স্কুল ছাত্রের মৃত্যু নিয়ে এবারে বালুরঘাট হাসপাতালের চিকিৎসা পরিষেবা ও চিকিৎসকের ভূমিকা নিয়ে ক্ষোভ খোদ মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিকের। শোকজ করা হল কর্তব্যরত চিকিৎসককে
পিন্টু কুন্ডু, বালুরঘাট,১৩ আগষ্ট —— তৃতীয় শ্রেণীর স্কুল ছাত্রের মৃত্যু নিয়ে জেলা হাসপাতালের চিকিৎসা পরিষেবা ও চিকিৎসকের গাফিলতির বিরুদ্ধে এবারে সরব খোদ জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক । শোকজ করা হল কর্তব্যরত চিকিৎসক হাসান সুবিদকে। একইসাথে আশঙ্কাজনক অবস্থায় থাকা ছোট্ট ওই স্কুল ছাত্রকে ওইদিন কেন দ্রুততার সাথে সিসিইউতে স্থানান্তরিত করা হয়নি তা নিয়ে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কাছেও রিপোর্ট চেয়েছেন জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক। মঙ্গলবার হাসপাতাল পরিদর্শন করে ওই স্কুল ছাত্রের মৃত্যু নিয়ে বালুরঘাট হাসপাতাল কতৃপক্ষের কাছে এমনই একগুচ্ছ প্রশ্নের জবাব চেয়েছেন জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য অধিকারীক সুদীপ দাস। শুধু তাই নয়, কর্তব্যরত চিকিৎসকের যে উদাসীনতা ছিল তাও এদিন কার্যত স্বীকার করেছেন তিনি। তবে এনিয়ে একটি তদন্ত কমিটি গঠন তার পুর্নাঙ্গ রিপোর্ট রাজ্যে পাঠানো হচ্ছে বলেও জানিয়েছেন সিএম ও এইচ।
প্রসঙ্গত, সোমবার ভোররাতে বাড়ির লোকজনের সাথে পায়ে হেটে পতিরাম শিবমন্দিরে জল ঢালতে যাবার সময় বেপরোয়া টোটোর ধাক্কায় রক্তাক্ত হয় তৃতীয় শ্রেণীর স্কুল ছাত্র শিবম শর্মা। যে ঘটনায় আহত হয় পরিবারের বেশ কয়েকজন সদস্যও। ঘটনার পরেই পরিবারের লোকেরা তড়িঘড়ি ওই স্কুল ছাত্রটিকে নিয়ে এসে ভর্তি করে বালুরঘাট সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে। অভিযোগ, যেখানে ভর্তির দু’ঘন্টা পরেও কর্তব্যরত চিকিৎসকের দেখা মেলেনি। আর তার জেরেই মৃত্যু হয়েছে ছোট্ট ওই শিশুটির, এমনও অভিযোগ তার পরিবারের লোকেদের। যে ঘটনার প্রতিবাদেই ওইদিন বেপরোয়া ভাঙচুর চলে হাসপাতাল চত্বরে। তবে এই ঘটনা নিয়ে কর্তব্যরত চিকিৎসক হাসান সুবিদের বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়ে লিখিত অভিযোগ করেছেন পরিবারের লোকেরা। এদিন যে ঘটনার তদন্ত করতেই সশরীরে হাসপাতালে ছুটে আসেন খোদ জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য অধিকারীক সুদীপ দাস। শিশুটিকে ভর্তি রাখা সার্জিক্যাল ওয়ার্ড পরিদর্শন করেই হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কাছে একাধিক প্রশ্নের উত্তর জানতে চেয়েছেন মুখ্য স্বাস্থ্য অধিকারী। তিনি বলেন, চিকিৎসক আসতে দেরি করলেও শিশুটিকে কেন সি সি ইউ ওয়ার্ডে নিয়ে যাওয়া হল না ? যার উত্তর হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কাছে জানতে চাইবার পাশাপাশি কর্তব্যরত চিকিৎসক কলবুক পাবার পরেও কেন এত দেরিতে পৌঁছালেন তা নিয়েও সুনির্দিষ্ট কারণ দর্শাবার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে কর্তব্যরত ওই চিকিৎসককে।
দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক সুদীপ দাস বলেন, হাসপাতালের রেকর্ড বুকই বলছে ওই চিকিৎসক কলবুক দেওয়ার কতক্ষণ পর হাসপাতালে এসেছিলেন। যার কারন জানতে চাওয়া হয়েছে তার কাছে। ছোট্ট শিশুটির মৃত্যুর ঘটনার তদন্তের জন্য একটি তদন্ত কমিটি গড়া হবে। যার রিপোর্ট রাজ্যে পাঠিয়ে দেওয়া হবে।