হাসপাতালে ভর্তির দু’ঘন্টা পরেও দেখা নেই চিকিৎসকের! মৃত্যু স্কুল পড়ুয়ার। বেপরোয়া ভাঙচুর বালুরঘাট সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে
পিন্টু কুন্ডু, বালুরঘাট, ১২ আগষ্ট ——- হাসপাতালে ভর্তির দু’ঘন্টা পরেও দেখা নেই চিকিৎসকের, মৃত্যু তৃতীয় শ্রেণীর স্কুল পড়ুয়ার। প্রতিবাদে সরকারী হাসপাতালে বেপরোয়া ভাঙচুর রোগীর পরিবারের লোকেদের। সোমবার সকাল থেকে এই ঘটনাকে ঘিরে তুমুল উত্তেজনা ছড়ায় বালুরঘাট সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে। শিবের মাথায় জল ঢালতে যাবার পথেই দুর্ঘটনার কবলে পড়েন ওই স্কুল ছাত্র ও তার পরিবারের লোকেরা। এদিকে এই ঘটনার পরেই বালুরঘাট থানার আইসির নেতৃত্বে বিরাট পুলিশবাহিনী এলাকায় পৌঁছে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করে। পুলিশ জানিয়েছে মৃত ওই স্কুল ছাত্রের নাম শিবম শর্মা (৯), বাড়ি বালুরঘাটের বড় রঘুনাথপুর এলাকায়। এদিন ভোররাতে পরিবারের লোকজনের সাথে ওই ছোট্ট শিশুটি পায়ে হেটেই পতিরাম শিবমন্দিরে জল ঢালতে যাচ্ছিলো। পতিরামের মনিপুর এলাকায় আচমকা একটি বেপরোয়া টোটো পিছন থেকে তাদের ধাক্কা মেরে উলটে যায়। যে টোটোর নিচে চাপা পড়েই মাথা ফেটে যায় স্কুল ছাত্রটির। ওই ঘটনায় আহত হয় পরিবারের আরো বেশ কয়েকজন সদস্যও। এদিকে এই ঘটনার পরেই পরিবারের লোকেরা তড়িঘড়ি আহত ওই স্কুল ছাত্রটিকে নিয়ে আসে বালুরঘাট সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে। অভিযোগ, যেখানে ভর্তির পর দু’ঘন্টা সময় পেরিয়ে গেলেও কর্তব্যরত চিকিৎসকের দেখা মেলেনি। আর তার জেরেই মৃত্যু হয় বালুরঘাট ললিত মোহন আদর্শ প্রাথমিক বিদ্যালয়ের তৃতীয় শ্রেণীর ওই স্কুল ছাত্রটির। যা নিয়ে কর্তব্যরত চিকিৎসক হাসান সুবিদের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগড়ে হাসপাতাল চত্বরে বেপরোয়া ভাঙচুর চালায় উত্তেজিত পরিবারের লোকেরা। যদিও ভাঙচুরের অভিযোগ অস্বীকার করা হয়েছে মৃত ছাত্রের পরিবারের তরফে। এদিকে এই ঘটনার খবর পেয়ে বালুরঘাট থানার আইসি শান্তিনাথ পাজার নেতৃত্বে বিরাট পুলিশ বাহিনী হাসপাতাল চত্বরে পৌঁছাতেই মৃত ছাত্রের পরিবারের লোকেদের ক্ষোভের মুখে পড়েন তিনি। যদিও পরবর্তীতে তাদের আশ্বস্থ করে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করেন আইসি।
মৃত স্কুল ছাত্রের দাদা তন্ময় শর্মা ও দিদি রিঙ্কি শর্মারা বলেন, ভোর রাতে শিবের মাথায় জল ঢালতে যাবার পথে দুর্ঘটনার কবলে পড়েন তারা। রক্তাক্ত অবস্থায় ভাইকে হাসপাতালে নিয়ে আসার দু’ঘন্টা পরেও চিকিৎসকের দেখা মেলেনি। কর্তব্যরত চিকিৎসক হাসান সুবিদের উদাসীনতার কারনেই শিবমের মৃত্যু হয়েছে। তাই তার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চান তারা।
বালুরঘাট ললিত মোহন আদর্শ প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক প্রকাশ দাস বলেন, পড়াশোনার পাশাপাশি খেলাধুলাতেও যথেষ্ট ভালো ছিল ছোট্ট শিবম। এদিন সকালে তার এমন মর্মান্তিক মৃত্যুর খবর পেয়েই হাসপাতালে ছুটে এসেছেন তিনি।
বালুরঘাট জেলা হাসপাতালের ভারপ্রাপ্ত সুপার সুমন্ত ব্যানার্জ্জী অবশ্য এই ঘটনা নিয়ে সাংবাদমাধ্যমের সামনে কিছু বলতে চাননি।