যেখানে বালুরঘাট পুরসভার অধীনে দু-দুটি পার্ক দিব্যি চলছে, যার আয়ও যথেষ্ট রয়েছে। ঠিক সেই জায়গায় পঞ্চায়েত সমিতির আওতায় থাকা একটি পার্ক চালাতে কেন হিমশিম খেতে হচ্ছে কর্তৃপক্ষকে ? পিপিপি মডেলে পার্ক চললে আয়ের একটি অংশ নিশ্চয়ই বেসরকারি মালিক ভোগ করবে। সেখানে সরকারের আয়ে ভাগ বসানোর প্রশ্নও উঠছে। যদিও এই লস প্রজেক্টকে ঘুরে দাঁড় করাতেই এমন উদ্যোগ বলে দাবি পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতির।

বালুরঘাট পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি অরূপ সরকার বলেন , ‘সরকারি সম্পত্তি রক্ষণাবেক্ষণ অনেক বড় বিষয়। এটি চালাতে যে টাকা ব্যয় হচ্ছিল, সেই পরিমাণ আয় হচ্ছিল না। বিগত পাঁচ বছরে রক্ষণাবেক্ষণের খরচ আমরা তুলতে পারিনি। একদম লস প্রজেক্টে যাচ্ছিল। তাই পিপিপি মডেল করা হয়েছে। এটি সরকারি সম্পত্তিই থাকবে। সেখান থেকে আয় হবে। নতুন করে আধুনিক পরিকাঠামো দিয়ে পার্ক সাজানো হচ্ছে। আর ১৫ দিনের মতো সময় লাগবে। দ্রুত এই পার্ক খোলা হবে।’

বালুরঘাটের বিডিও সম্বল ঝা জানান, ‘আরণ্যক পার্ক পঞ্চায়েত সমিতির একটি বড় সম্পত্তি। যার সঙ্গে বালুরঘাটবাসীর ঐতিহ্য ও আবেগ জড়িয়ে। এটি প্রায় দু বছর বন্ধ ছিল। কারণ পরিচালনা করা যাচ্ছিল না। নতুন বোর্ড এসে সেটিকে হাট ও ঘাট যেমন লিজ দেওয়া হয়। তেমন লিজ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তার ফলে সম্পত্তিটিকে নষ্ট হওয়ার হাত থেকে রক্ষাও করা যাবে ও কিছুটা আয়ও হবে।’

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here