তোলার টাকা দিতে না চাওয়ায় প্রধানকে চুলের ঝুটি ধরে মারধর!

0
118

তোলার টাকা দিতে না চাওয়ায় প্রধানকে চুলের ঝুটি ধরে মারধর! তৃণমূল পঞ্চায়েতে মহিলার শ্লীলতাহানির অভিযোগে চাঞ্চল্য

শীতল চক্রবর্তী, বালুরঘাট, ১৩ জানুয়ারী ——দক্ষিণ দিনাজপুরের গঙ্গারামপুরের অশোকগ্রাম পঞ্চায়েতে ঘটল নজিরবিহীন ঘটনা। আদিবাসী মহিলা প্রধান বুলি মুরমু অভিযোগ করেছেন, টেন্ডার সংক্রান্ত বৈঠকের সময় তৃণমূলের অঞ্চল সভাপতি হরি বোস এবং চেয়ারম্যান বইদুর রহমান দলবল নিয়ে এসে পঞ্চাশ শতাংশ কাটমানি দাবি করেন। দাবি অস্বীকার করায়, চুলের ঝুটি ধরে তাকে টেনে মারধর করা হয়। শুধু তাই নয়, শ্লীলতাহানি ও জাত তুলে গালিগালাজের মতো অশালীন আচরণ করা হয় বলেও অভিযোগ তুলেছেন তিনি। ঘটনার পর ওই মহিলা প্রধান গঙ্গারামপুর থানায় সাতজনের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ জানাতে যান। কিন্তু, থানার পুলিশ অভিযোগ নিতে অস্বীকার করে বলে তার অভিযোগ। শেষমেশ জেলা পুলিশ সুপার চিন্ময় মিত্তালের কাছে লিখিত অভিযোগ জমা দেন তিনি।
তবে গঙ্গারামপুর থানার আইসি শান্তনু মিত্র জানিয়েছেন, প্রধান থানায় এলেও লিখিত অভিযোগ জমা দেননি।

এদিকে মহিলা প্রধানের অভিযোগকে ভিত্তিহীন বলে দাবি করেছেন অঞ্চল চেয়ারম্যান বইদুর রহমান। তার অভিযোগ, পঞ্চায়েতের অধীন থাকা ৩৬৫টি পুকুরের মধ্যে মাত্র ২৬টির কাগজপত্র বৈধ করা হয়েছে। বাকি পুকুরগুলির কাগজপত্র করতে বাধা দিচ্ছেন মহিলা প্রধান। অভিযোগ, তোলাবাজির জন্য পঞ্চায়েতের বাইরে এক ব্যক্তিকে মোতায়েন করেছেন তিনি। বইদুর রহমান জানান, “মারধরের অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যে। আমাদের কাছে ঘটনার ভিডিও প্রমাণ রয়েছে।”

তৃণমূলের জেলা সভাপতি সুভাষ ভাওয়াল বলেন, “অঞ্চল সভাপতি, চেয়ারম্যান ও প্রধানের মধ্যে মতবিরোধ থেকে ঘটনাটি ঘটেছে। মারধরের ঘটনা সঠিক নয়। দলীয় স্তরে সমস্যা মেটানোর চেষ্টা চলছে।” তবে দলের অভ্যন্তরে এমন দ্বন্দ্ব প্রকাশ্যে আসায় কিছুটা অস্বস্তিতে পড়েছে শাসকদল।

মহিলা প্রধানের অভিযোগ, তৃণমূলের প্রভাবের জেরে থানায় তার অভিযোগ নেয়নি পুলিশ। যদিও পুলিশ সুপার চিন্ময় মিত্তাল কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।

অশোকগ্রামের এই ঘটনাকে ঘিরে রাজনীতির পারদ চড়তে শুরু করেছে। পঞ্চায়েতের ভেতর থেকে এমন গুরুতর অভিযোগ সামনে আসায় শাসকদলের ভাবমূর্তি প্রশ্নের মুখে। ক্ষমতার রাজনীতিতে মহিলাদের উপর এই ধরনের হামলার অভিযোগ শুধু অশোকগ্রাম নয়, গোটা জেলার পঞ্চায়েত ব্যবস্থার কালো দিককেই সামনে নিয়ে আসছে বলেই মনে করছেন অনেকে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here