বালুরঘাটে পুরসভা নির্দেশ অগ্রাহ্য করে অবৈধ দখলদারি নিয়ে দাদাগিরি বিজেপির! ২৪ ঘন্টার সময়সূচি বেঁধে দিয়ে পার্টি অফিস ভেঙ্গে দেওয়ার হুঁশিয়ারি প্রশাসনের
পিন্টু কুন্ডু, বালুরঘাট, ২৪ জুলাই —— অবৈধ দখলদারি নিয়ে এবারে দাদাগিরি খোদ বিজেপির! পুরসভার দেওয়া নির্দিষ্ট সময়সূচি কে অগ্রাহ্য করে দলীয় কার্যালয় না সরানোর অভিযোগ বিজেপির বিরুদ্ধে। পালটা ২৪ ঘন্টা সময় সীমা বেঁধে দিয়ে পার্টি অফিস ভেঙ্গে দেওয়ার হুঁশিয়ারি প্রশাসনের। বুধবার দুপুরের এই ঘটনাকে ঘিরে তুমুল চাঞ্চল্যকর পরিস্থিতি তৈরি হয় বালুরঘাট শহরের চকভৃগু এলাকায়। যদিও এই ঘটনাকে ভোট পরবর্তী হিংসা বলেই দাবি বালুরঘাট টাউন মন্ডল সভাপতির।
রাজ্যের প্রত্যেকটি পুরসভার সাথে তালমিলিয়ে ফুটপাত দখলমুক্ত ও অবৈধ দখলদারি অভিযানে নামে বালুরঘাট পুরসভাও। শহরের বিভিন্ন প্রান্তে এই অভিযান চালাতে বেশ কয়েক ধাপে এই কর্মসূচি গ্রহণ করে পুরসভা কতৃপক্ষ। সেই হিসাবেই পুরসভার অধীনস্থ চকভৃগুতে ব্যবসায়ীদের সতর্ক করে অবৈধ দখলদারি উচ্ছেদে সুনির্দিষ্ট সময়সীমা বেধে দেয় পুরসভা কর্তৃপক্ষ। ১৯ জুলাই অবধি যার শেষ সময়সীমা নির্ধারণ করে চকভৃগু এলাকাতে ব্যাপক মাইকিং করে প্রচার চালায় বালুরঘাট পুরসভা। যার পরেই এদিন মহকুমাশাসককে সঙ্গে নিয়ে মাঠে নামেন খোদ পুরসভার চেয়ারম্যান অশোক মিত্র। হাজির ছিলেন বালুরঘাট থানার আইসি শান্তিনাথ পাজার নেতৃত্বে বিরাট পুলিশবাহিনীও। গোবিন্দপুর এলাকায় যে অভিযান চালাবার সময়ই সামনে আসে এই ঘটনা। পুরসভা কতৃপক্ষের অভিযোগ, অবৈধভাবে সরকারী জায়গা দখল করে থাকা আরএসপির কার্যালয় এদিন ভেঙে দখলমুক্ত করেছেন খোদ তাদের দলীয় কর্মীরাই। একইভাবে তৃণমূলও তাদের কার্যালয় ভেঙে সরকারি জায়গা দখলমুক্ত করার অনুমতি দিয়েছে পুরসভাকে। কিন্তু প্রশাসন ও পুরসভার কোন নির্দেশই কর্ণপাত করে নি বিজেপি নেতৃত্বরা। পুরসভার অভিযোগ তাদের দেওয়া নির্দিষ্ট সময় অতিক্রান্ত হলেও অবৈধভাবে সরকারি জায়গা দখল করে গড়ে তোলা ওই দলীয় কার্যালয়টি কোনভাবেই সরাতে রাজি হয়নি বিজেপি নেতৃত্বরা। আর তাতেই এদিন বেজায় ক্ষুব্ধ হয় পুরসভা কর্তৃপক্ষ ও মহকুমা প্রশাসন। আগামী ২৪ ঘণ্টার সময়সীমা বেঁধে দিয়ে এদিন বিজেপি নেতৃত্বদের কড়া হুশিয়ারি দিয়ে সরকারী জায়গা দখলমুক্ত করার নির্দেশও দেওয়া হয়েছে পুরসভা ও মহকুমা প্রশাসনের তরফে। যদিও এই ঘটনা নিয়ে পক্ষপাতিত্বের অভিযোগ তুলেছেন বিজেপির টাউন মন্ডল সভাপতি সমীর প্রসাদ দত্ত। তার অভিযোগ, শহরে এমন দলীয় কার্যালয় তৃণমূলেরও অনেক রয়েছে। ভোট পরবর্তী হিংসা থেকেই এসব ঘটনা ঘটছে।
বালুরঘাট পুরসভার চেয়ারম্যান অশোক মিত্র জানিয়েছেন, সরকারি জায়গা দখল করে গড়ে উঠেছিল তিনটি দলের দলীয় কার্যালয়। আরএসপি কর্মীরা নিজেরাই জায়গা দখলমুক্ত করে দিয়েছে। তৃণমূলের দলীয় কার্যালয় ভেঙে দেওয়া হয়েছে। কিন্তু বিজেপি তাদের দলীয় কার্যালয় সরায়নি। মহকুমা শাসক যাদের ২৪ ঘণ্টা সময় দিয়ে দলীয় কার্যালয় সরাবার নির্দেশ দিয়েছেন।
বিজেপির বালুরঘাট টাউন মন্ডল সভাপতি সমীর প্রসাদ দত্ত জানিয়েছেন, ভোট পরবর্তী হিংসা থেকেই এধরনের ঘটনা ঘটছে। পুরসভা যদি এভাবে দখলমুক্ত করতে পারে তাহলে খুবই ভালো উদ্যোগ। কিন্তু তাদেরও বহু পার্টি অফিসের অবস্থান সরকারি জায়গায় রয়েছে।
