রাতারাতি ভারতীয় হচ্ছে বাংলাদেশীরা!

0
139

রাতারাতি ভারতীয় হচ্ছে বাংলাদেশীরা! ব্যাঙ্ক কর্মীর হাত ধরে আধার-প্যানের ভয়ঙ্কর জালিয়াতি হিলিতে। গ্রেফতার তিন

পিন্টু কুন্ডু, বালুরঘাট, ৬ মার্চ ——- সীমান্ত পেরোলেই রাতারাতি ভারতীয় পরিচয়পত্র! তাও মাত্র কয়েক হাজার টাকায়!বাংলাদেশীদের রাতারাতি ভারতীয় প্রমানপত্র তৈরিতে চাঞ্চল্যকর তথ্য দক্ষিন দিনাজপুর জেলা পুলিশের হাতে। ব্যাঙ্ক কর্মীদের হাতে মোটা টাকা গুজে দিয়েই আধার ও প্যানকার্ড পেয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশীরা। ভুয়া নথি দিয়েই তৈরি হচ্ছে সেই কাগজপত্র। বুধবার রাতে দক্ষিণ দিনাজপুর জেলা পুলিশের জালে ধরা পড়েছে এমনই এক ভয়াবহ জালিয়াতি চক্র। হিলি থেকে গ্রেফতার করা হয়েছে এক বাংলাদেশি-সহ মোট তিনজনকে। বৃহস্পতিবার ধৃতদের পুলিশ রিমান্ডের আবেদন জানিয়ে বালুরঘাট জেলা আদালতে পাঠিয়েছে হিলি থানার পুলিশ।

পুলিশ জানিয়েছে গ্রেফতার হওয়া ওই বাংলাদেশি নাগরিকের নাম শ্যাম সাহা। চার বছর আগে অবৈধভাবে হিলি সীমান্ত পেরিয়ে ভারতে প্রবেশ করে সে। লোকচক্ষুর আড়ালে থাকার জন্য ত্রিমোহিনী এলাকায় মাছের চিকিৎসকের ছদ্মবেশ নেয় সে। যাকে আশ্রয় দেওয়ার অভিযোগে ওইদিন রাতে গ্রেফতার করা হয়েছে ত্রিমোহিনীর মাছ ব্যবসায়ী অমৃত দাসকে। অবৈধ এই বাংলাদেশীদের আর্থিক সহায়তায় অল্পদিনেই মাছ ব্যবসায় ফুলেঁফেপে উঠেছিল অমৃত দাস। যাদের জিজ্ঞাসাবাদেই পুলিশের হাতে উঠে আসে একাধিক চাঞ্চল্যকর তথ্য। পুলিশ জানতে পারে কিভাবে বাংলাদেশীরা অবৈধভাবে ভারতে প্রবেশ করে রাতারাতি আঁধার ও প্যান কার্ড তৈরি করছে। ঘটনায় নাম উঠে আসতেই হিলির কিসমতদাপট এলাকার বাসিন্দা পেশায় ব্যাঙ্ক কর্মী অলোক পালকে ঐদিন রাতেই গ্রেফতার করে হিলি থানার পুলিশ। বালুরঘাট ইন্ডিয়ান ব্যাঙ্কের ক্যাজুয়াল কর্মী অলক পালকে মাত্র ২২ হাজার টাকা দিয়েই আঁধার ও প্যান কার্ড তৈরি করিয়েছিলেন শ্যাম সাহা নামে ওই বাংলাদেশি বলেও জিজ্ঞাসাবাদে জানতে পেরেছে পুলিশ। ব্যাঙ্কের ডকুমেন্ট ভেরিফিকেশন কাজে যুক্ত থাকা অলক পালের হাত ধরে ভুয়ো নথি দাখিল করে শ্যাম সাহা ওই বাংলাদেশীর যাবতীয় কাগজপত্র তৈরি করেছিল। পুলিশি জিজ্ঞাসাবাদে যেসব তথ্য উঠে আসতেই তুমুল হইচই পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে গোটা দক্ষিণ দিনাজপুরে। তবে কি অলোক পালের মতো ব্যাঙ্ককর্মী এবং অমৃত দাসের মতো রাতারাতি ফুলেফেঁপে ওঠা মাছ ব্যবসায়ীদের হাত ধরেই ভারতে অনুপ্রবেশ ঘটছে বাংলাদেশীদের। পুলিশের দেওয়া যে চাঞ্চল্যকর তথ্য সামনে আসতেই এধরণের একাধিক প্রশ্ন উস্কে উঠেছে সীমান্তে। বাংলাদেশিরা এভাবেই যদি সহজেই আধার-প্যান কার্ড বানিয়ে নিতে পারে, তাহলে ভবিষ্যতে আরও বড় কোনও নাশকতার সম্ভাবনা থেকে যাচ্ছে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। এই চক্রের আরও কত শাখা-প্রশাখা ছড়িয়ে আছে, কারা এর পৃষ্ঠপোষকতা করছে, তা জানার জন্য তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ।

ডিএসপি সদর বিক্রম প্রসাদ জানিয়েছেন, “এক বাংলাদেশি নাগরিককে অবৈধভাবে আশ্রয় দেওয়া ও জাল নথি তৈরি করে দেওয়ার অভিযোগে তিনজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। ধৃতদের সাতদিনের পুলিশি হেফাজতের আবেদন জানিয়ে আদালতে পাঠিয়ে এই ঘটনার পুর্নাঙ্গ তদন্ত শুরু করা হয়েছে।

হিলি সীমান্ত বরাবরই সংবেদনশীল এলাকা হিসেবে পরিচিত। স্থানীয় সূত্রের দাবি, দীর্ঘদিন ধরেই এই ধরনের জালিয়াতি চলছিল, কিন্তু এতদিন পর পুলিশ তার নাগাল পেল! তাহলে কি এর আগেও বহু বাংলাদেশি এভাবেই ভারতীয় পরিচয়পত্র সংগ্রহ করে নিয়েছে? প্রশাসন কি এতদিন ঘুমিয়ে ছিল? সব মিলিয়ে, সীমান্ত এলাকায় উত্তেজনা তুঙ্গে। তদন্তের গতিপ্রকৃতির দিকেই নজর এখন সকলের।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here