সাতদিনের সময়সীমা বেধে দিয়ে এবারে বালুরঘাটে উচ্ছেদের নোটিশ জাতীয় সড়ক কতৃপক্ষের

0
213

সাতদিনের সময়সীমা বেধে দিয়ে এবারে বালুরঘাটে উচ্ছেদের নোটিশ জাতীয় সড়ক কতৃপক্ষের। আতঙ্কে দিশেহারা ব্যবসায়ীরা, কান্নায় ভেঙে পড়লেন অন্ত:স্বত্তা চা বিক্রতা

পিন্টু কুন্ডু, বালুরঘাট, ৩০ জুলাই ———- সাতদিনের সময়সীমা বেধে দিয়ে রাতারাতি উচ্ছেদের নোটিশ এবার জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষের। আতঙ্কে দিশেহারা ব্যবসায়ীরা। কান্নায় ভেঙে পড়লেন অন্ত:স্বত্তা চা বিক্রেতা। মঙ্গলবার সকাল থেকে এই ঘটনাকে ঘিরে তুমুল হলুস্থুলু পরিস্থিতি তৈরি হয় বালুরঘাট শহর লাগোয়া বড় রঘুনাথপুর এলাকায়। ঘটনা নিয়ে জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে ভুয়ো নোটিশ জারি করার অভিযোগ তুলেও সরব হয়েছেন ব্যবসায়ীদের একাংশ।

বালুরঘাট শহর লাগোয়া ডাঙ্গা গ্রাম পঞ্চায়েতের অন্তর্গত বড় রঘুনাথপুর এলাকাটি। ৫১২ জাতীয় সড়কের ধারে যেখানেই বেশ কয়েক বছর আগে গড়ে ওঠে প্রায় চৌদ্দটি দোকান ঘর। স্বাভাবিকভাবেই জাতীয় সড়কের পাশে থাকা ওই দোকান ঘরগুলির জায়গা পূর্ত দফতরের অধীনে। যদিও সেখানে ব্যবসা করার জন্য তাদের ট্রেড লাইসেন্স দিয়েছে স্থানীয় পঞ্চায়েত। এমনকি নিয়মিত তারা সেই দোকানগুলিতে ব্যবহৃত বিদ্যুতের জন্য বিলও দিয়ে আসছেন। কিন্তু এর মধ্যেই ওই দোকানগুলোর পেছনে একটি ভবন কেনেন বালুরঘাটের কয়েকজন ব্যবসায়ী। যাদের তরফে সেই ভবনের সামনের জায়গা ফাঁকা করার জন্য তথা দোকানগুলোকে উঠিয়ে দেওয়ার জন্য একটি মামলাও দায়ের করে। বর্তমানে ওই ক্ষুদ্র ব্যবসায়িকরা সেই মামলায় চালিয়ে যাচ্ছেন। যেখানে তারা নির্দিষ্ট দিনে কোর্টে গিয়ে হাজিরা দিচ্ছেন বলেও জানিয়েছেন। এরই মধ্যে বিচারাধীন সেই বিষয়ে পূর্ত দপ্তর থেকে সোমবার দোকান ফাঁকা করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বলেও তারা অভিযোগ করেন। এদিকে এরই মধ্যে বালুরঘাট জাতীয় সড়ক উপভুক্তি সহকারি বাস্তুকারের করনের তরফে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নির্দেশিকার পরেই সেখানে দোকান উঠিয়ে নেওয়ার বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়েছে বলে জানানো হয়েছে। যে বিজ্ঞপ্তিতে সাত দিনের মধ্যেই জায়গা ফাঁকা করার নির্দেশও দেওয়া হয়েছে। না হলে জরিমানার কথাও বলা হয়েছে। যদিও ওই ব্যবসায়িকরা কোনো মতেই সেই জায়গা ছেড়ে উঠবে না বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন। তাদের দাবি যদি ওঠাতেই হয় তাহলে জাতীয় সড়কের পাশে যত বেআইনি নির্মাণ রয়েছে, সেগুলোও ভাঙার দাবি জানিয়েছেন তারা।

সমস্যার কথা বলতে গিয়ে কেঁদে ওঠেন চা বিক্রেতা রমা সরকার। তার কথায়, ‘আমি বর্তমানে অন্তঃসত্ত্বা। বিজ্ঞপ্তি পেয়ে স্বামী অসুস্থ হয়ে পড়েছে। এই দোকানের উপরেই সংসার চলে। এখান থেকে উঠিয়ে দিলে আমরা কি চুরি করব না ভিক্ষে করব? রাস্তার পাশে অনেক নির্মাণ থাকলেও আমাদেরই শুধু উঠে যেতে বলছে। আমরা এখানে খেটে খাব। কোনোভাবেই উঠব না।’

ব্যবসায়ী পবিত্র সূত্রধর ও সুনীল বিশ্বাসরা বলেন, ‘যা হবে আইন মেনেই হোক। আমাদের এখানে প্রায় ১৪ টা দোকান আছে। দোকানের সামনে আমাদের অজান্তে বিজ্ঞপ্তি সাঁটিয়ে দেওয়া হয়েছে। দোকান উঠিয়ে দিলে না খেতে পেয়ে মরতে হবে। পেছনের ভবনের সঙ্গে মামলা চলছে। ১ আগস্ট পূর্ত দপ্তরে যেতে বলেছে। দেখা যাক কী হয়।’

সহকারি বাস্তকার বিপ্লব রায় জানান, ‘দোকানগুলো পূর্ত দফতরের জায়গায়। সেই জায়গা ফাঁকা করার নির্দিষ্ট নির্দেশিকা আমাদের কাছে এসেছে। সেই অনুযায়ী সেখানে মালিকদের দোকান সরিয়ে নেওয়ার বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়েছে।’

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here