গর্ভবতী মহিলাকে ভুল ওষুধ দেওয়ার অভিযোগ বালুরঘাটে! বমির ট্যাবলেটের পরিবর্তে মানসিক রোগের ওষুধ দিল দোকানদার। তুমুল হইচই চকভৃগুতে।
পিন্টু কুন্ডু, বালুরঘাট, ১৯ ফেব্রুয়ারী —— ভয়ঙ্কর কান্ড! চার মাসের গর্ভবতী মহিলাকে বমির ট্যাবলেটের পরিবর্তে মানসিক রোগের ওষুধ দেবার অভিযোগ। বালুরঘাট শহরের চকভৃগুর এক ওষুধ দোকানদারের বিরুদ্ধে উঠেছে এমনই এক মারাত্মক অভিযোগ। ঘটনার পর থেকেই অসুস্থ ওই গর্ভবতী মহিলা। সোমবার সকালে এই ঘটনা প্রকাশ্যে আসতেই রীতিমতো হইচই পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে গোটা বালুরঘাট শহরজুড়ে। পনেরো শতাংশ দামের ছাড় নিতে ওই ওষুধের দোকানে যাওয়াতেই এমন বিপত্তি ঘটল, বললেন অসুস্থ প্রসূতির স্বামী বিকাশ মন্ডল। এদিন যে ঘটনার লিখিত অভিযোগ দায়ের করে অভিযুক্ত ওই দোকান মালিকের শাস্তির দাবিতে জেলা মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিকের দ্বারস্থ হয়েছেন অসুস্থ মহিলার স্বামী।
জানা গেছে, কুমারগঞ্জ ব্লকের বটুন গ্রাম পঞ্চায়েতের মাদারগঞ্জ এলাকার বাসিন্দা পেশায় টোটো চালক বিকাশ মণ্ডল। বিয়ের চার বছর পর এই প্রথম একটি সন্তান লাভের আশায় দিন গুনছেন তিনি। সে হিসাবেই স্ত্রী পিয়ালি মন্ডলকে গত ১৪ ফেব্রুয়ারী তারিখে বালুরঘাটে নিয়ে এসে সরকারী হাসপাতালের ডাক্তার দেখিয়েছিলেন তিনি। যে ডাক্তারের প্রেসক্রিপশন নিয়েই কিছুটা ছাড়ের আশায় বালুরঘাটের চকভৃগু এলাকায় অবস্থিত চকভৃগু মেডিকেল স্টোর্সে গিয়েছিলেন ওই টোটো চালক বলে অভিযোগ। যেখান থেকেই ওই প্রসূতি মহিলার যাবতীয় ওষুধ সংগ্রহ করেছিলেন তিনি। আর এরপর সেই ওষুধ খাওয়ানোর পর থেকেই ক্রমশ অসুস্থ হয়ে পড়েন ওই গর্ভবতী মহিলা। ঘটনা জানিয়ে ফের চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন ওই টোটো চালক। প্রেসক্রিপশনের লিখা সেই ওষুধের সাথে দোকানদারের দেওয়া ওষুধ মেলাতে গিয়েই চোখ কপালে উঠবার জোগাড় হয় চিকিৎসকের। যেখানেই চিকিৎসক লক্ষ্য করেন, গর্ভবতী ওই মহিলাকে বমির ওষুধের পরিবর্তে স্নায়ু রোগের ওষুধ দিয়েছেন দোকানদার। আর যা সেবন করতেই অসুস্থ হয়ে পড়েছেন তিনি। ঘটনা জানতেই কার্যত স্তম্ভিত হয়ে পড়েন অসুস্থ মহিলার স্বামী। তবে কি পনেরো শতাংশ দামের ছাড় নিতে গিয়েই স্ত্রীর এমন বিপদ ডেকে আনলেন ? যে প্রশ্ন ঘুরতে থাকে ওই টোটো চালকের মাথায়। এরপরেই ওই দোকান মালিকের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ জানিয়ে মুখ্য স্বাস্থ্য অধিকারীকের দারস্থ হয়েছেন অসুস্থ মহিলার স্বামী বিকাশ মন্ডল। যদিও এমন অভিযোগ অস্বীকার করেছেন চকভৃগুর ওই ওষুধের দোকানের মালিক অরূপ শীল। তার দাবি, এমন অভিযোগ সঠিক নয়।
অভিযোগকারী বিকাশ মন্ডল বলেন, তার বাড়ি বটুনে হলেও বালুরঘাটের চকভৃগুর ওই ওষুধের দোকানটিতে পনেরো শতাংশ ছাড় দেবার কথা শুনে স্ত্রীর জন্য ওষুধ নিতে গিয়েছিলেন। কিন্তু সেখান থেকে ওষুধ খাইয়ে তার যে এমন মারাত্মক বিপদ হবে তা তিনি স্বপ্নেও ভাবতে পারেন নি। তার স্ত্রী ও গর্ভে থাকা শিশুর কিছু অঘটন ঘটলে তার জন্য দায়ী থাকবে ওই ওষুধ ব্যবসায়ী। ঘটনার লিখিত অভিযোগ জানিয়েছেন জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারীককে।
ওষুধের দোকানের মালিক অরূপ শীল বলেন, ভুল কথা। তার দোকানের বিরুদ্ধে মিথ্যে অভিযোগ আনা হয়েছে।
জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক সুদীপ দাস জানিয়েছেন, অভিযোগ হাতে পেলে বিষয়টি গুরুত্বের সাথে খতিয়ে দেখা হবে।