বন্ধুত্বের মুখোশে প্রতারণা! বন্ধুর নথি চুরি করে ব্যাঙ্ক জালিয়াতি,পুলিশের জালে বংশীহারির যুবক
পিন্টু কুন্ডু, বালুরঘাট, ৭ ফেব্রুয়ারী —— বন্ধুত্বের বিশ্বাসঘাতকতা! বন্ধুর পরিচয়পত্র চুরি করে একাধিক ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট খুলে লক্ষ লক্ষ টাকার অবৈধ লেনদেনের অভিযোগে পুলিশের জালে ধরা পড়ল দক্ষিণ দিনাজপুরের যুবক। চমকে দেওয়া এই ঘটনায় অভিযুক্ত রবসান জানিকে শুক্রবার গ্রেফতার করে আদালতে পেশ করে দক্ষিণ দিনাজপুর সাইবার ক্রাইম থানার পুলিশ। আদালত তিন দিনের পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছে।
সূত্রের খবর, বংশীহারী ব্লকের বাসিন্দা রবসান জানি তাঁর ঘনিষ্ঠ বন্ধু বিক্রম সরকারের ব্যক্তিগত নথি— আধার কার্ড, প্যান কার্ডসহ একাধিক গুরুত্বপূর্ণ তথ্য হাতিয়ে নেয়। সেই নথি ব্যবহার করেই গোপনে তিনটি ব্যাংক অ্যাকাউন্ট খোলে সে। প্রথমে সন্দেহের কোনও জায়গা ছিল না, কারণ সমস্ত লেনদেন করা হচ্ছিল বিক্রম সরকারের নামে খোলা অ্যাকাউন্টগুলোর মাধ্যমে। কিন্তু কৌশলী প্রতারণার পর্দাফাঁস হয়, যখন বিক্রমের মোবাইলে একাধিক সন্দেহজনক লেনদেনের বার্তা আসতে থাকে।
শুরু হয় সন্দেহ। প্রথমে বিষয়টি বুঝতে না পারলেও, একাধিক বড় লেনদেনের নোটিফিকেশন পেয়ে হতভম্ব হয়ে যান বিক্রম। আর দেরি না করে সোজা ছুটে যান দক্ষিণ দিনাজপুর সাইবার ক্রাইম থানায়। অভিযোগ পাওয়ার পর তদন্তে নামে পুলিশ। আধুনিক প্রযুক্তির সাহায্যে রবসান জানির বিরুদ্ধে একের পর এক প্রমাণ হাতে আসে তদন্তকারীদের। এরপরই পুলিশ অভিযুক্তকে গ্রেফতার করে।
সরকারি আইনজীবী জয়ন্ত মজুমদার বলেন, বন্ধুর বিশ্বাস জিতে তাঁর নথি হাতিয়ে একাধিক ব্যাংক অ্যাকাউন্ট খুলে অবৈধ লেনদেন চালিয়ে যাচ্ছিল অভিযুক্ত। পুলিশের আবেদনের ভিত্তিতে বিচারক রবসান জানিকে তিন দিনের পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছেন।”
পুলিশ সূত্রে খবর, রবসান এই অপরাধে একা ছিল না। তাঁর সঙ্গে আরও কেউ জড়িত রয়েছে কি না, পুরো বিষয়টি আদৌ কোনও বড় সাইবার চক্রের অংশ কি না, তা খতিয়ে দেখছে তদন্তকারীরা। এলাকার সাধারণ মানুষও এমন প্রতারণার ঘটনায় আতঙ্কিত। বন্ধুত্বের আড়ালে এমন বিশ্বাসঘাতকতা যে কোনওদিন তাঁদের সঙ্গেও হতে পারে, সেই ভয়ে অনেকেই নিজেদের ব্যাঙ্ক সংক্রান্ত তথ্য গোপন রাখার পরামর্শ দিচ্ছেন।