অঙ্গনওয়াড়ি সেন্টারে আগুন, দগ্ধ দিদিমনি! অল্পের জন্য প্রাণে বাচলো শিশুরা
পিন্টু কুন্ডু, বালুরঘাট, ৭ ফেব্রুয়ারী —— একাধিক প্রশাসনিক গাফিলতির সাক্ষী হয়ে রইল দক্ষিণ দিনাজপুরের বালুরঘাট। অঙ্গনওয়াড়ি সেন্টারে রান্না করতে গিয়ে আগুনে পুড়ে গুরুতর আহত হলেন ৫৫ বছরের কৃষ্ণা শীল। প্রায় ত্রিশজন শিশুর জীবনকে রক্ষা করলেও, দিদিমনির শরীরের বেশিরভাগ অংশই ঝলসে গেছে। শুক্রবার দুপুরে এই ভয়াবহ দুর্ঘটনাটি ঘটেছে বালুরঘাটের চিঙ্গিশপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের ডাঙাপাড়া ৩৪৩ নম্বর সেন্টারে।
জানা গেছে ঘটনার দিন দুপুরের দিকে মিড ডে মিল রান্না করছিলেন কৃষ্ণা শীল। অসাবধানতাবশত রান্নাঘরের উনুনের আগুন তাঁর শাড়িতে লেগে যায়। মুহূর্তেই ছড়িয়ে পড়ে আগুন, এবং দিদিমনির শরীরের বেশিরভাগ অংশ পুড়ে যায়। তবে, দুশ্চিন্তা বাড়িয়ে দেয় শিশুদের চিৎকার। তাঁদের আর্তনাদে ছুটে আসেন স্থানীয়রা এবং তৎক্ষণাত কৃষ্ণা শীলকে উদ্ধার করে বালুরঘাট সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়। বর্তমানে তিনি মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছেন।
প্রতিটি অঙ্গনওয়াড়ি সেন্টারে একজন দিদিমনি ও একজন সহায়িকা থাকার কথা, কিন্তু প্রায় আট মাস আগে ওই সেন্টারের সহায়িকা পদোন্নতি পেয়ে অন্যত্র বদলি হয়ে যান। তারপর থেকেই একাই সমস্ত কাজের দায়িত্বে ছিলেন কৃষ্ণা শীল। তাঁর ছেলে সুদর্শন শীল বলেন, “অঙ্গনওয়াড়ি সেন্টারে সহায়িকা থাকলে এই দুর্ঘটনা ঘটত না। প্রশাসন কেন এতদিন একটি সহায়িকা নিয়োগ করেনি? আজ আমার মায়ের জীবনটাই বিপন্ন!”
এলাকার বাসিন্দাদের মতে, দীর্ঘদিন ধরে একা এই দায়িত্ব সামলানোর ফলে দিদিমনির উপর অতিরিক্ত চাপ পড়েছিল। প্রশাসনের অবহেলায় এই দুর্ঘটনা ঘটেছে বলে তাঁদের মত।
স্থানীয়দের অভিযোগ, আট মাস ধরে সহায়িকা না থাকলেও প্রশাসন কোন ব্যবস্থা নেয়নি। সেই কারণেই এই দুর্ঘটনা ঘটেছে। “যদি সহায়িকা থাকত, তবে এমন দুর্ঘটনা ঘটত না,” বলে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন অনেকেই।
এখন প্রশ্ন উঠছে, এই অগ্নিকাণ্ডের দায়ভার কার? দিদিমনি গুরুতর আহত হয়েছেন, তার পরিবার চরম শোকে ডুবে গেছে। তারা প্রশাসন থেকে ক্ষতিপূরণ ও উপযুক্ত পদক্ষেপের দাবি জানিয়েছেন। এখন দেখার বিষয়, প্রশাসন এই দুর্ঘটনার পর কোন পদক্ষেপ নেয়।