দূর্গা পুজো আদৌ হবে কিনা তা নিয়ে চরম দুশ্চিন্তায় প্রতিমা শিল্পীরা।

0
605

রায়গঞ্জ:– বাঙালির শ্রেষ্ঠ উৎসব দূর্গাপুজার আর হাতে মাত্র একশোটা দিন বাকি, রায়গঞ্জের কুমোরটুলিতে বেশিরভাগ শিল্পীই তৈরি করে ফেলেছেন প্রতিমা, এখনও কোনও ক্লাব বা পুজো কমিটি অগ্রিম বায়না করতেও আসেনি। ফলে করোনা আবহে দূর্গা পুজো আদৌ হবে কিনা তা নিয়ে চরম দুশ্চিন্তায় প্রতিমা শিল্পীরা। রায়গঞ্জের বিগ বাজেটের পূজো কমিটিগুলো ইতিমধ্যেই জানিয়ে দিয়েছে তারা বড় ধরনের পূজো এবার করছেন না। ফলে সারা বছর সংসার প্রতিপালনের একমাত্র সুযোগ দূর্গা প্রতিমা নির্মান বন্ধ হয়ে যাওয়ার মুখে। চরম হতাশাগ্রস্ত হয়ে কুমোরটুলির মৃৎশিল্পীরা তাকিয়ে রয়েছেন পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়ার অপেক্ষায় নইলে পরিবার পরিজন নিয়ে না খেয়ে মরতে হবে তাদের।

আর মাত্র তিনমাস বাকি বাঙালীর শ্রেষ্ঠ উৎসব দুর্গাপূজার। আর এই সময় থেকেই চরম ব্যস্ততা থাকে জেলার কুমোরটুলিগুলোতে। দুএকটি বাড়ির পুজো ছাড়া এবারে রথযাত্রায় কাঠাম পুজো হয়নি বললেই চলে। করোনা ভাইরাস সংক্রমণ প্রতিরোধে দেশজুড়ে চলা তিনমাস লক ডাউনে বন্ধ হয়ে গিয়েছে সমস্ত পুজা অর্চনা। ফলে একেবারে কর্মহীন হয়ে পড়েছিলেন উত্তর দিনাজপুর জেলার রায়গঞ্জের কুমোড়পাড়ার প্রতিমা শিল্পীরা। সারাটা বছর দুর্গাপূজার মরশুমের দিকেই তাকিয়ে থাকেন এই প্রতিমা শিল্পীরা। সারা বছরের সংসার প্রতিপালন হয়ে থাকে দূর্গা প্রতিমা বিক্রির আয় থেকে। রায়গঞ্জের কাঞ্চনপল্লীর কুমারটুলিতে ছোট বড়ো মিলিয়ে প্রায় তিনশ জন প্রতিমা শিল্পী রয়েছেন, যারা তাকিয়ে রয়েছেন সবচেয়ে বড় উৎসব দূর্গাপুজোর দিকে। ঋন করে প্রচুর টাকা লগ্নি করে বিশাল বিশাল দূর্গা প্রতিমা তৈরিও করে ফেলেছেন প্রতিমা শিল্পীরা। কেননা দূর্গা প্রতিমা তৈরিতে সময় লাগে প্রচুর আর পুজোর আগে থাকে প্রবল বর্ষা। ফলে আগে থেকেই প্রতিমা তৈরির কাজ করে রাখেন শিল্পীরা। এবারে করোনা আবহের জেরে বাড়ির দুর্গাপূজাগুলো হলেও রায়গঞ্জ শহরের বিগ বাজেটের পুজো কমিটিগুলো ইতিমধ্যেই জানিয়ে দিয়েছে এবার তারা বড় পূজো করছেন না। ফলে প্রতিমা শিল্পে বড় ধরনের কোপ পড়তে চলেছে এই আশঙ্কাতেই রয়েছেন কুমোরটুলির প্রতিমা শিল্পীরা। হাজার হাজার টাকা খরচ করে দূর্গা প্র‍তিমা তৈরি করার পর তা যদি করোনা আবহের জেরে বিক্রি না হয় তাহলে তারা সমূহ ক্ষতির মুখে পড়বেন। সমস্যা রয়েছে বাড়ির পুজোগুলোতেও। যে বাড়িতে পুজোর আয়োজন হচ্ছে সেই বাড়িতেই যদি কেউ করোনা আক্রান্ত হয়ে পড়েন তাহলে বন্ধ হয়ে যাবে পুজো। সমস্যায় পড়ে যাবেন প্রতিমা শিল্পীরা। রায়গঞ্জের কাঞ্চনপল্লী কুমোরটুলির প্রখ্যাত প্রতিমা শিল্পী নান্টু পাল জানালেন, চরম আতঙ্কের মধ্যে রয়েছি আমরা। সারাটা বছর এই দুর্গাপূজার জন্যই অপেক্ষা করে থাকি। সংসার প্রতিপালন হয় এই দূর্গাপ্রতিমা বিক্রির আয় থেকেই। বছরের এই সময় থেকেই চরম তৎপরতা শুরু হয়ে যায় কুমোরটুলিতে। আমরা প্রতিমা নির্মানও করে ফেলেছি। নান্টুবাবু বলেন, শুধু প্রতিমা শিল্পীরাই নয়, এই দূর্গাপুজার উপরে নির্ভর করে থাকেন মন্ডপ নির্মান, আলোক শিল্পী, দেবীর সাজসজ্জা নির্মান শিল্পী থেকে বহু ধরনের শিল্পীরা। করোনা আবহে দূর্গাপুজো তেমনভাবে না হলে সবাই পথে বসে পড়বেন। শিল্পীর আবেদন রাজ্য ও কেন্দ্রীয় সরকার দূর্গাপুজার সাথে যুক্ত সমস্ত শিল্পীদের দিকে নজর দিক।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here