রাজনীতির ছত্রছায়ায় মাদক কারবার! তপনে তৃণমূল নেত্রীর স্বামীর গোডাউন থেকে উদ্ধার ১৯ লক্ষ টাকার নিষিদ্ধ কাফ সিরাপ, গ্রেপ্তার এক
বালুরঘাট, ৮ মার্চ ——- দক্ষিণ দিনাজপুরের তপন থানার হরদিঘী গ্রামে রাজনীতির ছত্রছায়ায় চলছিল নিষিদ্ধ কাফ সিরাপের রমরমা কারবার! এক গোপন অভিযানে পুলিশ যা উদ্ধার করল, তা দেখে চমকে গিয়েছেন স্থানীয় বাসিন্দারাও! প্রাক্তন তৃণমূল গ্রাম পঞ্চায়েত সদস্য সুমি দাস (মন্ডল)-এর স্বামী রঞ্জিত মন্ডলের গোডাউন থেকে উদ্ধার হয় ৮ হাজার বোতল নিষিদ্ধ কাফ সিরাপ। যার বাজারমূল্য প্রায় ১৯ লক্ষ টাকা! বিশাল পুলিশি অভিযানে গ্রেপ্তার হয়েছে গোডাউন মালিক নিজেই। নিষিদ্ধ ওষুধ চক্রের সঙ্গে আরও কেউ জড়িত কি না, তা নিয়ে তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ।
তপন থানার পুলিশ জানিয়েছে শনিবার একটি গোপন সূত্রে খবর পেয়ে বিশাল পুলিশ বাহিনী অভিযান চালায়। যেখানে উপস্থিত ছিলেন তপন থানার আইসি জনমারী ভিয়ন্নে লেপচা, ডিএনটি ডিএসপি প্রদীপ সরকার-সহ পুলিশের একাধিক পদস্থ আধিকারিকরা। গোডাউনে মজুত থাকা একের পর এক কার্টুন খুলতেই সামনে আসে ৪০টি কার্টুন ভর্তি ৮ হাজার বোতল নিষিদ্ধ কাফ সিরাপ! এরপরই গ্রেপ্তার করা হয় গোডাউন মালিক রঞ্জিত মন্ডলকে।
এত বড় মাপের নিষিদ্ধ ওষুধ মজুতকরণের পেছনে কি সত্যিই বড় কোনও চক্র কাজ করছে? তদন্তে নেমে পুলিশ জানতে চাইছে— একজন প্রাক্তন তৃণমূল নেত্রীর স্বামীর গোডাউনে এত বিপুল পরিমাণ নিষিদ্ধ কাফ সিরাপ এল কীভাবে? রাজনীতির প্রভাব খাটিয়েই কি প্রশাসনের নজর এড়িয়ে চলছিল এই বেআইনি কারবার?
তবে গ্রেপ্তারির পর নিজের সাফাই দিয়ে রঞ্জিত মন্ডল জানান, “আমি নির্দোষ! আমাকে মিথ্যা মামলায় ফাঁসানো হচ্ছে। গতকাল রাতে আমার এক বন্ধু এই কার্টুনগুলো রেখে গিয়েছিল। এর মধ্যে কী ছিল, আমি জানতাম না। আমি রাজনীতি করি বলেই আমাকে ষড়যন্ত্র করে ফাঁসানো হয়েছে!”
তবে রঞ্জিতের দাবিতে কোনও আমল দিতে রাজি নয় পুলিশ। দক্ষিণ দিনাজপুর জেলা পুলিশের ডিএনটি ডিএসপি প্রদীপ সরকার স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন—
“গোপন সূত্রে খবর পেয়েই অভিযান চালানো হয়। যেখানে বিপুল পরিমাণ নিষিদ্ধ কাফ সিরাপ উদ্ধার হয়েছে। গোডাউন মালিককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তদন্ত চলছে, এর সঙ্গে আরও কেউ জড়িত কি না, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। কেউ রেহাই পাবে না!
এদিকে এই ঘটনা প্রকাশ্যে আসতেই এলাকায় ছড়িয়ে পড়েছে তুমুল চাঞ্চল্য। স্থানীয়দের প্রশ্ন— রাজনীতির ছত্রছায়ায় কি এতদিন চলছিল নিষিদ্ধ কাফ সিরাপের চোরাকারবার? মাদক চক্রের সঙ্গে কোনও রাজনৈতিক সম্পর্ক আছে কি না, তা নিয়েও শুরু হয়েছে জল্পনা। তদন্তে কি উঠে আসবে আরও চাঞ্চল্যকর তথ্য? নাকি রঞ্জিতের দাবি মতো সত্যিই কোনও রাজনৈতিক চক্রান্ত চলছে? সমস্ত উত্তর মিলবে পুলিশের তদন্ত শেষ হলে। আপাতত উত্তেজনার পারদ চড়ছে দক্ষিণ দিনাজপুরে!