সন্তান প্রসবের খরচ ৫০০ টাকা! বালুরঘাট হাসপাতালে আয়াদের অবৈধ দাবি ঘিরে তোলপাড়

0
146

সন্তান প্রসবের খরচ ৫০০ টাকা! বালুরঘাট হাসপাতালে আয়াদের অবৈধ দাবি ঘিরে তোলপাড়

পিন্টু কুন্ডু, বালুরঘাট, ১১ জানুয়ারী-—- সরকারী নামেই, সন্তান প্রসবের পর রোগীর পরিবার থেকে ৫০০ টাকার জোড়ালো দাবি আয়াদের! সরকারি পরিষেবার নামে এই বেনিয়মে উত্তাল হয়ে উঠেছে বালুরঘাট সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে। শনিবার সকালে রোগীর পরিবারের লোকেদের এই অভিযোগকে ঘিরেই উত্তেজনা ছড়ায় হাসপাতাল চত্বরে।

জানা গেছে, এদিন সকালে প্রসব যন্ত্রণা নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন রিঙ্কি গিরি নামে এক গৃহবধূ। মেদিনীপুরের বাসিন্দা হলেও বালুরঘাট শহরের পদ্মপুকুর এলাকায় আত্মীয়ের বাড়িতেই ছিলেন তিনি। এদিন কন্যা সন্তান জন্মের পরই আয়া মাসিরা তার পরিবারের কাছে ৫০০ টাকা দাবি করে বলে অভিযোগ। যে দাবি পূরণ না করায় অশোভন আচরণ করার অভিযোগও ওঠে তাদের বিরুদ্ধে। যা নিয়েই ক্ষোভে ফেটে পড়ে রিঙ্কির পরিবার। প্রশ্ন ওঠে, সরকারি হাসপাতালে কেন টাকা দিতে হবে? রোগীর পরিবারের প্রতিবাদে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে পরিস্থিতি। শুধু রিঙ্কির পরিবার নয়, একই অভিযোগ করেছেন হাসপাতালের অন্য রোগীদের আত্মীয়রাও।

রিঙ্কির আত্মীয় প্রদ্যুত মহন্ত দাস বলেন, “আমাদের মতো সাধারণ মানুষের জন্যই সরকারি হাসপাতাল। এখানে বিনামূল্যে পরিষেবা পাওয়ার কথা। তাহলে কেন “সরকারি বেতন পাওয়া আয়ামাসীরা দশ মাসের ‘নরক পরিষ্কার’-এর নাম করে টাকা দাবি করছে।” এটা পুরোপুরি অন্যায়। দৃষ্টান্তমূলক ব্যবস্থা নিতে হবে।”

নিতীশ বসাক নামে তপনের এক রোগীর আত্মীয় বলেন, “দীর্ঘদিন ধরে এই তোলাবাজি চলছে। অথচ কর্তৃপক্ষ নির্বিকার। এবার শক্ত পদক্ষেপের প্রয়োজন।”

প্রসূতির অপর এক আত্মীয়া বিজয়া দাস আরও ক্ষুব্ধ সুরে বলেন, “১০ মাসের নরক পরিষ্কার করার দাবি আয়াদের। কিন্তু সরকারের বেতন দেওয়া হয় তাদের পরিষেবা দেওয়ার জন্য, রোগীদের কাছে হাত পাতার জন্য নয়। এই অন্যায় আমরা বরদাস্ত করব না।”

এ ঘটনায় হাসপাতালের সুপার কৃষ্ণেন্দু বিকাশ বাগ অবশ্য বিষয়টি খতিয়ে দেখার আশ্বাস দিয়েছেন।

রোগীদের পরিবারের লোকেদের অভিযোগ, বালুরঘাট সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালেই শুধু নয়, এই প্রবণতা অনেক সরকারি হাসপাতালে সাধারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। টাকা না পেলে বাচ্চা আটকে রাখবার মতো মারাত্মক অভিযোগও রয়েছে ওই আয়ামাসীদের বিরুদ্ধে। রোগী ও তাদের পরিবারের আর্তি, “সরকারি হাসপাতালের নামে এই তোলাবাজি বন্ধ হোক।”

এই ঘটনায় প্রমাণিত হচ্ছে, সরকারি হাসপাতালের ভিতরেও লুকিয়ে আছে অনিয়মের শিকড়। এবার কি প্রশাসন কঠোর পদক্ষেপ নেবে, নাকি এই তোলাবাজি চলতেই থাকবে? প্রশ্ন ঘুরছে হাসপাতাল চত্বরে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here