পেটের চিকিৎসা করাতে গিয়ে দাঁত ভাঙলো ষাটোর্ধ বৃদ্ধর! কাটলো জিহ্বাও

0
53

পেটের চিকিৎসা করাতে গিয়ে দাঁত ভাঙলো ষাটোর্ধ বৃদ্ধর! কাটলো জিহ্বাও। তাজ্জব করা ঘটনাকে ঘিরে ফের বিতর্কে বালুরঘাট জেলা হাসপাতাল। প্রশ্ন চিহ্নে সরকারি হাসপাতালের নিরাপত্তা ব্যবস্থা

পিন্টু কুন্ডু, বালুরঘাট, ১৪ আগষ্ট ——- পেটের চিকিৎসা করাতে এসে দাঁত ভাঙলো রোগীর, কাটলো জিভও। রক্তাক্ত অবস্থায় ষাটোর্ধ ফাগু পাহানকে মেডিসিন বিভাগ থেকে সরানো হল শল্য বিভাগে। তাজ্জব করা এই ঘটনাকে ঘিরে ফের বিতর্কে বালুরঘাট জেলা হাসপাতাল। প্রশ্ন চিহ্নে দাঁড়িয়েছে হাসপাতালে ভর্তি থাকা রোগীদের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়েও। বুধবার সকাল থেকে এই ঘটনাকে ঘিরে তুমুল চাঞ্চল্যকর পরিস্থিতি তৈরি হয় বালুরঘাট সুপারস্পেশালিটি হাসপাতাল চত্বরে। প্রতিবাদে হাসপাতাল চত্বর ঘেরাও করে বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন রোগীর পরিবারের লোকেরা। যদিও এই ঘটনার খবর পেয়েই এলাকায় পৌছে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করার চেষ্টা করেন বালুরঘাট থানার আইসি শান্তিনাথ পাঁজার নেতৃত্বে বিরাট পুলিশ বাহিনী।

জানা যায়, মঙ্গলবার পেটের যন্ত্রণা নিয়ে জেলা হাসপাতালের মেডিসিন বিভাগে ভর্তি হয়েছিলেন বালুরঘাটের মাহিনগর এলাকার বাসিন্দা ষাটোর্ধ ফাগু পাহান। রাতে যাকে কিছুটা সুস্থ ও স্বাভাবিক অবস্থাতেও দেখে যান তার পরিবারের লোকেরা। কিন্তু ভোর রাতে হাসপাতালের এমারজেন্সি বিভাগ থেকে ফোন পেতেই যেন কিছুটা আতকে ওঠেন তার পরিবারের লোকেরা। তড়িঘড়ি হাসপাতালে ছুটে এসেই তারা দেখতে পেয়েছেন রোগীর দাঁত ভেঙে ও জিভ কেটে অঝরে রক্ত ঝড়ছে। যে ঘটনার খোঁজ করতে গিয়েই রোগীর পরিবারের লোকেরা জানতে পারেন হাসপাতালের ভেতরের তাজ্জব ঘটনার কথা। হাসপাতাল সূত্রের খবর অনুযায়ী, ভোররাতে পাশের বেডে শুয়ে থাকা অপর এক রোগী পায়েল সরেন আচমকাই ওই বৃদ্ধ কে স্যালাইন ঝোলানো লোহার রড দিয়ে বেধড়ক মারধর করতে শুরু করেন। ঘটনায় মুখে ও মাথায় আঘাত লেগে রক্তাক্ত হয়েছেন তিনি। যাদের মারপিট আটকাতে গিয়ে জখম হয়েছেন পারমিতা চক্রবর্তী নামে কর্তব্যরত এক আয়ামাসীও। এদিন সকালে যে ঘটনা প্রকাশ্যে আসতেই হাসপাতালের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে প্রশ্ন তুলে বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন রোগীর পরিবারের লোকেরা। যে খবর পেয়েই এলাকায় পৌঁছে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করার চেষ্টা করেন বালুরঘাট থানার আইসির নেতৃত্বে বিরাট পুলিশ বাহিনী। যদিও হঠাৎ করেই এই ঘটনা ঘটেছে, বলে দাবি করেছেন জেলা হাসপাতাল সুপার কৃষ্ণেন্দু বিকাশ বাগ। তবে বালুরঘাট জেলা হাসপাতালের এই ঘটনা নতুন নয়, এর আগেও চিকিৎসা করাতে এসে হাসপাতাল থেকে নিখোঁজ হয়ে গিয়েছে এক বৃদ্ধ আদিবাসী। যার খোঁজ আজো মেলেনি। গত সোমবার ওই হাসপাতালেই চিকিৎসকের উদাসীনতায় এক স্কুল ছাত্রের মৃত্যু ঘটেছে। যে অভিযোগে ভাঙচুরও চলেছে সরকারী হাসপাতালে। এদিন ফের হাসপাতালে ভর্তি থাকা দুই রোগীর মারপিটের ঘটনা সামনে আসতেই তুমুল শোরগোল পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে বালুরঘাট জেলা হাসপাতালে। একদিকে আর জি কর হাসপাতালে চিকিৎসকদের নিরাপত্তা নিয়ে যখন প্রশ্ন উঠেছে, ঠিক তখন বালুরঘাটে
রোগীদের নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন রোগীর পরিবারের লোকেরা।

আহত রোগীর আত্মীয় মালতি পাহান ও পরিতোষ পাহানরা বলেন, পেট ব্যথার কারনে তারা তাদের রোগীকে হাসপাতালে ভর্তি করেছিলেন। কিন্তু এদিন সকালে রোগীর রক্তাক্ত চেহারা দেখে তারা রীতিমতো চমকে গিয়েছেন। সরকারী হাসপাতালে কেন এমন অরাজকতা পরিস্থিতি ও রোগীদের কেন কোন নিরাপত্তা নেই ? যা নিয়েই অবাক হয়েছেন তারা।

তৃণমূলের আদিবাসী সংগঠনের নেতা তথা প্রাথমিক শিক্ষা সংসদের চেয়ারম্যান সন্তোষ হাসদা জানিয়েছেন, হাসপাতালে চিকিৎসা করাতে এসে সাধারণ মানুষের সাথে যা ঘটছে তা কখনই কাম্য নয়। এদিন যে ঘটনা ঘটেছে তাতে করে রোগীরা এখন নিরাপত্তার অভাব বোধ করছে হাসপাতালে। বিষয়টি তারা হাসপাতাল সুপারকে জানিয়েছেন।

বালুরঘাট জেলা হাসপাতাল সুপার কৃষ্ণেন্দু বিকাশ বাগ বলেন, হঠাৎ করে এই ঘটনাটি ঘটছে। তবে অত্যন্ত দুঃখজনক একটি ঘটনা। বিষয়টি তারা বালুরঘাট থানার আইসি কে জানিয়েছেন। পুলিশ তদন্ত করে যার উপযুক্ত পদক্ষেপ গ্রহণ করবে। তবে হাসপাতালের নিরাপত্তার ঘাটতির বিষয়টি মানতে চাননি তিনি।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here