নাশকতার ছক, না নিছক অনুপ্রবেশ! সীমান্ত পেরিয়ে ভারতে ঢুকে পুলিশের জালে বাংলাদেশী যুবক
পিন্টু কুন্ডু, বালুরঘাট, ১৬ ফেব্রুয়ারী ——— রাতের অন্ধকারে স্টেশনে সন্দেহজনক ঘোরাঘুরি করার অপরাধে এক যুবককে গ্রেফতার জি আর পির। পরিচয় জানতেই বারবার পাল্টায় বয়ান। কখনও নিজেকে দিল্লির আবার কখনও কলকাতার বাসিন্দা বলে দাবি যুবকের! শনিবার রাতে চাঞ্চল্যকর ঘটনাটি বালুরঘাট রেলস্টেশনের। কথাবার্তায় অসঙ্গতি মিলতেই শুরু হয় জেরা, আর তাতেই সামনে আসে চাঞ্চল্যকর তথ্য। সীমান্ত পেরিয়ে চোরাপথে ভারতে প্রবেশ করেছিল ওই যুবক!
জিআরপি সূত্রের খবর, ধৃতের নাম শাকিল মিঞা (২৬), বাড়ি বাংলাদেশের গাজীপুর জেলার কাপাসিয়া থানা এলাকায়। ওইদিন রাতে স্টেশনে সন্দেহজনক ভাবে ঘোরাঘুরি করতে দেখে করতে দেখেই ওই বাংলাদেশী যুবককে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করে জি আর পি। পুলিশের সন্দেহ বাড়তেই শুরু হয় গভীর জিজ্ঞাসাবাদ। আর তাতেই স্বীকার করতে কার্যত বাধ্য হয় ওই বাংলাদেশী যুবক। জি আর পি সুত্রের আরো খবর অনুযায়ী গত ১৪ ফেব্রুয়ারি হিলির উন্মুক্ত সীমান্ত পেরিয়ে অবৈধভাবে ভারতে ঢুকেছিল ওই বাংলাদেশী যুবক। এরপরেই প্রথমে কলকাতা, তারপর দিল্লি যাওয়ার পরিকল্পনা ছিল তার। তবে কেন এই যাত্রা? নিছকই কাজের সন্ধানে, নাকি এর পিছনে কোনও বড় চক্রান্ত? পুলিশ এখন সেই দিকেই তদন্ত শুরু করেছে।
বাংলাদেশ থেকে ভারতে চোরাপথে প্রবেশের ঘটনা নতুন নয়। তবে রাতের অন্ধকারে রেলস্টেশনে সন্দেহজনক গতিবিধি পুলিশের কপালে ভাঁজ ফেলেছে। কারণ, সীমান্তে নজরদারি জোরদার হলেও কীভাবে ওই যুবক অনায়াসে ঢুকে পড়ল ভারতে? তার ভারতে আসার পিছনে কোনও জঙ্গি সংযোগ রয়েছে কিনা, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
রবিবার ধৃতকে বালুরঘাট জেলা আদালতে তোলা হলে বিচারক তাকে ১৪ দিনের জেল হেফাজতের নির্দেশ দেন। সরকারি আইনজীবী সঞ্জয় বিশ্বাস জানান, “অবৈধভাবে ভারতে প্রবেশের অভিযোগে অভিযুক্তকে ১৪ দিনের জেল হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছেন বিচারক।
জি আর পি থানার ইনচার্জ রতন সরকার বলেন, “স্টেশনে ঘোরাঘুরি করছিল যুবকটি। জেরা করতেই তথ্যের অসঙ্গতি ধরা পড়ে। এরপর তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। যে তদন্তে চোরাপথে ভারতে ঢোকার তথ্য মিলেছে।” পুলিশের সন্দেহ, ঘটনার সঙ্গে কোনও সংঘবদ্ধ চক্র জড়িত থাকতে পারে।
বালুরঘাটের এই ঘটনা নতুন করে নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে। সীমান্তে নজরদারি জোরদার করা হলেও কীভাবে এত সহজে ঢুকে পড়ছে অনুপ্রবেশকারীরা? বিশেষ করে বড় শহরগুলোতে যাওয়ার পরিকল্পনা থাকলে এর পিছনে অন্য কোনও চক্রান্ত লুকিয়ে থাকতে পারে বলে মনে করছে প্রশাসন। তদন্তকারীদের কাছে এখন সবচেয়ে বড় প্রশ্ন— শাকিল মিঞার ভারতে প্রবেশ নিছক কাকতালীয়, নাকি এর পিছনে লুকিয়ে আছে বড় কোনও ষড়যন্ত্র?