অবৈধ নির্মাণ নিয়ে বিজেপি নেতার দাদাগিরি! প্রতিবাদ করায় স্কুল শিক্ষক ও তার স্ত্রীকে ইট ছুড়ে মারার অভিযোগ
পিন্টু কুন্ডু, বালুরঘাট, ২৮ ডিসেম্বর —অবৈধ নির্মাণ নিয়ে বিজেপি নেতার দাদাগিরি। সরকারী আইন ভেঙে বাড়ি তৈরি করার অভিযোগ। প্রতিবাদ করায় স্কুল শিক্ষক ও তার স্ত্রীকে ইট ছুড়ে মারার অভিযোগ। শুধু তাই নয় দেওয়া হয়েছে প্রাণনাশের ও হুমকি। চাঞ্চল্যকর ঘটনাটি ঘটেছে বালুরঘাট শহরের ১৭ নম্বর ওয়ার্ডের সাহেব কাছারি এলাকায়। ঘটনার পরেই ওই বিজেপি নেতা পিন্টু সরকারের বিরুদ্ধে বালুরঘাট থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন আক্রান্ত স্কুল শিক্ষক অমিতাভ চৌধুরীর স্ত্রী কাকলি গাঙুলি চৌধুরী। এদিকে এই ঘটনার পরেই সম্পূর্ণ নির্মাণ কার্য বন্ধ রাখবার কড়া নির্দেশ জারি করেছে বালুরঘাট পুরসভা। একই সাথে আগামী তিন দিনের মধ্যে উপযুক্ত কাগজপত্র পুরসভায় দাখিল করবারও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে ওই বিজেপি নেতাকে।
কাকলি গাঙুলি চৌধুরী জানান, ‘‘আমরা দীর্ঘদিন ধরে লক্ষ্য করছিলাম, পিন্টু সরকার সরকারি নিয়ম উপেক্ষা করে অবৈধ নির্মাণ কাজ চালিয়ে যাচ্ছিলেন। যা নিয়ে গত ৭ ডিসেম্বর বালুরঘাট পৌরসভায় লিখিত অভিযোগ করি, কিন্তু তাতেও কাজ বন্ধ হয়নি। যখন আমি প্রতিবাদ জানাই, তখন তিনি অশ্লীল ভাষায় গালিগালাজ করেন এবং ইট ছুড়ে মারে। পরে প্রাণনাশের হুমকিও দেন পিন্টু সরকার।’’ঘটনার পরেই কাকলি গাঙুলি চৌধুরী বালুরঘাট থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন। যে অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে বালুরঘাট পৌরসভা দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন।
বালুরঘাট পৌরসভার চেয়ারম্যান অশোক মিত্র বলেন, যেকোন অবৈধ নির্মাণ বন্ধ করতে বদ্ধ পরিকর পৌরসভা। তিনি যে রাজনীতি দলেরই লোক হননা কেন। পৌরসভার তরফে পিন্টু সরকারের নির্মাণ কাজ বন্ধ রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে এবং তিন দিনের মধ্যে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র জমা দেয়ার নির্দেশ প্রদান করা হয়েছে।
যদিও বিজেপি নেতা পিন্টু সরকার এই অভিযোগ অস্বীকার করে পাল্টা দাবি করেছেন, ‘‘কাকলি গাঙুলি চৌধুরী আমার পাইপ লাইনের মিস্ত্রিকে মারধর করেছেন, আমি এসব ঘটনার সঙ্গে কোনোভাবেই যুক্ত নই।’’ তিনি জানান, তার বিরুদ্ধে উঠা সব অভিযোগ মিথ্যা।
এদিন এই ঘটনার পরপরই পুরো এলাকায় উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। প্রতিবাদকারীরা অভিযুক্ত বিজেপি নেতার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন। এলাকার সাধারণ মানুষও এই ধরনের দাদাগিরি ও সরকারি আইন লঙ্ঘনকে নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।
বালুরঘাট পৌরসভা এবং পুলিশ প্রশাসন ইতিমধ্যেই এই বিষয়টি তদন্তের জন্য পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। স্থানীয়রা আশা করছেন, দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে এবং অভিযুক্ত বিজেপি নেতার বিরুদ্ধে যথাযথ শাস্তি প্রদান করা হবে।