জমির ভাগাভাগি নিয়ে দুই গোষ্ঠীর সংঘর্ষে রণক্ষেত্র হরিরামপুর! বাঁশ ও লোহার রডের আঘাতে ক্ষতবিক্ষত ৮
বালুরঘাট, ৯ মার্চ —— এক খণ্ড জমি নিয়ে তুমুল রেষারেষি! কথার লড়াই এক ধাক্কাতেই রণক্ষেত্রে রূপ নিল দক্ষিণ দিনাজপুরের হরিরামপুরে। পৈতৃক জমির দখল নিয়ে দুই পক্ষের সংঘর্ষে রড, লাঠি, ও বাশের আঘাতে রক্তাক্ত হয়ে হাসপাতালে ছুটলেন ৮ জন! প্রাণ বাঁচাতে আর্তচিৎকার, ছুটে এল গ্রামবাসী। উভয়পক্ষের মোট ৫ জনকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় মালদা মেডিকেলে ভর্তি করা হয়। অভিযোগ-পাল্টা অভিযোগে সরগরম এলাকা, ঘটনাস্থলে পৌঁছেছে পুলিশ।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, শিরষী নেংড়াপাড়া দানগ্রামের বাসিন্দা মৃত চরকু মোল্লার রেখে যাওয়া ৪ শতক জমির ভাগাভাগি নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে বিবাদ চলছিল পাঁচ ছেলে— সাজ্জাদ হোসেন, মনিরুল হাসান, মোয়াজ্জেম হোসেন, সিরাজদ্দিন ও আজাদ হোসেনের মধ্যে। সরকারি নথিতে পাঁচজনের নাম থাকলেও অভিযোগ, আজাদ হোসেন একাই পুরো জমি দখল করে জোর করে বাড়ি তুলতে চাইছিলেন। এই অন্যায়ের প্রতিবাদ করতেই শুরু হয় ভয়াবহ সংঘর্ষ!
সাজ্জাদ হোসেনের অভিযোগ, “আমরা আমাদের ন্যায্য অংশ চাইতে গেলে আজাদ তার ছেলে আনোয়ার ও পাঁচ জামাইকে নিয়ে দল বাঁধে। মুহূর্তের মধ্যে বাঁশ, লাঠি, রড উঁচিয়ে আমাদের ওপর হামলা চালায়। একে একে মাটিতে লুটিয়ে পড়ি আমরা! রক্তে ভেসে যায় পুরো উঠোন!”
অন্যদিকে, অভিযুক্ত আজাদ হোসেনের পাল্টা দাবি, “আমি আমার ভাগের জমিতেই বাড়ি করছিলাম। ওরাই পরিকল্পিতভাবে বাধা দেয়, গায়ে হাত তোলে। নিজেদের দোষ লুকোতে উল্টো আমাকেই দোষারোপ করছে!”
এই রক্তাক্ত ঘটনার পর গোটা গ্রামে আতঙ্কের ছায়া নেমে এসেছে। উভয় পক্ষই হরিরামপুর থানায় অভিযোগ জানিয়েছে। অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (গ্রামীণ) ইন্দ্রজিৎ সরকার বলেন, “লিখিত অভিযোগ পেয়েছি, তদন্ত চলছে। প্রকৃত দোষীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
গ্রামবাসীদের দাবি, দীর্ঘদিনের জমি-বিবাদ এবার রক্তক্ষয়ী রূপ নিল। পুলিশ দ্রুত পদক্ষেপ না নিলে পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ হতে পারে। প্রশাসনের চোখে এখন একটাই প্রশ্ন— এই সংঘর্ষের শেষ কোথায়?