মিড ডে মিলের রাঁধুনীদের রন্ধনযুদ্ধে মাতলো বালুরঘাট, স্বাদ বিচারক খুদে পড়ুয়ারা
বালুরঘাট, ৫ মার্চ: দক্ষিণ দিনাজপুরে মিড ডে মিলের রাঁধুনীদের নিয়ে প্রথমবার আয়োজিত হলো অভিনব রন্ধন প্রতিযোগিতা। যাঁদের হাতে পড়ুয়ার পেট ভরার দায়িত্ব, এবার তাঁরাই নামলেন স্বাদের লড়াইয়ে। বালুরঘাট পুরসভার উদ্যোগে সাহেব কাছারি উৎসব ভবনে আয়োজিত এই প্রতিযোগিতায় শহরের পাঁচটি স্কুলের রাঁধুনীরা অংশ নেন, আর বিচারকের আসনে বসে খুদে পড়ুয়ারা!
রাঁধুনীদের হাতের রান্নায় মুগ্ধ বিচারকরা
বালুরঘাট বিদ্যাসাগর বিদ্যাপীঠ এফপি স্কুল, মনিমেলা পৌর প্রাথমিক বিদ্যালয়, খাদিমপুর গার্লস প্রাইমারি স্কুল, বালুরঘাট জেএলপি বিদ্যাচক্র ও নালন্দা বিদ্যাপীঠের রাঁধুনীরা প্রতিযোগিতায় অংশ নেন। অন্যদিকে, পাঁচটি স্কুলের পড়ুয়ারা টেস্টার হিসেবে উপস্থিত ছিল। খুদে বিচারকদের সামনে ছিল সুস্বাদু ডিমের ঝোল, ডাল, পনির তরকারির মতো পদ। রাঁধুনীদের হাতের মজাদার খাবার খেয়ে তারা খুশিতে আটখানা!
পরিচ্ছন্নতা ও মানোন্নয়নে জোর
মূলত স্বনির্ভর গোষ্ঠীর মহিলারাই মিড ডে মিলের রান্নার দায়িত্বে থাকেন। তবে অনেক সময় কিছু স্কুলে পরিচ্ছন্নতা ও মানের দিকে তেমন নজর থাকে না। এই প্রতিযোগিতা আয়োজনের অন্যতম উদ্দেশ্য ছিল রাঁধুনীদের উৎসাহিত করা, রান্নার গুণগত মান আরও উন্নত করা এবং পরিচ্ছন্নতার বিষয়ে সচেতন করা। জেলা শিক্ষা আধিকারিক বিমলকৃষ্ণ গায়েন জানান, “এই প্রতিযোগিতার মাধ্যমে রাঁধুনীরা শুধু প্রশংসা পেলেন না, তাঁদের দক্ষতাও যাচাই করা হলো। পরিচ্ছন্নতা বজায় রেখে আরও সুস্বাদু রান্নার প্রতি তাঁদের আগ্রহ বাড়াতে চাই আমরা।”
এই প্রতিযোগিতায় প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় স্থানাধিকারীদের পুরস্কৃত করা হয়। পাশাপাশি, অংশগ্রহণকারী সব রাঁধুনীকেই সম্মাননা স্মারক প্রদান করা হয়। প্রতিটি স্কুলের জন্য দেড় হাজার টাকা বরাদ্দ করা হয়, আর পড়ুয়াদের স্কুলে ফেরার জন্য দেওয়া হয় পাঁচশো টাকা।
রাঁধুনী ভগবতী চক্রবর্তী বলেন, “এমন প্রতিযোগিতা আগে কখনও হয়নি। আমরা যেমন উৎসাহ পেলাম, তেমনই রান্নার নতুন কিছু শেখারও সুযোগ পেলাম।”
বালুরঘাট পুরসভার চেয়ারম্যান অশোক মিত্র বলেন, “জেলায় এই প্রথম এমন উদ্যোগ। রাঁধুনীদের আরও দক্ষ ও যত্নশীল করতে চাই আমরা। আগামী বছর আরও বড় করে এই প্রতিযোগিতা আয়োজনের পরিকল্পনা রয়েছে।”
খাবারের মানোন্নয়ন, রাঁধুনীদের উৎসাহ দেওয়া ও পরিচ্ছন্নতার দিকে নজর দিতেই এই অভিনব প্রতিযোগিতা। প্রশাসনের আশা, এই উদ্যোগের ফলে মিড ডে মিলের গুণগত মান আরও উন্নত হবে, আর পড়ুয়ারাও পাবে সুস্বাদু ও স্বাস্থ্যকর খাবার।