পদ্ম ফুলের জন্য কোন কোনও পুকুরের নামও হয়ে উঠেছে পদ্মপুকুর।তাই পদ্মের কথা ভাবলে বিশাল জলাশয়,পুকুর কিংবা ঝিল বিলের কথায় সবার আগে মনে আসে।অথচ সেই পদ্ম ফুল বাড়িতে টবে ফুটিয়ে তাক লাগিয়ে দিয়েছেন শিলিগুড়ি লাগুয়া ফুলবাড়ীর উপনগরী আবাসনের এক অবসরপ্রাপ্ত রেলকর্মী সুরেশ দাস।তিনি শখ করেই বাড়িতে পদ্ম চাষ শুরু করেন।এবারই তার টবে বহু পদ্ম ফুটেছে।আর সেটা দেখে অবাক তিনি নিজেও।যারা পদ্ম গাছ এখন পর্যন্ত দেখেনি তারা এখন বাড়িতে এসে ভিড় করছেন আর পদ্ম ফুল দেখে তাকিয়ে থাকছেন।চিনছেন পদ্ম ফুলকে।প্রতিদিনই এভাবে তার বাড়িতে এসে আশেপাশের বাসিন্দারা পদ্ম ফুল কিনে নেওয়ার কথাও বলছেন।তবে এখনো তিনি পদ্মফুল বিক্রি করছেন না।বাণিজ্যিকভাবে যদি চাষ করেন তাহলে তিনি ফুল বিক্রি করতে পারেন।তার বাগানে এখন শোভা পাচ্ছে ওই পদ্মফুল।এজন্য তাকেও যথেষ্ট সময় দিতে হয়েছে এর পেছনে।বরাবরই বাগান করতে ভালোবাসেন সুরেশ দাস।তার বাড়ির আঙিনায় যতটুকু জায়গা রয়েছে তাতে শত শত ফুল ফলের আর নানা ধরনের গাছের ভর্তি।পাহাড়ে হয় এমন ধরনের নানা ফুল ফল রয়েছে তার বাড়ির ওই বাগানে।সুরেশ বাবুর আদি বাড়ি আসামের ডিব্রুগড়।ছোটবেলায় তিনি চলে আসেন শিলিগুড়িতে।এরপর শক্তিগড় হাই স্কুলের ভর্তি হন।সেখান থেকেই পাশ করে রেলের অস্থায়ী চাকরিতে যোগদান করেন।এরপর পরীক্ষা দিয়ে স্থায়ী চাকরি পান স্টেশন মাস্টারের।সর্বশেষ ২০০৬ সালে তিনি চাকরি করেছেন পাহাড়ের সোনাদায়।সেখান থেকেই অবসর নেন।পাহারে থাকাকালীন বহু পাহাড়ি গাছের সঙ্গে পরিচিত হন।তারপরে অবসর নিয়েই তিনি সময় দেন গাছের পরিচর্যায়।তার এই কাজে সহায়তা করেন স্ত্রী বুলবুলি দাস।৭৪ বছরের সুরেশ বাবু জানান,পদ্ম চাষ করাতে বড় টব দরকার পড়ে।এজন্য রাজমিস্ত্রি ডেকে তিনটি বড় মাপের টব তৈরি করেন।সেখানে বিশেষ পদ্ধতিতে গোবর,এটেল মাটি প্রভৃতি দিয়ে পুকুরের মতো তৈরি করা হয় তারপরেই পদ্মের শেখর লাগানো হয় শেকড়।এরপরই এক বছরের মধ্যে রীতিমতো বদ্ধ জলে সেখানে ফুল ফুটেছে।শুধু বাগান করাই নয় অবসর সময় বিভিন্ন ধরনের বাদ্যযন্ত্র বাজাতে ভালোবাসেন তিনি।সেই সঙ্গে আঁকার হাতও খুব ভালো।তার দেওয়ালে টাঙানো কাঞ্চনজঙ্ঘা তিনধারিয়া কিংবা রবীন্দ্রনাথের ছবি দৃষ্টি কেড়ে নেয় সকলের।স্থানীয় বাসিন্দা নিহার সাহা,কালিদাস কুমার দে,মালবিকা সাহা,প্রিয়ঙ্কা সাহা রা জানান প্রতিদিন আমরা এই বাগানে এসে কিছুটা সময় কাটাই।আমাদেরও মন ভালো হয়ে যায়।কারণ চারদিকে যেভাবে গাছপালার সংখ্যা কমে যাচ্ছে তাতে পরিবেশ রক্ষার জন্য এইটুকু বাগান করলে পরিবেশের ভারসাম্য অনেকটাই রক্ষা হবে।সুরেশ বাবুর পাশাপাশি প্রতিবেশীরা বলেন,যাতে প্রত্যেকেই গাছ লাগান এবং অন্তত নিজের বাগান বানিয়ে সবুজ দিয়ে ভরিয়ে তোলেন।এভাবে ছোট ছোট কাজই পরিবেশের জন্য বড় ভূমিকা নেবে।
Home উত্তর বাংলা দক্ষিণ দিনাজপুর বাড়িতেই টবে পদ্মফুল চাষ করে তাক লাগিয়ে দিয়েছেন শিলিগুড়ির সুরেশ দাস