প্রশাসনিক উদাসীনতায় তামাক চক্রের রমরমা হরিরামপুরে! ক্যান্সারের আতঙ্কে দিন কাটছে বাসিন্দাদের
বালুরঘাট, ৬ মার্চ —- প্রশাসন কি ঘুমিয়ে? নাকি সব দেখেও না দেখার ভান করছে? দক্ষিণ দিনাজপুরের হরিরামপুরে বেআইনি তামাক কারবার গজিয়ে উঠেছে প্রকাশ্যেই! শিরশী ও পুন্ডরী গ্রাম পঞ্চায়েতের খোয়াপাড়া ও নাকর এলাকায় দেদার চলছে অবৈধ খৈনি তৈরির কারখানা। বাড়ির উঠোনে শুকোচ্ছে তামাক, মহিলারা খৈনি প্যাকেটজাত করছেন, আর সেই ঝাঁঝালো গন্ধে দমবন্ধ হয়ে আসছে গ্রামবাসীদের।
শুধু পরিবেশ দূষণ নয়, আরও বড় আতঙ্ক ক্যান্সার! তামাকের বিষক্রিয়ার আতঙ্কে শিশু থেকে বৃদ্ধ—সকলেই। অথচ প্রশাসন নির্বিকার! স্থানীয়রা বলছেন, বারবার অভিযোগ জানানো হলেও কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।
গ্রামবাসীদের অভিযোগ, মালদার মোথাবাড়ি এলাকার এন্তাজুল শেখ গরিব মহিলাদের আর্থিক দুরবস্থার সুযোগ নিয়ে তাঁদের বাড়িতেই খৈনি তৈরির কারখানা খুলে ফেলেছেন। সেখানে প্রকাশ্যে চলছে তামাক প্রসেসিং, মোড়কজাতকরণ, সবকিছু! নামিদামি ব্র্যান্ডের লেবেল লাগিয়ে সেই খৈনি বাজারে বিক্রি করা হচ্ছে। আর এই অবৈধ ব্যবসার আসল খেসারত দিচ্ছেন নিরীহ গ্রামবাসীরা!
স্থানীয় বাসিন্দা মোহাম্মদ আজিজ ও মনোজ সরকাররা ক্ষোভ উগরে দিয়ে বলেন, “আমাদের জীবন দুর্বিষহ হয়ে উঠেছে। তামাকের গন্ধে নিঃশ্বাস নেওয়া দায়। শরীরের নানা সমস্যা হচ্ছে, ভবিষ্যতে ক্যান্সারের আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। প্রশাসন কি তাহলে এই মৃত্যুর কারবারকে মদত দিচ্ছে?” অবিলম্বে এই কারখানা বন্ধ করতে হবে।
শিরশী গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান চন্দন শীল হতবাক, “আমাদের কাছে কোনও ট্রেড লাইসেন্স নেই। এটা সম্পূর্ণ অবৈধ। বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে দেখা হবে।”
অন্যদিকে, অভিযুক্ত এন্তাজুল শেখ নির্বিকার ভঙ্গিতে জানান, “আমার কাছে মালদার ট্রেড লাইসেন্স আছে, এখানকার কোনও কাগজ নেই।”
এদিকে এই ঘটনা নিয়ে প্রশাসনের নিষ্ক্রিয়তায় ক্ষোভে ফুঁসছেন গ্রামবাসীরা। গঙ্গারামপুরের মহকুমা শাসক অভিষেক শুক্লা জানিয়েছেন, “অবিলম্বে তদন্ত করে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
কিন্তু প্রশ্ন থেকে যায়—এতদিন ধরে প্রশাসনের চোখে ধুলো দিয়ে কেমন করে চলে আসছিল এই অবৈধ ব্যবসা? আর এখন কি সত্যিই বন্ধ হবে এই মৃত্যু ফাঁদ, নাকি অভিযোগের আগুন নিভে গেলে আবার গোপনে চলবে তামাক কারবার? উত্তর দেবে সময়!