উষ্ণতার প্রকোপে হতাশা! শীতের অপেক্ষায় নলেন গুড়ের কারিগররা
গঙ্গারামপুর, ২৮ ডিসেম্বর ——- শীত এলেই দক্ষিণ দিনাজপুরের গঙ্গারামপুরের গচিহার বুড়িপুকুর এলাকায় শুরু হয় খেজুর রসের মিষ্টি উৎসব। সেই রস থেকে তৈরি নলেন গুড় শুধু জেলার গণ্ডি পেরোয় না, পৌঁছে যায় কলকাতার অভিজাত বাজারেও। কিন্তু এবারের শীত যেন ব্যবসায়ীদের মুখে হাসি নয়, বরং চিন্তার ভাঁজ ফেলেছে। ঠান্ডার অভাবে কমেছে রসের মান, পড়েছে উৎপাদনে টান।
পেশায় কৃষক অমিত চৌধুরী বলেন, শীতের পাঁচ মাস পরিবারের বাড়তি আয় করতে নলেন গুড় তৈরির কাজ করেন। তিনি আরো জানান, “২০০-রও বেশি খেজুর গাছ থেকে রস সংগ্রহ করে প্রতি সপ্তাহে তিন কুইন্ট্যালের মতো গুড় তৈরি করি। কিন্তু এবারের শীতে রসের মিষ্টতা তেমন নেই। তাছাড়া চাহিদাও কমেছে।” প্রতিকূলতার মধ্যে ১২০-১৫০ টাকা কেজি দরে গুড় বিক্রি করলেও লাভের অঙ্কে ভাটা পড়েছে। এলাকার আরও অনেক পরিবারই এখন এই নলেন গুড়ের ব্যবসার উপর নির্ভরশীল হয়ে পড়েছে। একসময় খেজুরের রস বিক্রি করলেও ক্রেতাদের সন্দেহ আর বাজারের প্রতিযোগিতায় পেরে ওঠেননি তারা। তাই রস থেকে গুড় তৈরির সিদ্ধান্ত নেন। বর্তমানে দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার পতিরাম, গঙ্গারামপুর পেরিয়ে মালদা ও উত্তর দিনাজপুরের বাজারেও দাপট দেখাচ্ছে এখানকার তৈরি নলেন গুড়। কিন্তু শীত না পড়লে যেমন রস কম হয়, তেমনই চাহিদাও তলানিতে নামে।
গুড় ব্যবসায়ীদের আশা, আগামী দিনে শীত জাঁকিয়ে পড়বে। আবহাওয়াবিদদের পূর্বাভাসও সেই সম্ভাবনাকেই জোর দিচ্ছে। ব্যবসায়ীরা এখন দিন গুনছেন তীব্র ঠান্ডার, কারণ শীতের পরশেই বাড়বে রসের মিষ্টতা আর বাজারের চাহিদা। “ঠান্ডা এলে আবার মিষ্টি সুবাস ভাসবে গঙ্গারামপুরে,” বলছেন প্রত্যাশায় ভরা ব্যবসায়ীরা।