চুরি-কাণ্ডে চমক! কুমারগঞ্জে সোনা কেনাবেচার জালে জুয়েলারি ব্যবসায়ী, গ্রেফতার দুই
নিজস্ব সংবাদদাতা, কুমারগঞ্জ: ছত্রিশগড়ে শিক্ষকের বাড়িতে চুরি, আর সেই সোনা মিলল কুমারগঞ্জের জুয়েলারি দোকানে! পুলিশি তদন্তে একের পর এক চাঞ্চল্যকর তথ্য উঠে আসছে। চুরি যাওয়া সোনা কেনার অভিযোগে কুমারগঞ্জের এক ব্যবসায়ী-সহ দু’জনকে গ্রেফতার করেছে ছত্রিশগড় পুলিশ। উদ্ধার হয়েছে ১৭২ গ্রাম সোনা। আদালতের নির্দেশে অভিযুক্তদের ট্রানজিট রিমান্ডে ছত্রিশগড় নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। এই ঘটনায় গোটা কুমারগঞ্জে তীব্র চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে।
জানা গেছে ছত্রিশগড়ের পৃথ্বরা এলাকার এক শিক্ষক ও তাঁর স্ত্রী কুম্ভ মেলায় গিয়েছিলেন। ফিরে এসে দেখেন বাড়ির দরজা ভাঙা, সবকিছু ওলটপালট! আলমারির ভিতর রাখা ১৯০ গ্রাম সোনার গয়না উধাও। পুলিশের কাছে অভিযোগ দায়ের হতেই তদন্তে নামে পৃথ্বরা থানার পুলিশ।
পুলিশ সূত্রে জানা যায়, চুরির সন্দেহে এক যুবককে গ্রেফতার করা হয়, যে শিক্ষকের বাড়িতে শ্রমিকের কাজ করত। রিমান্ডে নিয়ে জেরা করতেই চমকপ্রদ তথ্য ফাঁস হয়! অভিযুক্ত জানায়, চুরি করা সোনা কুমারগঞ্জের রামকৃষ্ণপুর গ্রামে এক ব্যক্তির কাছে বিক্রি করেছে।
এরপর ছত্রিশগড় পুলিশের একটি বিশেষ দল কুমারগঞ্জ থানার সহযোগিতায় বৃহস্পতিবার গভীর রাতে অভিযান চালিয়ে রামকৃষ্ণপুর গ্রাম থেকে আফসার মণ্ডল নামে এক ব্যক্তিকে গ্রেফতার করে। পুলিশের জেরায় আফসার জানায়, চুরি হওয়া সোনার বেশিরভাগটাই কুমারগঞ্জের ডাঙ্গারহাটের যশোদা জুয়েলার্সের মালিক জয়দেব কর্মকারের কাছে বিক্রি করেছে।
এরপরই পুলিশ জয়দেব কর্মকারকে গ্রেফতার করে। তার বাড়ি ও দোকানে তল্লাশি চালিয়ে ১৭২ গ্রাম চুরি যাওয়া সোনা উদ্ধার হয়। জয়দেবের হেফাজতে আরও কোনও চোরাই সোনা ছিল কি না, তা নিয়েও তদন্ত শুরু হয়েছে।
শুক্রবার বালুরঘাট জেলা আদালতে তোলা হলে ছত্রিশগড় পুলিশের আবেদনে সাড়া দিয়ে বিচারক তিন দিনের ট্রানজিট রিমান্ড মঞ্জুর করেন। পুলিশ সূত্রে খবর, ধৃতদের জেরা করলেই আরও চাঞ্চল্যকর তথ্য সামনে আসতে পারে।
এলাকাজুড়ে তোলপাড় শুরু হয়েছে। স্থানীয়দের দাবি, শুধু এই দু’জন নয়, এর সঙ্গে আরও বড় কোনও চক্র জড়িয়ে আছে কি না, তা খতিয়ে দেখা হোক। পুলিশের অনুমান, চোরাই সোনার কেনাবেচার পর্দার আড়ালে আরও অনেক গোপন লেনদেনের হদিস লুকিয়ে থাকতে পারে! তদন্ত চলছে, সামনে আসতে পারে আরও বড় চমক!