সহ সভাপতির চেয়ারে জুয়াড়ি! ফেসবুকে ছবি পোস্ট করতেই তোলপাড় কুমারগঞ্জ, প্রশাসন কি ঘুমিয়ে?

0
18

সহ সভাপতির চেয়ারে জুয়াড়ি! ফেসবুকে ছবি পোস্ট করতেই তোলপাড় কুমারগঞ্জ, প্রশাসন কি ঘুমিয়ে?

বালুরঘাট, ২ মার্চ —— সরকারি দফতরের গুরুত্বপূর্ণ পদে রাতারাতি “বদল”! অন্তত তেমনই মনে হয়েছিল কুমারগঞ্জের বাসিন্দাদের, যখন এক যুবক সহ সভাপতির চেয়ারে বসে ছবি তুলে ফেসবুকে পোস্ট করলেন। ভাইরাল সেই ছবি দেখে গোটা ব্লক স্তম্ভিত। কে এই ব্যক্তি? কীভাবে তিনি পঞ্চায়েত সমিতির সহ সভাপতির আসনে বসতে পারলেন? এবং সবচেয়ে বড় প্রশ্ন— প্রশাসন কী করছিল?

সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হওয়া ছবিতে দেখা যায়, সৈয়দ শাহ নামে এক যুবক সহ সভাপতির টেবিলে গদগদ মুখে বসে রয়েছেন। সামনে স্পষ্ট লেখা— “সহ সভাপতি, কুমারগঞ্জ পঞ্চায়েত সমিতি”। কিন্তু এই পদে তো বসেন তৃণমূল নেতা সাবের আলী সরকার! তাহলে তিনি গেলেন কোথায়? রাতারাতি কি প্রশাসনিক রদবদল হল? কবে? কার অনুমতিতে?

এলাকাবাসীর বক্তব্য, সৈয়দ শাহ পরিচিত মুখ— তবে রাজনীতিবিদ হিসেবে নয়, বরং কুখ্যাত জুয়াড়ি হিসেবে। তাহলে একজন জুয়াড়ি কীভাবে সরকারি অফিসে সহ সভাপতির চেয়ারে বসার সাহস পেল? আর এই ছবি তুলেই বা ফেসবুকে পোস্ট করার উৎসাহ পেল কার কাছ থেকে?

এই প্রশ্নে সরগরম এখন কুমারগঞ্জ। লোকজন বলতে শুরু করেছে, “যদি সরকারি দফতরের চেয়ারে বসতে এত সহজ হয়, তাহলে কাল হয়তো অন্য কেউ এসে সভাপতির চেয়ারে বসবে!”

এদিকে এই ছবি ভাইরাল হতেই খবর পৌঁছয় আসল সহ সভাপতি সাবের আলী সরকারের কাছে। স্বাভাবিকভাবেই তিনি ক্ষুব্ধ। বললেন, “আমি কিছুক্ষণের জন্য অফিসের বাইরে গিয়েছিলাম। সেই ফাঁকে এই যুবক এমন কান্ড ঘটিয়েছে। এটা পুরোপুরি বেআইনি। তাঁকে ডেকে পাঠানো হয়েছে, কৈফিয়ত চাইব। প্রশাসনকেও এ বিষয়ে জানানো হয়েছে।”

যদিও সৈয়দ শাহের দাবি, “আমি সহ সভাপতি নই, কেউ চক্রান্ত করে এসব মিথ্যে রটাচ্ছে।” কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে, তাহলে তিনি সরকারি অফিসে ঢুকে সহ সভাপতির চেয়ারে বসে ছবি তুললেন কেন? এবং সেটি নিজেই ফেসবুকে পোস্ট করলেন কেন?

এখন কুমারগঞ্জের মানুষ প্রশ্ন তুলছে, একজন বহিরাগতের যদি এত সাহস হয় যে সে সরাসরি সরকারি দফতরের দায়িত্বশীল পদে বসতে পারে, তাহলে প্রশাসনের ভূমিকা কী? এটা কি শুধুই কৌতুক, নাকি এর পেছনে বড় কোনো রাজনৈতিক চাল আছে।

এই ঘটনা ঘিরে রাজনৈতিক মহলেও শুরু হয়েছে চাপানউতোর। বিরোধীদের বক্তব্য, “এটাই প্রমাণ করে, কুমারগঞ্জে প্রশাসন বলে কিছু নেই। একজন বহিরাগত এসে সহ সভাপতির চেয়ারে বসে যায়, আর কেউ জানতে পারে না!”

এখন দেখার, প্রশাসন কবে নড়েচড়ে বসে। নাকি এই ঘটনাও কালের গর্ভে তলিয়ে যাবে, আর কুমারগঞ্জের মানুষ ভুলে যাবে যে একদিন একজন জুয়াড়ি সহ সভাপতির চেয়ারে বসে ইতিহাস তৈরি করেছিল!

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here