বিজেপি নেতার বিরুদ্ধে কাটমানির অভিযোগ! সরকারি ঘরের টাকা না দিতেই হুমকি, তদন্তে প্রশাসন
নিজস্ব সংবাদদাতা ● কুমারগঞ্জ
বাংলা আবাস যোজনার টাকায় ঘর তুলবে এক হতদরিদ্র আদিবাসী পরিবার। স্বপ্নপূরণের পথে প্রথম ধাপ হিসেবে ব্যাঙ্কে ঢুকেছে সরকারি প্রকল্পের ৬০ হাজার টাকা। অথচ, সেই টাকা হাতে পেতেই কড়া নাড়ল ‘দাবিদার’! অভিযোগ, খোদ বিজেপি- পঞ্চায়েত সদস্যার স্বামী এসে জানিয়ে দিলেন—১০ হাজার টাকা কাটমানি না দিলে চলবে না! টাকা দিতে অস্বীকার করতেই শুরু ভয় দেখানো, হুমকি! ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে দক্ষিণ দিনাজপুরের কুমারগঞ্জ ব্লকের ভোওর গ্রাম পঞ্চায়েতে।
অভিযোগের কেন্দ্রে রয়েছেন ভোওর গ্রাম পঞ্চায়েতের সদস্যা নিবেদিতা সরকারের স্বামী, বিজেপি নেতা পাপাই সরকার। সরকারি প্রকল্পের ঘর পাওয়া লক্ষ্মন হেমব্রমের পরিবার দিন গুজরান করে ত্রিপল আর টিনের চালের নীচে। বহু প্রতীক্ষার পর সরকারি ঘরের প্রথম কিস্তির টাকা মেলায় খুশির হাওয়া ছিল পরিবারে। অভিযোগ, সেই খবর পেয়েই লক্ষ্মনের বাড়িতে হাজির হন পাপাই সরকার। সরাসরি জানিয়ে দেন—এই টাকার ১০ হাজার তাঁকে দিতে হবে! টাকা না দিলেই শুরু হবে চাপ।
লক্ষ্মন প্রথমে বিষয়টি এড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন, কিন্তু বাড়তে থাকে হুমকি। শেষমেশ কোনও উপায় না দেখে কুমারগঞ্জের বিডিও শ্রীবাস বিশ্বাসের কাছে লিখিত অভিযোগ জানান তিনি। থানাতেও দায়ের হয়েছে অভিযোগ। বিষয়টি জানাজানি হতেই নড়েচড়ে বসেছে প্রশাসন। বিডিও আশ্বস্ত করেছেন, “উপভোক্তাদের একটিও টাকা কাটমানি দিতে হবে না। প্রশাসন কড়া নজর রাখছে।” ইতিমধ্যেই তদন্ত শুরু হয়েছে।
যদিও সমস্ত অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছেন অভিযুক্ত পাপাই সরকার। তাঁর সাফাই, “এটি সম্পূর্ণ রাজনৈতিক ষড়যন্ত্র। আমাকে ফাঁসানোর চেষ্টা চলছে।”
কিন্তু বিরোধীরা একেবারেই ছাড় দিতে রাজি নয়। তাঁদের তীব্র কটাক্ষ, “কাটমানির বিরুদ্ধে যারা চিৎকার করে তারা এখন নিজেরাই সেই দুর্নীতির জালে জড়িয়ে পড়েছে! ক্ষমতা বদলেছে, কিন্তু চরিত্র বদলায়নি!”
ঘটনায় উত্তেজনা তুঙ্গে কুমারগঞ্জে। বিজেপি নেতৃত্ব নীরব। প্রশাসন কি কাটমানির কারবারিদের রক্ষা করবে, নাকি দৃষ্টান্তমূলক ব্যবস্থা নেবে? গোটা জেলার নজর এখন সেদিকেই!