ভুয়ো সিমে কোটি টাকার প্রতারণা!

0
84

ভুয়ো সিমে কোটি টাকার প্রতারণা! হাটে-বাজারে সিমকার্ড বিক্রি নিয়ে টেলিকম সংস্থাগুলিকে কড়া নির্দেশ পুলিশের

বালুরঘাট, ২০ ফেব্রুয়ারী ——-সাইবার অপরাধে রাশ টানতে এবার সরাসরি মাঠে নামল জেলা পুলিশ। ভুয়ো পরিচয়পত্র ব্যবহার করে সিম কার্ড সংগ্রহ ও আর্থিক প্রতারণার ঘটনা রুখতে হাটে-বাজারে সিম বিক্রির উপর একাধিক বিধিনিষেধ আরোপ করা হচ্ছে। বৃহস্পতিবার এক গুরুত্বপূর্ণ বৈঠকে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন বালুরঘাট সদর ডিএসপি বিক্রম প্রসাদ।

জেলা পুলিশের ডাকে আয়োজিত এদিনের বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন দক্ষিণ দিনাজপুর সাইবার ক্রাইম থানার আইসি সৌরভ ঘোষ-সহ বিএসএনএল, জিও, ভোডাফোন ও এয়ারটেলের প্রতিনিধিরা। মূলত কীভাবে সিম জালিয়াতি প্রতিরোধ করা যায় এবং টেলিকম সংস্থাগুলি পুলিশকে কীভাবে সহযোগিতা করতে পারে, তা নিয়েই দীর্ঘ আলোচনা হয়।

বৈঠক শেষে ডিএসপি বিক্রম প্রসাদ জানান, “সিম জালিয়াতি রুখতে আমরা টেলিকম সংস্থাগুলির সঙ্গে যৌথভাবে কাজ করছি। সাধারণ মানুষ যাতে প্রতারণার শিকার না হন, সে বিষয়ে বিশেষ নজর দেওয়া হচ্ছে।” তিনি আরও বলেন, “একজন ব্যক্তির নামে কতগুলি সিম রয়েছে, তা জানতে ‘সঞ্চার সাথী’ অ্যাপ ব্যবহার করা যেতে পারে।”

সম্প্রতি জেলার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে সিম জালিয়াতির মাধ্যমে প্রতারণার একাধিক অভিযোগ আসছিল পুলিশের কাছে। তদন্তে উঠে আসে, ভুয়ো পরিচয়পত্র জমা দিয়ে একাধিক সিম কার্ড সংগ্রহ করে প্রতারক চক্র। এরপর সেই সিম ব্যবহার করেই কোটি টাকার আর্থিক প্রতারণা চালানো হচ্ছিল।

বুধবার দক্ষিণ দিনাজপুর সাইবার ক্রাইম পুলিশ বড়সড় সাফল্য পায়। এক গোপন সূত্রে খবর পেয়ে অভিযান চালিয়ে তপনের হরসুরা গ্রামের বিদ্যুৎ মেহেরা, বংশীহারির শিহল এলাকার মেহেফুজ আলম ও অপূর্ব তালুকদার নামে তিনজন কুখ্যাত প্রতারককে গ্রেফতার করে পুলিশ। তদন্তে উঠে আসে, তারা ভুয়ো নথিপত্র দিয়ে ১৬৪টি সিম সংগ্রহ করেছিল, যা বিভিন্ন প্রতারণার কাজে ব্যবহৃত হয়েছে।

এই ঘটনার পরই টেলিকম সংস্থাগুলির বিরুদ্ধে আরও কঠোর হয় প্রশাসন। পুলিশের তরফে স্পষ্ট নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, হাটে-বাজারে কিংবা খোলা জায়গায় অবাধে সিম বিক্রি করা যাবে না। প্রতিটি সিম রেজিস্ট্রেশনের ক্ষেত্রে সঠিক প্রক্রিয়া মানা হচ্ছে কি না, তা খতিয়ে দেখতে হবে।

পুলিশের পক্ষ থেকে সাধারণ মানুষকে আরও সচেতন হতে বলা হয়েছে। অনেক সময়ই গ্রাহকরা না জেনেই নামমাত্র দামে বা সহজ শর্তে সিম সংগ্রহ করেন, যা পরে প্রতারণার কাজে ব্যবহৃত হয়। পুলিশের পরামর্শ—সিম কেনার সময় অবশ্যই বৈধ পরিচয়পত্র জমা দিন এবং ‘সঞ্চার সাথী’ অ্যাপের মাধ্যমে নিজের নামে থাকা সিম যাচাই করে নিন।

জেলা পুলিশের তরফে স্পষ্ট বার্তা— ভুয়ো নথিতে সিম বিক্রি হলে সংশ্লিষ্ট টেলিকম সংস্থার বিরুদ্ধেও কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আইনভঙ্গকারীদের কোনওভাবেই ছাড় দেওয়া হবে না।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here