হরিশ্চন্দ্রপুর;২৭সেপ্টেম্বর: পরিবারের হাল ফেরাতে পড়াশোনার পাশাপাশি রাজমিস্ত্রির সহকারী হিসেবে কাজ করতো দশম শ্রেণীর ছাত্র রবিউল।সেই কাজ করতে গিয়েই ঘটলো বিপত্তি।ছাদ ঢালাইয়ের কাজ করতে গিয়ে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে ছাদ থেকে পরে মৃত্যু হল তার।গতকাল বিকেলে ঘটনাটি ঘটেছে মালদা জেলার হরিশচন্দ্রপুর এলাকায়।এক তরতাজা তরুণের মর্মান্তিক মৃত্যুতে শোকের ছায়া এলাকা জুড়ে।মৃত সেই ছাত্র তথা শ্রমিকের নাম রবিউল ইসলাম।বয়স ১৫।বাড়ি হরিশ্চন্দ্রপুর ১ নং ব্লকের মহেন্দ্রপুর জিপির বনসরিয়া গ্রামে।
পরিবার সূত্রে জানা যায় স্থানীয় এক রাজ মিস্ত্রি মহম্মদ সানের সঙ্গে রবিউল ইসলাম সহকারী শ্রমিক হিসেবে হরিশ্চন্দ্রপুর এলাকার এক বাইক শোরুমের দুই তলা ভবনের ছাদ ঢালাই এর কাজ করতে যায়।ঢালাই চলা কালীন সেটারিং-এ বাঁশ এর খুঁটি লাগাতে গিয়ে এগারো হাজার ভোল্টের বিদ্যুৎ তারের সংস্পর্শে এসে ছাদ থেকে পড়ে জ্ঞান হারিয়ে ফেলে।তার সঙ্গীরা হরিশ্চন্দ্রপুর গ্রামীণ হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসকরা মৃত্যু বলে ঘোষণা করেন। এই ঘটনায় এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে।
জানা যায় বাবা মহম্মদ তসলিম পেশায় গাড়ি চালক। লকডাউনে পরিবারে শুরু হয়েছিল অভাব-অনটন।
তার তিন ছেলে ও এক মেয়ে। সংসারের হাল ধরতে পড়াশোনার ফাঁকে শ্রমিকের কাজ করতো সে।রবিউল ছিল পরিবারের বড়ো ছেলে। মহেন্দ্রপুর উচ্চ বিদ্যালয়ে দশম শ্রেণিতে পাঠরত।লকডাউনে স্কুল বন্ধ তাই পাড়ার রাজমিস্ত্রি সঙ্গে এদিন কাজ করতে যায় বলে খবর।
বাবা মহম্মদ তসলিম জানান, রবিউল তার বড়ো ছেলে।প্রায় শ্রমিকের কাজ করতো। এদিন সেন্টারিং এর কাজ করতে গিয়ে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মারা যায় বলে খবর পান তাঁর সঙ্গীদের কাছ থেকে।
এক সহকারি শ্রমিক ছোটন দাস জানান, হরিশ্চন্দ্রপুর এলাকায় এক বাইক শোরুমের দোতলা ভবনের ছাদ ঢালাইয়ের কাজ চলছিল। ভবনের এক তলার পাশ দিয়ে হাই টেনশন এগারো হাজার ভোল্টের বিদ্যুতের তার গেছে। বাঁশের খুঁটি লাগাতে গিয়ে ওই বিদ্যুতিক তারের সংস্পর্শে এসেছে মৃত্যু হয়েছে তার।
মৃত দেহটি ময়নাতদন্তের জন্য মালদা মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে বলে পুলিশ সূত্রে খবর।
বাবা গাড়ির চালক।লকডাউন এর ফলে দীর্ঘদিন গাড়ি বন্ধ থাকায় আর্থিক সংকটের সম্মুখীন হয়েছিল তারা।তাই হয়তো রবিউল ভেবেছিল পড়াশোনার পাশাপাশি কাজ করে বাবা মায়ের মুখে হাসি ফোটাবে।কিন্তু ভাগ্যের নিষ্ঠুর পরিহাসে চলে গেল দশম শ্রেণীর এক তরতাজা প্রাণ।