হিলি সীমান্তে হদিশ জাল নথি তৈরির গোপন কারখানার! পুলিশের জালে ধৃত চক্রের দুই পান্ডা ও দুই সহযোগী
, বালুরঘাট, ১৬ জানুয়ারী —– দক্ষিন দিনাজপুরের সীমান্ত শহর হিলিতে পুলিশের চমকপ্রদ অভিযানে ধরা পড়ল জাল আধার এবং ভোটার কার্ড তৈরির একটি বড় চক্র। ডুমরন এলাকার একটি কম্পিউটার দোকানের আড়ালেই চলছিল এই বেআইনি কারবার। যেখান থেকেই গ্রেপ্তার হয়েছে চক্রের দুই পান্ডা কুশ বর্মন ও মিজানুর রহমান। এছাড়াও পুলিশের জালে ধরা পড়েছে গৌতম মণ্ডল নামে এক টোটো চালক এবং এক বাংলাদেশী অনুপ্রবেশকারী। যাকে জিজ্ঞাসাবাদের মাধ্যমেই এই ঘটনার মুল কেন্দ্রে পৌছেছে বলে দাবি পুলিশের। যেখান থেকে উদ্ধার করেছে কম্পিউটার, প্রিন্টারসহ নকল পরিচয়পত্র তৈরির একাধিক সামগ্রী।
হিলি থানার পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, গত মঙ্গলবার অবৈধভাবে সীমান্ত পারাপারের অপরাধে হিলিতে গ্রেপ্তার হয় বাংলাদেশের সিরাজগঞ্জের তেলকুপিয়া এলাকার বাসিন্দা আলি মন্ডল। যাকে জিজ্ঞাসাবাদে উঠে আসে কুশ বর্মনের নাম। সে দীর্ঘদিন ধরে মোটা টাকার বিনিময়ে অবৈধভাবে মানুষ পারাপারের কাজ চালাচ্ছিল। শুধু তাই নয়, নকল আধার এবং ভোটার কার্ড বানিয়ে বাংলাদেশি নাগরিকদের ভারতীয় পরিচয় দিচ্ছিল। এরপরই পুলিশের নজরে আসে ডুমরন এলাকার মিজানুর রহমানের দোকান। সেখানেই চালানো হত জাল কার্ড তৈরির যাবতীয় কাজ। বুধবার রাতে বিশেষ অভিযান চালিয়ে পুলিশ সেই দোকান থেকেই মিজানুরকে গ্রেপ্তার করে। উদ্ধার হয় আধার ও ভোটার কার্ডের সাদা ফরম্যাট, কম্পিউটার, প্রিন্টারসহ একাধিক প্রমাণ। আটক করা হয় গৌতম মণ্ডল নামে এক টোটো চালককে, যিনি এই চক্রে বিভিন্ন কাজে সাহায্য করতেন। বৃহস্পতিবার ধৃতদের বালুরঘাট জেলা আদালতে হাজির করে পাঁচ দিনের পুলিশ রিমান্ডের আবেদন জানিয়েছে হিলি থানার পুলিশ।
ডিএসপি সদর বিক্রম প্রসাদ এদিন একটি সাংবাদিক বৈঠক করে বলেন, “এই চক্র শুধু সীমান্তে বেআইনি প্রবেশকেই সহজ করছিল না, বরং জাতীয় নিরাপত্তায় বড়সড় ফাঁক তৈরি করছিল। অভিযুক্তদের কাছ থেকে আমরা গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পেয়েছি। তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করে পুরো নেটওয়ার্ক খুঁজে বের করার চেষ্টা চলছে।”
পুলিশের এই সাফল্যে স্বস্তি ফিরেছে হিলি ও তার আশপাশের এলাকায়। তবে, সীমান্তবর্তী অঞ্চলে এ ধরনের চক্রের সক্রিয়তা সাধারণ মানুষের মধ্যে উদ্বেগ বাড়িয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে, এই চক্রের শিকড় আরও গভীরে ছড়ানো থাকতে পারে। জাতীয় নিরাপত্তা অক্ষুণ্ণ রাখতে আগামী দিনে আরও কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া হবে।