বালুরঘাটে ভুয়ো ডায়গনাস্টিক কান্ড! রোগীদের ঠকিয়ে জাল বিল দেবার অভিযোগ গ্রেফতার কুমারগঞ্জের যুবক
পিন্টু কুন্ডু, বালুরঘাট, ১৯ ফেব্রুয়ারী —–রোগীদের চোখে ধুলো দিয়ে জালিয়াতির চক্র! নামী ডায়গনাস্টিক সেন্টারের নাম ভাঁড়িয়ে দিনের পর দিন প্রতারণা চালিয়ে যাচ্ছিল এক যুবক। তার জাল ছিঁড়তে বেশি সময় লাগল না— ফাঁস হয়ে গেল চক্রান্ত, পুলিশের জালে ধরা পড়ল অভিযুক্ত। বুধবার শহরের রঘুনাথপুর এলাকা থেকে বালুরঘাট থানার পুলিশ গ্রেফতার করল অভিযুক্ত ফয়জুল সরকারকে। অভিযোগ, সে ভুয়ো বিল তৈরি করে রোগীদের কাছ থেকে টাকা হাতিয়ে নিচ্ছিল।
ফয়জুল প্রথমে এক পরিচিত ডায়গনাস্টিক সেন্টারের নাম করে রোগীদের থেকে রক্ত সংগ্রহ করত। চিকিৎসার আশায় আসা সাধারণ মানুষ বুঝতেই পারতেন না, তাঁদের সঙ্গে কী চক্রান্ত চলছে। কিন্তু রিপোর্ট ও বিল দেওয়ার সময় তিনি ধরিয়ে দিতেন সম্পূর্ণ অন্য একটি ভুয়ো ডায়গনাস্টিক সেন্টারের প্যাড। তার কারসাজি এতটাই নিখুঁত ছিল যে কেউ সহজে সন্দেহ করেননি।
কিন্তু বুদ্ধি যতই ধারালো হোক, একসময় তা ভোতা হয়! বিপত্তি বাধে, যখন দুই রোগী— রেশমিয়ারা খাতুন ও মিন্নাতুন চৌধুরী— রিপোর্ট সংগ্রহ করতে গিয়ে বুঝতে পারেন, তাদের সঙ্গে ভয়ঙ্কর প্রতারণা করা হয়েছে! বিল হাতে নিয়ে সংশ্লিষ্ট ডায়গনাস্টিক সেন্টারে পৌঁছতেই তাঁরা জানতে পারেন, ওই নামে কোনো রিপোর্টই তৈরি হয়নি। এরপরেই ছড়িয়ে পড়ে তীব্র উত্তেজনা।
ঘটনা জানিয়ে রঘুনাথপুরের বাসিন্দা মনোজ কুমার পান্ডা পুলিশের দ্বারস্থ হন। অভিযোগ পেয়েই তদন্তে নামে বালুরঘাট থানার পুলিশ। তদন্ত যত এগোতে থাকে, ততই বেরিয়ে আসে চাঞ্চল্যকর তথ্য! দীর্ঘদিন ধরেই রোগীদের সঙ্গে প্রতারণা করছিল ফয়জুল। এই জালিয়াতির শিকার হয়েছেন বহু মানুষ, যাঁরা হয়তো আজও জানেন না, তাঁদের রিপোর্ট আদৌ আসল ছিল কি না!
পুলিশ সূত্রে খবর, শুধু ফয়জুল নন, এর পিছনে আরও কেউ রয়েছে কি না, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। একজনের পক্ষে এতদিন ধরে এমন চক্র চালানো সম্ভব নয় বলেই মনে করছেন তদন্তকারীরা। বৃহস্পতিবার ধৃতকে বালুরঘাট জেলা আদালতে তোলা হবে। পুলিশি হেফাজতে নিয়ে জেরা করলে উঠে আসতে পারে আরও বড় কোনো চক্রান্তের ছক!