বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্নের ভয়! পতিরামে দুই আধিকারিকের তোলাবাজির চক্র ফাঁস

0
106

বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্নের ভয়! পতিরামে দুই আধিকারিকের তোলাবাজির চক্র ফাঁস

পিন্টু কুন্ডু, বালুরঘাট, ১৭ জানুয়ারী —— দক্ষিণ দিনাজপুরের পতিরামে বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্নের ভয় দেখিয়ে তোলাবাজি করার অভিযোগ দুই আধিকারিক সহ মোট চারজনের বিরুদ্ধে। বৃহস্পতিবার এনিয়ে লিখিত অভিযোগ পেয়েই একটি মামলা রুজু করেছে পুলিশ। যে ঘটনাকে কেন্দ্র করে এলাকায় ব্যাপক উত্তেজনার সৃষ্টি হয়েছে।

বিদ্যুৎ দপ্তরের সূত্রে জানা গেছে, ধ্রুব সরকার ও সুজন রায় বেশ কিছুদিন ধরে গ্রাহকদের কাছ থেকে অযথা বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্নের হুমকি দিয়ে টাকা আদায় করছিলেন। তাদের এই অপকর্মে জড়িয়ে ছিলেন স্থানীয় ঠিকাদার পিওম সরকার এবং গাড়ি চালক উত্তম বর্মন। অভিযোগ, এই চক্র নিয়মিত গ্রাহকদের হেনস্থা করে বিপুল অর্থ আত্মসাৎ করত। পতিরাম সাব স্টেশনের স্টেশন ম্যানেজার দীর্ঘদিন ধরেই এই চক্রের কার্যকলাপ লক্ষ্য করছিলেন। গ্রাহকদের একের পর এক অভিযোগ পেয়ে তিনি বিদ্যুৎ দপ্তরের রিজিওনাল ম্যানেজার দীপঙ্কর দাসকে বিষয়টি জানান। এরপর দপ্তরের অভ্যন্তরীণ তদন্তে অভিযোগের সত্যতা মেলে। যারপরেই থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়।

ডিএসপি সদর বিক্রম প্রসাদ জানান, “অভিযোগের ভিত্তিতে একটি মামলা রুজু করা হয়েছে। প্রাথমিক তদন্তে অভিযোগের ভিত্তি পাওয়া গেছে। বিষয়টি অত্যন্ত গুরুতর, এবং অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

বিদ্যুৎ দপ্তরের রিজিওনাল ম্যানেজার দীপঙ্কর দাস বলেন, “এই ধরনের কর্মকাণ্ড বিদ্যুৎ দপ্তরের সুনাম নষ্ট করেছে। অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ নেওয়া হবে। আমরা নিশ্চিত করতে চাই, ভবিষ্যতে এ ধরনের ঘটনা যাতে আর না ঘটে।”

এদিকে এই ঘটনার পর এলাকার সাধারণ মানুষ ক্ষোভে ফুঁসতে শুরু করেছে। এক গ্রাহক বলেন, “বিদ্যুৎ সংযোগ আমাদের ন্যূনতম অধিকার। সেই পরিষেবাকে ভয় দেখিয়ে টাকা তোলার মতো অপরাধ আমরা কখনোই মেনে নেব না। আমরা অভিযুক্তদের কঠোর শাস্তি চাই।”

ঘটনাটি প্রকাশ্যে আসার পর পুলিশ ও বিদ্যুৎ দপ্তর যৌথভাবে তদন্ত চালাচ্ছে। অভিযোগ প্রমাণিত হলে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেওয়া হবে বলে আশ্বাস দিয়েছে প্রশাসন। তবে গ্রাহকদের মধ্যে প্রশ্ন উঠেছে, দীর্ঘদিন ধরে এই চক্র সক্রিয় থাকা সত্ত্বেও কেন তা এতদিন অজানা থেকে গেল?

এই ঘটনা শুধুমাত্র বিদ্যুৎ দপ্তরের ভাবমূর্তিতে কালিমা লেপন করেনি, গ্রাহকদের মধ্যে নিরাপত্তাহীনতাও বাড়িয়ে দিয়েছে। তদন্তে নতুন তথ্য উঠে এলে আরও বড় চক্রের খোঁজ মিলতে পারে বলে মনে করছেন তদন্তকারীরা।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here