গরম পড়তেই জলযুদ্ধ তপনে ! হাঁড়ি-ড্রাম ফেলে পথ অবরোধ গ্রামবাসীদের
বালুরঘাট, ১০ মার্চ —– গরমের সাথে পাল্লা দিয়ে তীব্র হচ্ছে পানীয় জলের সংকট। দক্ষিণ দিনাজপুরের তপন ব্লকের বালাপুর এলাকায় সেই সমস্যা এতটাই গুরুতর যে সোমবার সকালেই ফুঁসে উঠলেন গ্রামবাসীরা। খাবার জল নেই, রান্নার জল নেই—এই অভিযোগ তুলে খালি হাঁড়ি-ড্রাম হাতে নিয়ে তাঁরা রাস্তায় নেমে এলেন। বাঁশ ফেলে অবরুদ্ধ করে দিলেন তপন-বালুরঘাট রাজ্য সড়ক। মুহূর্তে ছড়িয়ে পড়ল উত্তেজনা। তিন ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে অবরুদ্ধ থাকল পথ। শেষে পুলিশের আশ্বাসে অবরোধ উঠলেও গ্রামবাসীদের মধ্যে ক্ষোভ থেকেই গেল।
স্থানীয়দের দাবি, এই এলাকায় পানীয় জলের সংকট নতুন কিছু নয়। মার্চ থেকে জুলাই, প্রতি বছর এই পাঁচ মাস জলের জন্য হাহাকার চলে। কিন্তু প্রশাসনের কোনও হেলদোল নেই। বালাপুর অফিসপাড়ার প্রায় ৪০টি পরিবার নির্ভর করতেন মাত্র দুটি টিউবওয়েলের উপর। সেগুলিও এখন অকেজো হয়ে পড়েছে। ফলে বাধ্য হয়েই রাস্তা অবরোধ করতে হয়েছে বলে জানালেন পূর্ণিমা মণ্ডল নামে এক স্থানীয় মহিলা। তাঁর কথায়, “জল ছাড়া কি বাঁচা যায়? এতদিন ধরে পঞ্চায়েতে জানিয়েছি, কেউ শোনেনি। তাই রাস্তায় নেমেছি।”
তবে মালঞ্চা গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান রুপালি মণ্ডল বলছেন, “এখানে প্রতি বছরই গ্রীষ্মকালে টিউবওয়েলে জল পাওয়া যায় না। তাই পিএইচই-র মাধ্যমে জল সরবরাহের ব্যবস্থা করা হয়েছে। কিন্তু বিদ্যুতের ভোল্টেজ কম থাকায় গত দু’দিন সেই পরিষেবায় সমস্যা হয়েছে। আমরা দ্রুত ব্যবস্থা নিচ্ছি। ইতিমধ্যেই নতুন মার্শাল বসানোর জন্য টেন্ডার সম্পন্ন হয়েছে।”
কিন্তু গ্রামবাসীদের প্রশ্ন, এই সমস্যা তো প্রতি বছরই হয়! তাহলে কেন স্থায়ী সমাধানের কোনও ব্যবস্থা করা হয়নি? কেন বিদ্যুৎ বিভ্রাটে জল সরবরাহ বন্ধ হয়ে যাবে? আশ্বাস তো আগেও মিলেছে, কিন্তু তাতে জলকষ্ট কমেনি! তাহলে কি ফের রাস্তা অবরোধই একমাত্র পথ? উত্তর দেবে সময়!